ইন্টারন্যাশনাল মিউজিক ফ্যাসটিভাল
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১৯৮১ সালের একটি ঘটনা। সে সময়ের ফ্রান্সের কালচারাল মিনিষ্টার Jack Lang এবং জাতীয় মিউজিক ও নৃত্যতত্ব বিভাগের ডিরেক্টর Maurice Fleuret কোন এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন। অনুষ্ঠানে সৌজন্য সাক্ষাতকালে Maurice Fleuret কালচারাল মিনিষ্টার Jack Lang কে সর্বপ্রথম ফেত দো লা মিউজিকের একটি ধারনা দেন। সংস্কৃতিমনা Jack Lang এ প্রস্তাবে খুব আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং ধারনাটি দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন।
অতপর ১৯৮২ সালে ফেত দো লা মিউজিক ফরাসি কালচারে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে। ১৯৮২ সালের ২১ জুন প্রায় ৫০০০ লোক যাদের অধের্কের বেশী ছিল বয়সে তরুন, দল বেধে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। আর এখান থেকেই ফেস্টিভালটির শুরু।
প্রতিবছর ২১ জুন ফ্রান্সে মিউজিক ফ্যাস্টিভাল বা ফরাসিতে’ ফেত দো লা মিউজিক দিবস হিসেবে পালিত হয়। দিবসটি সরকারী ছুটির দিন না হলেও অফিস আওয়ারের পর বিকেল থেকে শুরু হয় মিউজিক ফেস্টিভাল। ওপেন কনসার্ট। প্যারিসের ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে বিশাল বিশাল মঞ্চ বানিয়ে, রং বেরংয়ের আলোকসজ্জা দিয়ে প্যান্ডেল সাজানো হয়। শহরের রিপাবলিক, আইফেল টাওয়ার এবং লা দেফন্স এলাকায় জাতীয় পর্যায়ের কনসাট গুলো হয়ে থাকে। কনসাট গুলো সরকারী ও বেসকারী টেলিভিশন চ্যানেল গুলোতে সরাসরি প্রচার করা হয়। ফেত দো লা মিউজিক কনসাটে ফ্রান্সের জনপ্রিয় সব গায়ক- গায়িকারা অংশ গ্রহন করে থাকে। এছাড়াও অন্যান্য দেশের শিল্পীরা এই মিউজিক ফ্যাসটিভালে গান গেয়ে থাকেন। প্রত্যেকেই তাদের লেটেষ্ট এলবামের জনপ্রিয় গানটি গেয়ে থাকেন। আর প্রতিটি গানের সাথে থাকে চোখ ধাধানো কোরিওগ্রাফি। টেলিভিশনের জনপ্রিয় উপস্থাপকরা এই অনুষ্ঠানগুলো উপস্থাপনা করে থাকেন।
ফেত দো লা মিউজিকের প্রতিটি অনুষ্ঠানে লাখেরও বেশী দর্শক সরাসরি কনসাট উপভোগ করে থাকেন। ছেলে- মেয়ে, বদ্ধ –বৃদ্ধা সবাই কনসাটে আসেন নেচে গেয়ে আনন্দ ফূর্তি করে কাটাতে। দূর দূরান্ত থেকে প্লেনে, ট্রেনে, বাসে,কারে করে ছেলে-মেয়েরা দল বেধে কনসাটে আসে। রাত ২.০০ টা – ৩.০০ টা পর্যন্ত চলে এই কনসাট। মিড নাইটের পর মেট্রো,বাস, ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে। সারা রাত নেচে গেয়ে কখনোবা বিয়ার টেনে, মদ খেয়ে, হৈচৈ করে রাত পার করে দেন তারা। এদিনে বিশেষ বিশেষ এলাকার স্নাকস,ক্যাফে বার, ফাষ্ট ফুডের দোকান গুলো সারারাত খোলা থাকে।
মিউজিক ফ্যাষ্টিভাল শুধুমাত্র প্যরিসেই সীমাবদ্ধ নয়। ফ্রান্সের ৯৫ টি ডিপাটর্মেন্টের প্রতিটিতে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে ফেত দো লা মিউজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় কোন ষ্টেডিয়াম, মিউনিসিপ্যালিটি চত্তরে বা প্রসস্ত কোন রাস্তায় কনসার্ট হয়ে থাকে। ইতিমধ্যেই ফেত দো লা মিউজিক ফ্রান্সের একটি জাতীয় ফ্যাষ্টিভালে পরিনত হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনে মিউজিক ফ্যাষ্টিভাল পালিত হচ্ছে। গতবছর বিশ্বের ১৭২ টি দেশে ফেত দো লা মিউজিক পালিত হয়েছে। প্রতিটি দেশেই সে দেশের নিজস্ব সংগীত নিজেদের মত করে উপস্থাপনা করেছে। অচিরেই ২১ শে জুনকে ‘ইন্টারন্যাশনাল মিউজিক ফ্যাসটিভাল ডে’ হিসেবে ঘোষিত হতে পারে।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর


আলোচিত ব্লগ
ঈদের শুভেচ্ছা: দূর থেকে হৃদয়ের কাছ
আসসালামু আলাইকুম, আজ ঈদের দিন। চারদিকে উৎসবের আমেজ, হাসি-খুশি, নতুন জামা আর মিষ্টি মুখের আদান-প্রদান। আমি ইউরোপে আমার পরিবারের সাথে এই আনন্দের মুহূর্ত কাটাচ্ছি। কিন্তু আমার হৃদয়ের একটা কোণে একটা ফাঁকা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বগুড়া ঈদগা মাঠে নামাজের সময় শুধু ইমামের কর্তৃত্ব চাই, তার কথা শুনতে চাই
আ.লীগের শাসনামলে ঈদের মাঠের ইমামরা ঠিক মত বয়ান দিতে পারত না। অন্তত বগুড়ায়, আমি নিজে সাক্ষী। অমুক তুমুক সভাপতি, চেয়ারম্যান, আতারি পাতারি নেতা... ২ মিনিট করে বক্তব্য দেবেন, সে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ও মোর রমজানেরও রোজার শেষে......
বাংলা গানের ভাণ্ডারে কাজী নজরুল ইসলাম এক অনন্য নাম। তিনি বাংলা সাহিত্যে ইসলামী সংগীতের এক শক্তিশালী ধারা তৈরি করেছেন। তারই লেখা কালজয়ী গজল "ও মোর রমজানেরও রোজার শেষে এলো... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেই যে আমার নানা রঙের ঈদগুলি ......
পেছনে ফিরে তাকালে আমি সবার প্রথমে যে ঈদটার কথা স্মরন করতে পারি সেই ঈদটায় আমি পরেছিলাম আমব্রেলা কাট নীলচে বলবল রং একটা জামা এবং জামাটা বানিয়ে দিয়েছিলেন আমার মা... ...বাকিটুকু পড়ুন
জেগেছে বাংলাদেশ: কমে গেছে আগ্রাসী ভারতের সীমান্ত হত্যা
জেগেছে বাংলাদেশ: কমে গেছে আগ্রাসী ভারতের সীমান্ত হত্যা
জুলাই ২০২৪-এর বিপ্লবের পর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের চিত্র আমূল বদলে গেছে। এখন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) ভারতের বিএসএফ-এর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আত্মমর্যাদার সঙ্গে কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন