somewhere in... blog

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও ইউরোপীয় দেশসমূহের পরিস্থিতি

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও ইউরোপীয় দেশসমূহের পরিস্থিতি




প্রতিবছর ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস হিসাবে পালিত হয়।এবারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল- ‘অভিবাসীর অধিকার-মর্যাদা ও ন্যায়বিচার’।২০ বছর পূর্বে ১৯৯০ সালে জাতিসংঘের সাধারন অধিবেশনে প্রবাসী ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক একটি সনদ গৃহিত হয়।জাতিসংঘ ধারাবাহিকভাবেই বিশ্বের প্রতিটি দেশকে এই সনদের সাথে সংঙ্গতি প্রকাশের জন্য আহবান জানায়।অভিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ ২০০০ সাল থেকে ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।জাতিসংঘ উল্লেখ করে যে,বিশ্ব অর্থনীতির একটি বিরাট অংশ নির্ভর করে অভিবাসীদের শ্রমের উপর।

সব সময়ই ভাল উপার্জনের জন্য মানুষ তার নিজ বাড়ীঘর ছেড়ে অন্যত্র যেতে বাধ্য ছিল।তবে একবিংশ শতাব্দির আজকের চিত্রে এসেছে অনক পরিবর্তন।এখন শুধু আর কয়েক হাজার বা এক লাখ লোক না বরং কয়েক কোটি লোকজন সাগর-মহাসাগর পাড়ি দিচ্ছে,রেলপথে বা অবৈধ পথে সীমান্ত পেরিয়ে নিজের সৌভাগ্যের সন্ধানে সেখানে আশ্রয় নিচ্ছে।বিশেষজ্ঞদের মতে,বর্তমানে বিশ্বের ৩৫ জন জনগনের মধ্যে ১ জন অভিবাসী,যিনি নিজের মাতৃভূমি ছেড়ে অন্য কোন দেশে চাকুরি ও বসবাস করছেন।

বিশ্ব জন্যসংখ্যার প্রতিস্থাপনে অভিবাসন প্রক্রিয়া বিভিন্ন দিক থেকে বিরুপ প্রভাব ফেলে।উন্নয়নশীল দেশগুলোর কর্মজীবি লোকজনের সাথে অবসরপ্রাপ্ত লোকজনের সংখ্যার বৈসম্যমূলক সমস্যার সমাধান প্রয়োজন।

অধুনিক শ্রমবাজারের অধিকাংশ গবেষনা সংস্থা জানায় যে,অভিবাসন যা অভিবাসী দেশের ও যে দেশ থেকে গমন করে উভয়ের জন্যই উপকারী।বিশ্ব বাংকের তথ্য অনুযায়ী,উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অভিবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিটেন্স যা ঐ সব দেশে উন্নয়ন কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক সাহ্যয্য তহবিলের পরিমান থেকেও অনেক বেশী।

বিশেষজ্ঞরা অভিবাসী দেশে বিদেশী শ্রমিক কাজ করার সুফল ব্যাখ্যা করেন.অভিবাসীদের বেশীর ভাগ একটা অংশ মূলত সেই সব কাজে নিয়োজিত থাকে যেখানে কাজ করার স্থানীয় লোকজনের আগ্রহ নেই।তবে বিদেশী শ্রমিকদের কাজের অন্য ক্যাটাগরিও রয়েছে।যেমন-দক্ষ বিশেষজ্ঞ যা শ্রমবাজারের শীর্ষ অবস্থানে বজায় থাকে।

বলা বহুল্য যে, প্রতিটি অবস্থারই থাকে বিপরীত দিক এবং বিগত ১০ বছরে এই বিষয়টির সাথে ইউরোপীয় দেশসমূহ অনেকটা বেশী পরিচিত।অর্থ উপার্জনের জন্য আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীরা ঐ সব দেশে সামাজিক জীবনের প্রথা ও নিয়মকানুন মেনে চলে না।এই অভিবাসীরা স্থানীয় বসবাসকারী লোকজনের ভাষা জানে না,জানে না তাদের রীতিনীতি ও আচার-ব্যবহার এবং প্রচলিত আইন-কানুন।এই সব সমস্যা বেশ বেগ পেতে হয়েছে ফ্রান্সকে যেখানে চলতি বছরে অভিবাসীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।একই পরিস্থিতি ঘটেছে জার্মানীতেও।সেখানে বিগত বছরগুলোতে অভিবাসীদের সমস্যা এতটাই প্রকট আকার ধারন করেছে যে,কর্তৃপক্ষ নতুন অভিবাসন আইন চালু করতে বাধ্য হয়েছে।চলতি বছরের অক্টোবর মাসে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেছেন যে,জার্মানীর অভিবাসন গ্রহনে ইচ্ছুকদের শুধু সাহায্যই করা হবে না বরং তাদের কাছ থেকে জার্মান ভাষা ও জার্মান সংস্কৃতি বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে।

