বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর থেকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে অনেক চুক্তি, সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও প্রটোকল সই হয়েছে। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী উল্লেখযোগ্য চুক্তিগুলো হলো :
বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও শান্তিবিষয়ক চুক্তি : ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও শান্তিবিষয়ক চুক্তি সই হয়। ওই চুক্তির মেয়াদ ছিল ২৫ বছর। মেয়াদ শেষে তা আর পুনরায় নবায়ন করা হয়নি।
বাণিজ্য চুক্তি : ১৯৭২ সালের ২৮ মার্চ বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরপর ১৯৮০, ১৯৯৮ ও ২০০৬ সালে অনুরূপ চুক্তি সই করা হয়। সর্বশেষ সই হয় ২০০৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি এবং এর মেয়াদ ২০০৯ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০১২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রম ও বাণিজ্য প্রটোকল : ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর এ প্রটোকলটি সই হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে প্রটোকলটি নবায়ন করা হয়েছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ভারতের গোয়ায় দুই দেশের নৌপরিবহন সচিবরা ওই প্রটোকলের মেয়াদ ২০১২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত নবায়ন করেন।
সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি : ১৯৭২ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি সই হয়।
স্থল সীমান্ত চুক্তি : ১৯৭৪ সালের ১৬ মে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এটি মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি নামেও পরিচিত।
বিমান পরিবহন চুক্তি : ১৯৭৮ সালের ৪ মে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিমান পরিবহন চুক্তি সই হয়।
যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন চুক্তি : ১৯৮২ সালের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন চুক্তি সই হয়।
দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি : এটি সই হয় ১৯৯১ সালের ২৭ আগস্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য।
গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি : ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তিটি সই হয়।
মোটরযান যাত্রী পরিবহন চুক্তি : ১৯৯৯ সালের ১৭ জুন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনির্দিষ্ট মেয়াদে মোটরযান যাত্রী পরিবহন চুক্তি সই হয়।
ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস প্রটোকল : ১৯৯৯ সালের ১৭ জুন স্বাক্ষরিত প্রটোকলটি দুই বছর পরপর নবায়নযোগ্য। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ১৫ অক্টোবর এটি নবায়ন করা হয়।
বেনাপোল-পেট্রাপোল রেল ট্রাফিক পুনঃস্থাপন চুক্তি : এটি সই হয় ২০০০ সালের ৪ জুলাই। দুই বছর মেয়াদি এ চুক্তি নবায়নের কারণে বলবৎ আছে।
সংশোধিত ভ্রমণ ব্যবস্থা বিষয়ে চুক্তি : ২০০১ সালের ২৩ মে সই হয়। শুরুতে এর মেয়াদ পাঁচ বছর থাকলেও বর্তমানে তা বলবৎ রয়েছে।
যাত্রীবাহী রেল সার্ভিস চুক্তি : ২০০১ সালের ১২ জুলাই চুক্তিটি সই হয়। তিন বছর মেয়াদি এ চুক্তিটি পরে বিভিন্ন সময়ে নবায়ন করা হয়েছে এবং বর্তমানে তা বলবৎ আছে।
ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিসের ওপর প্রটোকল : ২০০১ সালের ১০ জুলাই প্রটোকলটি স্বাক্ষরের পর নবায়নের কারণে বর্তমানেও বলবৎ।
সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির জন্য সাধারণ ও অর্থসংক্রান্ত বিধিবিধান : ২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির জন্য সাধারণ ও অর্থসংক্রান্ত বিধিবিধান সই করা হয় ২০০৫ সালের ৬ আগস্ট।
মাদকদ্রব্য ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের অবৈধ পাচার রোধ চুক্তি : এটি সই হয় ২০০৬ সালের ২১ মার্চ অনির্দিষ্টকালের জন্য।
বিএসটিআই ও বিআইএসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক : ২০০৭ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ও ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডসের (বিআইএস) মধ্যে অনির্দিষ্ট মেয়াদি সমঝোতা স্মারক সই করা হয়।
বেসামরিক বিমান পরিবহনবিষয়ক সমঝোতা স্মারক : এটি সই হয় ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি। মেয়াদ অনির্দিষ্ট।
দ্বিপক্ষীয় পুঁজি বিনিয়োগ, উন্নয়ন ও সংরক্ষণ চুক্তি : ১০ বছর মেয়াদি এ চুক্তি সই হয় ২০০৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি।
অপরাধ বিষয়ে পরস্পরকে আইনি সহায়তা প্রদানের চুক্তি : ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়া দিলি্ল সফরের সময় এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সাজাপ্রাপ্ত বন্দিবিনিময় চুক্তি : ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় সাক্ষর করা হয়।
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, সংঘটিত অপরাধ এবং অবৈধ মাদক পাচার মোকাবিলার চুক্তি : ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত হয়।
বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক : ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি স্মারক সই করা হয়।
সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি : ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি সই হয়।
১০০ কোটি ডলার ঋণচুক্তি : ২০১০ সালের ৭ আগস্ট ঢাকায় বাংলাদেশ সরকার ও ভারতের এক্সিম ব্যাংকের মধ্যে ১০০ কোটি ডলারের (প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা) ঋণচুক্তি সই করা হয়।
সীমান্ত হাট চুক্তি : ২০১০ সালের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত হাট চুক্তি ও দুই দেশের ট্রাক চলাচল বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষরিত হয়।
যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক : এটি গত ৩০ জুলাই ঢাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের উপস্থিতিতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।
এক নজরে দেখে নেই অদ্যাবধি ভারতের সাথে সম্পাদিত চুক্তি সমূহ ( একটি তথ্য মূলক পোস্ট 

)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর


আলোচিত ব্লগ
আইলো আইলো আইলোরে, রঙ্গে ভরা বৈশাখ আবার আইলো রে !
ভোরের আলোয় রঙিন হওয়ার দিন
পহেলা বৈশাখ এসেছে বাংলার দোরগোড়ায়—রাঙা চেলি কাপড়ে মোড়া এক সকাল, যার হাত ধরে ফিরে আসে প্রাণের ছন্দ। আকাশে লাল সূর্যের আভা, হাওয়ায় মিষ্টি কাঁচা আমের... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইসলামী শরীয়া মোতাবেক সংক্ষেপে তালাক দেওয়ার সঠিক পদ্ধতি
ইসলামী শরীয়া মোতাবেক সংক্ষেপে তালাক দেওয়ার সঠিক পদ্ধতি
তালাক হচ্ছে সবচেয়ে ঘৃণিত হালাল কাজগুলোর একটি। পারিবারিক জীবনে বিশেষ অবস্থায় কখনও কখনও তালাকের প্রয়োজনীয়তা এড়ানো যায় না বিধায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন
কবিতাঃ ঈশান কোনে ঝড়
মেঘ গুড়গুড় মেঘ গুড়গুড়
ঈশান কোনে ঝড়।
বাতাস তোড়ে ঘূর্ণিপাকে
ধুলো মাটি খড়।
পাখপাখালি ব্যস্ত চোখে
খুঁজছে আশ্রয়।
বিপদাপন্নর চোখে মুখে
অজানা শঙ্কার ভয়।
কড়কড়াকড় বাজ পড়ছে
আলোর ঝিলিকে।
প্রলয় কান্ড ঘটে... ...বাকিটুকু পড়ুন
১৪৩২ বয়স!
বাংলা নববর্ষ নিয়ে অতি উচ্ছ্বাস -
উন্মাদনা বিশেষত যারা একদিনের জন্য নিখাঁদ বাঙালি হয়ে 'মাথায় মাল' তুলে রীতিমতো উত্তেজনায় তড়পাতে থাকেন তাকে খাস বাংলায় বলে ভণ্ডামি!
বাংলা বর্ষপঞ্জিকা আমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারত-বাংলাদেশে আলাদা দিনে বাংলা নববর্ষ কেন?
ভারত-বাংলাদেশে আলাদা দিনে বাংলা নববর্ষ কেন?
বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ আসে ইংরেজি মাসের ১৪ এপ্রিল। অন্যদিকে পশ্চিম বাংলায় ১৫ এপ্রিল উদযাপন করা হয় উৎসবটি। যদিও ১৯৫২ সন পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন