একজন মানুষের তথা মুসলিমের দুনিয়াতে একমাত্র কর্ম হলো অাল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ইবাদাতে মশগুল থাকা৷ এই দুনিয়া থেকে সে ততটুকুই গ্রহণ করতে পারবে যতটুকু তার ইবাদাতের জন্য প্রয়োজন হয়৷ ইবাদাত ভিন্ন অন্যকোন উদ্দেশ্য একজন মুসলিমের চিন্তায় স্থাণ পাওয়ার কোন সুযোগ অাদৌ নেই৷ অাল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য কেবলমাত্র ইবাদাতই উল্লেখ করেছেন৷ কিন্তু দিন দিন অামাদের ইবাদাতগুলি নিষ্প্রাণ হয়ে যাচ্ছে৷ ইবাদতের কেবলমাত্র জীর্ণশীর্ণ অবয়ব কাঠামো ছাড়া অন্য কিছু বাকি নেই৷ ইবাদাত এখন মৃত্যুর অপেক্ষায় অপেক্ষমান৷ অামাদের ইবাদত প্রাণ পাবে তিনটি বিষয় সামনে রেখে পালণে সচেষ্ট হলে৷
এক. সকল ধরণের ইবাদাত হতে হবে কেবলমাত্র অাল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য৷ অাল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ভিন্ন অন্য কোন উদ্দেশ্য কোন নেক অামল করলে তা গ্রহণযোগ্য নয়৷ হোক না কেন তা যত বড় নেকির কাজ৷ এতে যদি বিন্দুমাত্র অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকে যেমন: মানুষকে দেখানো, মানুষকে জানানো, কাউকে খুশি করা ইত্যাদি৷ এমনকি এটাও গ্রহণযোগ্য নয় যে, অামালটাও করা হলো অার মানুষকেও জানানো হলো৷ সর্বাবস্থায় এসকল অামাল পরিত্যাজ্য৷ এতে অামলকৃত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে শিরকে লিপ্ত হবে৷
দুই. ইবাদাত করতে হবে রাসূল স. এর নির্দেশিত পন্থায়৷ রাসূল স. যেভাবে ইবাদাতের পদ্ধতি অনুসরণ করছেন ঠিক সেভাবেই অাদায় করতে হবে৷ কোন অামল শুরু করার পূর্বে অবশ্যই জেনে নিতে হবে তা রাসূল স. অাদায় করেছেন কিনা? করলে তিনি কিভাবে অাদায় করেছেন তা পূর্ণাঙ্গরুপে দলীল ও ব্যাখ্যাসহ যেনে অামল শুরু করতে হবে৷ রাসুল স. বলেছেন, অল্প অামলই নাজাতের জন্য যথেষ্ঠ হবে৷ যদি অামলটি রেগুলার করা হয় অার সুন্নাহের বিশুদ্ধ পদ্ধতি অনুসরণ করে অাদায় করা হয়৷ যে অামলের পূর্ব নমুনা রাসূল স. এর অামাল, নির্দেশ কিংবা মৌন সম্মতিতে নেই তা বিদয়াতরুপে সাব্যস্ত৷ অার প্রত্যেক বিদয়াত পথভ্রষ্টতার দিকে নিয়ে যায়৷
তিন. ইবাদাতে লিপ্ত হতে হবে হালাল রিযিক ভক্ষণের মাধ্যমে৷ কোন হারাম দ্রব্য অাহার, পরিধান কিংবা অধিগ্রহণের পর যতই বিশুদ্ধ ফরমূলায় অামল করা হোক না কেন তা কোনভাবেই অাল্লাহ তায়ালার নিকট গ্রহণযোগ্য নয়৷ রাসূল স. বলেছেন, একশ টাকার কাপড়ে যদি এক টাকা হরামের হয় তা পরিধান করে যতদিন অামল করা হোক না তা কোনক্রমেই অাল্লাহ তায়ালার দরবারে পৌছবে না৷
সম্মানিত মুসলিম পাঠকবৃন্দ, অামাদের নেক অামলগুলি করার পূর্বে উপরোক্ত তিনটি বিষয় থেকে কতটুকু চিন্তা থাকে অামাদের মাথায়? অামরা প্রতিনিয়তই কত অামাল করি তার কোন অামালটি অামি সঠিকভাবে রাসূল স. এর অাদায়ের ফর্মূলা দলীল সহকারে জেনেছি বা জানার চেষ্টা করেছি৷ অামি একবার এক ভদ্রলোককে প্রায় তিনমাস পূর্বে বলেছিলাম যে, অাপনি যে পদ্ধিতে নামাজ অাদায় করছেন তা সর্ব সম্মতিক্রমে শরীয়তের দৃষ্টিতে পরিত্যাজ্য৷ এ নামাজ অাল্লাহর দরবারে কোনভাবেই পৌছবে না যদি অাপনি ঠিক করে না নেন৷ অথচ তিনি সেটার বিশুদ্ধ অামাল পালণে কোনভাবেই অক্ষম ছিলেন না৷
কি অাশ্চর্য! নামাজ অাদায় করা হচ্ছে নাকি অাল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অথচ তা অাল্লাহর দেয়া নির্ধারিত নিয়মে অাদায় করা হচ্ছে না৷ বেশিরভাগ মুসলিমের কার্যাবলী দেখে মনে হচ্ছে যে, এরা ইবাদাতে মশগুল হচ্ছে তিনি যে মুসলিম নামের সেটা মানুষকে দেখানোর জন্য৷
হে অাল্লাহ! অামাদের সেভাবে নেক অামল করার তৌফিক দিন যেভাবে করলে অাপনি খুশি হন অার অাপনার রাসূল স. এর নির্দেশিত পন্থায়৷ অামিন৷