হাইকোর্টের যুগান্তকারী নির্দেশনায় বলা হয়েছিলো: ক. আটকাদেশ (ডিটেনশন) দেয়ার জন্য পুলিশ কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে পারবে না। খ. কাউকে গ্রেফতার করার সময় পুলিশ তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে। গ. গ্রেফতারের কারন একটি পৃথক নথিতে পুলিশকে লিখতে হবে। ঘ. গ্রেফতারকৃতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকলে তার কারন লিখে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে ডাক্তারি সনদ আনবে পুলিশ। ঙ. গ্রেফতারের তিন ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারকৃতকে এর কারণ জানাতে হবে। চ. বাসা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য স্থান থেকে গ্রেফতারকৃতর নিকটাত্মীয়কে এক ঘন্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহক মারফত বিষয়টি জানাতে হবে। ছ. গ্রেফতারকৃতকে তার পছন্দসই আইনজীবি ও নিকটাত্মীয়র সঙ্গে পরামর্শ করতে দিতে হবে। জ. গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) প্রয়োজন হলে ম্যাজিষ্ট্রেটের আদেশক্রমে কারাগারের অভ্যন্তরে কাঁচ নির্মিত বিশেষ কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। কক্ষের বাইরে তার আইনজীবি ও নিকটাত্মীয় থাকতে পারবেন। ঝ. কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া না গেলে তদন্তকারী কর্মকর্তা ম্যাজিষ্ট্রেটের আদেশক্রমে সর্বোচ্চ তিন দিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত কারণ থাকতে হবে। ঞ. জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ওই ব্যক্তির ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হবে। ট. পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ম্যাজিষ্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করবেন। বোর্ড যদি বলে ওই ব্যক্তির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে তাহলে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ম্যাজিষ্ট্রেট ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং তাকে দণ্ডবিধির ৩৩০ ধারায় অভিযুক্ত করা হবে। ঠ. পুলিশ হেফাজতে বা কারাগারে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ ম্যাজিষ্ট্রেটকে জানাতে হবে। ড. পুলিশ বা কারা হেফাজতে কেউ মারা গেলে ম্যাজিষ্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে তা তদন্তের ব্যবস্থা করবেন। মৃত ব্যক্তির ময়না তদন্ত করা হবে। ময়না তদন্তে বা তদন্তে যদি মনে হয় ওই ব্যক্তি কারা বা পুলিশ হেফাজতে মারা গেছে তাহলে ম্যাজিষ্ট্রেট মৃত ব্যক্তির আত্মীয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তা তদন্তের নির্দেশ দিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:০৩