তবে রাশিয়া ইউরোপের অন্যান্য উন্নত দেশসমূহের মত অভিবাসীদের প্রতি কড়াকড়ি কোন আইন প্রনয়ন করছে না।বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের সংখ্যা নিয়ে সম্প্রতি বিশ্ব বাংকের দেওয়া তালিকায় রুশ ফেডারেশন প্রধান সারিতে অবস্থান করছে।

২০১০ সালের চূড়ান্ত পরিসংখান অনুসারে রাশিয়ায় বর্তমানে ১ কোটি ২৩ লাখ বিদেশী নাগরিক বিভিন্ন পেশায় কর্মরত আছে।রাশিয়ার উপরের সারিতে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র,যেখানে এই সংখ্যা সাড়ে তিন গুন বেশী। বিশেষজ্ঞদের মতে,বিভিন্ন দেশের ন্যায় রাশিয়ায়ও অভিবাসীদের কার্যকলাপের সাথে অনেক অপ্রিতীকর ঘটনা জড়িত আছে ।এছাড়া এশিয়া ও ককেশাসের নাগরিক যারা শ্রমবাজেরের একটি বিরাট অংশ দখল করে আছে কিন্তু তাদের আধুনিক রাশিয়ার প্রয়োজনবোধ সম্পর্কে ধারনা খুবই কম।রাশিয়ার অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্যার কিছুটা হয়ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা অনুসরন করে সমাধান করা যেতে পারে যেখানে অভিবাসীদের জন্য দেশের সংস্কৃতি ও ইতিহাস বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হয় এবং অভিবাসীদের সবাই এই শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে বাধ্য থাকেন।অদূর ভবিষ্যতে হয়ত রাশিয়ায়ও অনুরুপ কার্যক্রম চালু হবে।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঈদের শুভেচ্ছা: দূর থেকে হৃদয়ের কাছ

লিখেছেন আমিই সাইফুল, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:০৩

আসসালামু আলাইকুম,
আজ ঈদের দিন। চারদিকে উৎসবের আমেজ, হাসি-খুশি, নতুন জামা আর মিষ্টি মুখের আদান-প্রদান। আমি ইউরোপে আমার পরিবারের সাথে এই আনন্দের মুহূর্ত কাটাচ্ছি। কিন্তু আমার হৃদয়ের একটা কোণে একটা ফাঁকা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বগুড়া ঈদগা মাঠে নামাজের সময় শুধু ইমামের কর্তৃত্ব চাই, তার কথা শুনতে চাই

লিখেছেন অপলক , ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৫


আ.লীগের শাসনামলে ঈদের মাঠের ইমামরা ঠিক মত বয়ান দিতে পারত না। অন্তত বগুড়ায়, আমি নিজে সাক্ষী। অমুক তুমুক সভাপতি, চেয়ারম্যান, আতারি পাতারি নেতা... ২ মিনিট করে বক্তব্য দেবেন, সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ও মোর রমজানেরও রোজার শেষে......

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪০


বাংলা গানের ভাণ্ডারে কাজী নজরুল ইসলাম এক অনন্য নাম। তিনি বাংলা সাহিত্যে ইসলামী সংগীতের এক শক্তিশালী ধারা তৈরি করেছেন। তারই লেখা কালজয়ী গজল "ও মোর রমজানেরও রোজার শেষে এলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেই যে আমার নানা রঙের ঈদগুলি ......

লিখেছেন অপ্‌সরা, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪২


পেছনে ফিরে তাকালে আমি সবার প্রথমে যে ঈদটার কথা স্মরন করতে পারি সেই ঈদটায় আমি পরেছিলাম আমব্রেলা কাট নীলচে বলবল রং একটা জামা এবং জামাটা বানিয়ে দিয়েছিলেন আমার মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেগেছে বাংলাদেশ: কমে গেছে আগ্রাসী ভারতের সীমান্ত হত্যা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:৫৬

জেগেছে বাংলাদেশ: কমে গেছে আগ্রাসী ভারতের সীমান্ত হত্যা

জুলাই ২০২৪-এর বিপ্লবের পর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের চিত্র আমূল বদলে গেছে। এখন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) ভারতের বিএসএফ-এর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আত্মমর্যাদার সঙ্গে কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×