somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইখতেলাফ তথা দ্বীনি বিষয়ে মতবিরোধ নিয়ে কিছু কথা-

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



#অালেমদের মধ্যে দ্বীনি বিষয়ে ইখতেলাফ দ্বীনের জন্য অকল্যাণকর নয় বরং কল্যাণকর৷ ইখতেলাফ তথা দ্বীনি বিষয়ে মতবিরোধ ইসলামকে ভারসাম্য এনে দিয়েছে৷ এই মতবিরোধকে অনেক সময় অাল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে৷ ইখতেলাফ এ যুগের নতুন কোন বিষয় নয়৷ এই ইখতেলাফ রাসূল স. এর যুগ থেকে চলে এসেছে৷ সাহাবাগণ রা. নিজেদের মধ্যে ইখতেলাফ করেছেন৷ এই ইখতেলাফ নতুন কিছু নয়৷ ইখতেলাফই দ্বীনের সম্পর্কে পড়াশুনা করতে, দ্বীনের গভীর বিষয়াদী সম্পর্কে গবেষণা করতে, সহীহ বিষয়গুলোকে ধরতে, বুঝতে সাহায্য করে৷

কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, অাজকের যুগে একদল অালেমগণ মতবিরোধকে কেন্দ্র করে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করছে যা অাদৌ ইসলামের স্মারক নয়৷ নিজ মতের ভিন্ন মত পরিলক্ষিত হলেই তাকে কাফের ফতুয়া দেয়া, #ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়া, ইয়াহুদি-খৃষ্টানদের দালাল ইত্যাদিতে অাখ্যায়িত করা স্বভাবে পরিণত হয়েছে যদিও মতের ভিন্নতা প্রকাশের পূর্বে এতদিন লোকটা ছিলো ইসলামের অাদর্শ অনুসারী৷

ইখতেলাফ হওয়াতে দোষের কিছু নয়৷ তৎকালীন সময়ে রাসূল স. ছিলেন, অাল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে জিবরাইল অা. তার কাছে সকল বিষয়ের সুষ্ঠু সমাধান নিয়ে অাসতেন৷ তখনও ইখতেলাফ হতো৷ সাহাবায়ে অাজমাইন #রাসূল স. কে সরাসরি দেখেছেন, তার সান্নিধ্যে ছিলেন, তার কথা শুনেছেন তারপরেও তাদের মাঝে মতবিরোধ ছিলো৷ তাই বলে তারা, কাউকে মুশরিক অাখ্যায়িত করে সমাজ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেননি৷ অাজ রাসূল স. নেই, জিবরাইল অাসেন না, সাহাবাগণ রা. নেই, সে যুগ থেকে এ যুগ পর্যন্ত হাজার বছরের ব্যবধান৷ এর মধ্যে ইয়াহুদী অালেম ইসলামের নামে হাজারো জাল হাদীস, ইসলামের নামে বিভিন্ন রীতি ঢুকিয়ে দিয়েছে৷ হযরত অাব্দুল্লাহ ইবনে অাব্বাস রা. যখন ইরাকে গেলেন তখন অাব্দুল্লাহ ইবনে সাবা যিনি একজন ইয়াহূদী অালেম ছিলেন হযরত অাব্দুল্লাহ ইবনে অাব্বাস রা. কে বললেন, অাপনি অামার নামে একটা হাদিস বলে দেন যে অামি যা বলি তা সবই সত্যি৷ কথিত অাছে সেই ইয়াহুদী অান্তত দশ হাজারের বেশি হাদিস জাল করেছিলো৷ চিন্তুা করে দেখুন, এগুলো কি মতভেদের অাওতায় অাসলে কি দোষের? যাচাইয়ের জন্য নিজেকে কি পেশ করা অন্যায়?

একজন প্রতিষ্ঠিত অালেমকে ভিন্ন রুপে, ভিন্ন মতের অাখ্যায়িত করার পূর্বে একবারেও কি মাথায় অাসলো না, কেন মতের এই বিরোধ? যিনি একটা মতের পক্ষে বা বিপক্ষে রয়েছেন দুজনেরই উদ্দশ্য কিন্তু ''সত্যকে উদঘাটন করে অামলের মাধ্যমে অাল্লাহকে খুশি করা৷''

যারা এভাবে মতের ভিন্নতার কারণে ইসলাম থেকে বের করে দিয়ে কাফির, মুশরিক, ফাসিক ইত্যাদি বলে #ফতুয়া দেন তারা ইমলামের পক্ষে কাজ করছেন কিনা তা সুন্নতে রাসূলে প্রশ্নবিদ্ধ! অামি যদি কাউকে তার মতের ভিন্নতার কারণে দুরে সরিয়ে দেই তবে অামার অাবিস্কৃত সত্যটা কার কাছে পৌছাবো? কাকে অামি দ্বীনের পূর্ণতা পৌছিয়ে ইলমের হক অাদায় করবো? তবে কি অামি দাওয়াতের হক অাদায় করছি? অাপনারা নিশ্চয়ই জানেন, অাব্দুল্লাহ ইবনে উবাই কত বড় মুনাফিক ছিলেন৷ তারপরেও রাসূল স. তাকে মুনাফিক বলে দুরে ফেলে দেননি বরং সর্বদা কাছে রেখেছেন৷ যাতে করে সে ইসলামের সত্যটা বুঝতে পেরে ইসলামের ছায়াতলে অাসতে সক্ষম হন৷ এমনকি তার মৃত্যুর পরেও তার গুনাহ মাফের জন্য কত চেষ্টা করেছেন৷ এমনিভাবে চিন্তা করে দেখুন.......

রাসূল স. বলেছেন, একজন মুজতাহিদ তার গবেষণায় সঠিক হলে দুই নেকী পাবেন অার তার গবেষণা সঠিক না হলে সে এক নেকী পাবেন৷ তাহলে সত্য উদঘাটনে দোষের কি? প্রকাশ্যে কুফুরীর ঘোষণা ব্যতিত, নিজেকে ইসলাম থেকে খারিজ ঘোষনা ছাড়া কাউকে অমুসলিম বলা মানে হলো নিজের গলা থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলা৷ অন্তরের পবিত্রতা সম্পর্কে কেবল অাল্লাহ তায়ালাই সাম্যক অবগত৷

অাসুন, ইখতেলাফে কঠোরতা পরিহার করি৷
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাষ্ট্রদূত নিয়োগ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তুঘলকি কান্ড !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৪৪

৫ই নভেম্বর অন্তবর্তীকালীন সরকারের তিন মাস পূর্ণ হয়েছে। চারিদিকে আলোচনা চলছে এই সরকারের সময়ে কোন মন্ত্রণালয় কেমন পারফরম্যান্স করেছে তা নিয়ে। আলোচনা হচ্ছে অতি গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়ে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকানরা ভীষণ কনজারভেটিভ

লিখেছেন মুনতাসির, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২৬

আমেরিকা নিয়ে মন্তব্য করার যোগ্যতা আমার নেই—এটা প্রথমেই বলে ফেলা ভালো। আমি শুধু আমার অভিজ্ঞতার কথা বলছি। আমেরিকা তথা উত্তর আমেরিকাতে আমার যাওয়া হয়েছে বেশ কিছুবার। সবগুলো ভ্রমণ যোগ করলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×