১.
হে ঈশ্বর প্রার্থনা করি এইবার সর্বনাশ লিখে দাও আমাদের নামে..
যতবার ঘৃণা হয়, তার নামে যতবার রচিত হয় কর্কটপুষ্প-
তুমিতো জানো ; গুন হয় ভাগ হয় আর লোকালয় মানুষে মানুষে শরাবহুতি!
হে ঈশ্বর আমাদের প্রেম দিয়ে আরেকটি স্বর্গ আরেকটি ক্লান্তমুখ আরেকটি সর্বনাশ লিখে রাখো দেখি...
২.
সে এক নীল সমুদ্রে রয়ে গেছে বালিতে লেখা নাম হয়ে! সাদা ঢেউয়ের কাঁকড়ার মত তার বিপদ পথের ডাক শহরে তামাক তামাক গন্ধের মত মিশেছে। এ নেশা যতটা বাড়ে ততটাই সমুদ্র ভ্রম!
আজ রাগ করে পাহাড়ে চলে যাচ্ছি-
রোদ মেখে যাচ্ছি। এত এত ডাক ছটফট করে খাঁচায়,হলুদ হলুদ নীল ময়ূর বাগানে...
৩.
আমিও ঐসব পাহাড় কে ভালবেসেছিলাম, ডিঙি নৌকার মত সহজ পরিবহন যে সমুদ্রে চলেনা; ডুবতে ডুবতে ভেবেছি পাহাড় পেরোনো সহজ ছিলোনা!
যেসব দুঃখ তোমার রঙে আসেনা- দুঃখিত মুখের চেয়ে সুন্দর সুখ তুমি জলেও পাবেনা।
যেসব মুখ তুমি আঁকতে পারোনা জেনো-
তারা সমুদ্রে এসেছিলো আর ফেরেনি!
৪.
কাকে দেখে ফিরে গেলে স্বীকার করো সে আমি নই!
বুকের ভেতরে ছোট এক বীজ নিয়ে মহীরুহ-
আমি সে নই ।
গল্পের দালানে সারারাত বন্দী তারপর জানালায় মুখ রেখে তারের উপরে বসা কাক, সব আছে সব ঠিক মানুষগুলো। বদলেছে সেই-
আমি সে নই !
৫.
যদি নাই পারি আর লাল লাল মেঘের উত্তরে কি আসবেনা কোন প্রীতি! ছিঁড়ে খুঁড়ে ইতিহাস গড়ে ফিরে যাব একাকি। জোনাকির বন প্রজাপতির বন ভিজে যাবে খুব ভিজে যাবে; থৈ থৈ বৃষ্টি হবে। হাতের তালু থেকে লাফিয়ে পড়বে দেবী মাছ!
মনে আছে আগের জন্মে তোর হাতে উঠে এসেছিলাম। ছলকে ছলকে জলের ভেতর থেকে এক শীতের ভোরে। এরকম ভোর আরও কত আসে। জন্ম ত্যাগের বেদনা আমার কাটেনা!
৬.
পুরনো সমুদ্র!...
স্নানে কিশোরীর লবনাক্ত চুলের মত পা ছড়িয়ে বসে দুঃখ;
প্রিয় লবস্টার!
দর্শক শুমারীর শেষ দুই পাতায় লেখা হতে থাকে এখনো কয়েক ঘন্টা বাকি জোয়ারের। মনটা কেমন করে হলুদ ছাতার নিচে বসে।কে আমাকে ভালবাসে কে আমাকে...
৭.
ধরো আমাকে তোমার মনে থাকা একটা নিঝুম পাহাড়ে একা গড়িয়ে গড়িয়ে যায়। কতদিন আগে কেউ কেঁদেছিলো তোমার মনে পড়ে। আরও কত গল্প মনের ভেতর আসে-
শিমুল ফুল,সুহৃদ সন্ধ্যা, ময়না পাখির শিষ হয়ে তোমাকে ডাকে। ধরো ওরা বুঝে যায়,
কেন তুমি পাহাড়ে আসোনা!
৮.
কুভার দ্বার ভেঙে আসা সোনালী তিল ভাল আছে। ভিনদেশী যুবকের হাওয়া দৃষ্টি সংযত করো, পাহাড়ি পথের উপর বরফ লজ্জাপাত হয়, কয়েকটি হিমবাহ গলে যেতে শুরু করলে এই সব তিল বয়সের দোহায় শেখে;
আপাতত চোখ বন্ধ রাখো মায়া কতটা সুখ পশ্চিমে যায় দেখে!
৯.
যেখানে জবাবদিহিতা থাকেনা সে সম্পর্ক মৃত। এই মৃত্যু যখন তোমাকে ছোঁয় ছটফট করো। একটি পাতা সম্পর্কহীনতার দায়ে জলে ভাসতে থাকে। আমার ইচ্ছে হয় খুব ইচ্ছে হয় পাতাটা চাঁদের আলো। পাতাটা জোছনার মত ভালবাসি! পাতাটা হোক ছেলেবেলার বাঁশি...
সব বাঁশি কি আর বাজে!
১০.
কাওকে ভালবাসি বলতে ইচ্ছে করে মুখোশটা খুলে ফেলতে ইচ্ছে হলে আলজিব খসে যায়।
খুলে ফেল , খুলে ফেল তোর মুখোশটা আজ দেখি, কালার কেমন চটা;
দেহের রক্তে আবার পুরোন দোলা কৃষ্ণচূড়া লাল-
মুখোশ খোলা মুখটা আবার করছে গালাগাল!
১১.
গাছটার চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে আমরা বড় হয়ে গেলাম। কিছু মেঘ ঝরে গেলো তুলোর পাতা, তুষারের ঝড়। ঘর বানালাম। আমরা বড় হয়ে গেলাম একদিন।
তারপর গ্লাসে ঢালি রোজ লাল রঙ মদ! জলে স্থলে হাওয়ায়। আমরা প্রতিদিন নেশায়...
ভালবাসা তোমাকে স্বপ্নে দেখলাম। চল্লিশ রোল! আমাদের সব বিনিময় শেষ হয়ে যাওয়ায় তুমি চলে গেছো।
১২.
কেন আমার বিভ্রম হয় কেন আমি খুঁজি তোমাকেই!
বৃষ্টি হয় বৃষ্টি। কেবল পথের উপরই ঝরে উন্মুখ বিষন্নতা। আমু-দরিয়ায় নেমে আসে হলদে আতর। গোপন ঠোঁটের চিকচাক পাখি। এখনো সবুজ বোতাম কাটাছেঁড়া সুতোয় তোমার গলার কাছে ঝুলে আছে ভাবি। দৃষ্টি তোমাকে প্রতারক করে ভোরে...
তুমি এসেছিলে। তুমি আসবে। তুমি ফিরে গিয়ে ভুলে যাবে গোপনে কতটা অনাদরে ছিলে শহরে!
১৩.
সেই ভাল! পত্রপাঠ আর উত্তর না করো। আমি বেঁচে যাই মিলিতে মেলাতে। কবিতার শেষ লাইন বলতে বলতে আমিও আঁধার। ভীষন ব্যাপ্তি নিয়া কুমিরখোলা নদী গিলিতে আসে। সেই ভাল আমি গলিয়া যাই!
১৪.
চমকে চমকে উঠিছে স্বর্গ ফুলিয়া ফাঁপিয়া বান-
যাহাতে আমার না দেখা চোখ কত কি স্বপ্ন আঁকিছে;
আমিও পাহাড়, পাহাড়ের মত অটল থাকিয়া রই,
অনুভবে পাই কি সদ্ভাবে আপন করিয়া রাখিছে!
১৫.
বয়সী সাদা ঘোড়া জোরে চলো, আরো জোরে;
ম্যাপবাক্স ছেড়ে বেরিয়ে যেন এখনি এখানে গজিয়ে উঠবে বাহাত্তরটি গ্রাম!
বিয়ার খোলো কাবাব টুকরো গম, আরেকটু মাতাল হও। এইতো বেড়িয়ে আসা গেলো পাথুরে পথ বরফের দেশ।
যেখানে গিয়েছিলো সে আর আসেনি। আসেনি প্রতীজ্ঞার নব্বইটি চিঠিও!
১৬.
কেও না জানুক অপেক্ষা কেমন বিষ তুমি পিয়ে পিয়ে করেছ পান- চাদের কলংক সুর গিটারের তারে লেগে করেছ গান! জোছনা উড়েছে দূরে নীল পাখি হয়েছে তারপর;
কেও না জানুক তুমি করেছ কেমন অভিমান!!
১৭.
এই হাতে জন্ম দিয়ে তাকে খুন করেছি; প্রতিদিন রক্তপাত হয় তারপর! সেই ভালো-
আমারও অপেক্ষা নেই আর|
কত কে দাঁড়ায় এসে যাত্রীছাউনী তলে; বৃষ্টি আসে,শুধু থাকেনা তোমার সমুদ্র আশিস-
কি বোকার মত তাকিয়ে আছি পথে|রাত অথবা নেই;
অথচ আমার কোথাও আর জায়গা নেই দাঁড়াবার!
১৮.
এই চাঁদ হাওয়ার তলে আনচান করছিলো কিছু মাধবিলতার ফুল!
গন্ধেরও পিছুটান ছিলো জোছনার-
একজোড়াকালি চোখ নাই থাকে যদি একলা,
একজোড়া হাত; হাতের কি দোষ
সেও কিছু ফুল চায়।
মাধবিলতা, এই চাঁদ জোছনায়!
অন্ধকারে আরো কিছু পথ বাকি।
হিসেব নিকেশ মিটিয়ে দেয়াও ভুল-
এই চাঁদ আর ফিরে যদি তবু আসে;
ফিরবেনা হাত মাধবিলতার ফুল।
১৯.
একটা বিচ্ছিন্ন পাতা হঠাৎ আমার ঘরে এসে পড়ে।আমার বিস্ময় লাগে।স্মৃতি ঝাঁপ দিয়ে পড়ে যেন হিংস্র কোন জীব,আঁচড়ে কামড়ে বলে একদা আমাকে কেউ এই নামে ডেকেছিল। বলেছিল সবুজ পাতা!
তীব্রতা নিয়ে অতীত চলে যায়।কত ছল থাকে, অনায়াসে কেউ ছলছল করা নদী।
এইসব পাতার নৌকা রাতারাতি পর হয়ে যায়।গামইনে আর আমি লিখতে বসি তারাবাতি হয়ে যাওয়া আমাদের গোপন আত্মজীবনী!
২০.
তোমার সাথে আর কথা হবেনা! মাত্র অল্প কিছুদিন এই গাছে কোন ফুল ফুটেনি।যেন মনে হয় অনন্তকাল ধরে ফুল ফুটছেনা কোন গাছে। পানিতে ঝুঁকে পড়ে আকাশ দেখছে তার ছায়া। নদীতে ছিলনা সময় আমাদের স্মৃতি।মানুষ পারেনা। যেমন কান্নাও থাকেনা দীর্ঘসময় কোন চোখে!
শুধু আর কথা হবেনা ভেবে সব কাঠের নৌকা দাঁড় বেয়ে চলে গেলো, আমাকে এক হলুদ ছাতার তলে রেখে!