কানাগলিতে বিভ্রান্ত যুবক অথবা রেডিয়েশন আক্রান্ত একটি এলাকা
#
গলিটির নাম কানাগলি, যদিও নামটি অস্বাভাবিক কিন্তু এলাকার লোকজনের ভেতর নাম নিয়ে কোনো অসন্তোষ ছিল না। পূর্বে এর নাম কী ছিল, শহর থেকে দূরে এই এলাকায় মানুষ কবে থেকে বসবাস করতে শুরু করে সে ব্যাপারে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় না। অনেকে বলেন, শহর থেকে বিতাড়িত কিছু লোকজন এখানে এসে বসবাস করতে শুরু করে এবং তখন তারা এর কোনো নাম দিতে ব্যর্থ হয় কিংবা দেয়ার ব্যাপারে কোনো উৎসাহ পায় না। কেউ কেউ এই যুক্তিকে ফুঁ মেরে উড়িয়ে দেয়, উড়িয়ে দিয়ে বলে লোকজন কেন এখানে এসে বসবাস করতে আসবে হঠাৎ করে? মানুষ আগে থেকেই থাকত ; কিন্তু তারাও পেছনে কোনো শক্ত যুক্তি দেখাতে ব্যর্থ হয়।
এলাকার মুরুব্বী বলে খ্যাত আলিম মাস্টার অবশ্য নামের পেছনের কাহিনী বলে এবং সেটা অনেকে বিশ্বাস করে যদিও বেঁচে থাকার জন্য গলির নামের ইতিহাস নিয়ে তাদের মাথাব্যথা হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। সুতরাং আলিম মাস্টারের যুক্তি বহাল তবিয়তে টিকে গিয়েছিল, টিকে আছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যেদিন হিরোশিমায় বোমা ফেলা হয় সেদিন তার ছোট একটি টুকরো নাকি কানাগলির জমিদার বাড়ির পুকুরে গিয়ে টুপ করে পড়ে। সমস্ত বিশ্ব এই বিষয়টি নিয়ে অজ্ঞ থাকলেও আলিম মাস্টার ধরতে পারে এবং অজ্ঞাত আশংকায় এলাকা ছেড়ে পালানোর কথা ভাবতে থাকে। সে দলবল ভারি করতে চেষ্টা করে কিন্তু কাউকে পায় না, এমনকি তার নিজ ছেলেও হাসাহাসি করতে শুরু করে।
ওরে, তোরা বুঝবি একদিন বুঝবি। আলিম মাস্টারের হাহাকার মিলিয়ে যায় গলির বাতাসে।
মানুষজন বিষয়টি আমলে নিতে চেষ্টা করে যখন গলিতে একের পর এক অন্ধ শিশু জন্মগ্রহন করতে শুরু করে। অল্পশিক্ষিত, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পারমানবিক বোমার জেনেটিক ক্ষতিগুলো সম্পর্কে জানার কথা না থাকলেও দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না। সেই থেকে গলিটির নাম কানাগলি; কিন্তু ২০১১ সালে এসে জন্মান্ধ কারো পরিচয় খুঁজে বের করা যায় না, আলিম মাস্টারের খোঁজ পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়েই আমাদের পূর্বসত্য বলে স্বীকৃত তথ্যের উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হয় অথবা বলা চলে- প্রকৃত ইতিহাস অনুসন্ধানে আমরা শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হই।
নামের বৈচিত্র কিংবা অজ্ঞাত কোন কারণে গলিটি সহ সম্পূর্ণ এলাকায় কখনোই খুব একটা উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এই গলিটিকে এলাকার সবচেয়ে উন্নত জায়গা বলা যায়। যেখানে এখানেই রাস্তাঘাট ইট-সুরকির, কারেন্ট থাকে না বাইশ ঘন্টা; তাই যে দু ঘন্টা কারেন্ট থাকে সেই সময়টাকে গলিবাসীর উপদ্রব বলে মনে হয়, তাই তারা তখন লাইট-ফ্যান বন্ধ করে থাকে, এই কথাটিও গুরুত্বপূর্ণ যে অধিকাংশ মানুষ লাইট-ফ্যান কিনেনি অথবা বলা যায় কেনার মতো আর্থিক সংগতি তাদের নেই, এখনো হয়নি; তখন এলাকার অন্য মহল্লাগুলোর কী অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়।
সামাজিক সাম্যবস্থার প্রকৃত পরিচয় পাওয়া যায় কানাগলিতে যেখানে মানুষের এই সাম্যবস্থা নিয়ে কোনো অভিযোগ ছিল না।
শিক্ষার ছোঁয়া না থাকলেও এরা ছিল স্বশিক্ষিত। এলাকার মুরুব্বিরা গল্প শোনানোর জন্য অনেক পিচ্চিদের পেয়ে যেত, ছেলেমেয়েরাও কাছাকাছি থাকত-- তাই তাদের জীবনের শেষকালটাও আনন্দে কাটত।
এলাকায় কিংবা গলিতে কোথাও ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি ছিল না। যার যার ধর্ম সে সে পালন করত, প্রত্যেকের ধর্মীয় উৎসবে একসঙ্গে পুরো এলাকাই উৎসব করত।
নিন্দুকেরা বলত এরা তো কানাগলির মানুষ, এরা অন্ধ; তাই তারা জীবনের সবকিছুতে আনন্দ খুঁজে পায়, ঘরে চুলোয় বসানোর মতো কিছু নেই তারপর আবার তাদের কিসের উৎসব? এসব কথায় এলাকাবাসীর, মহল্লাবাসীর কারো কিছু এসে যেত না।
সবকিছু পরিবর্তনশীল; পৃথিবীর এই সূত্রের উপর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে কানাগলি এবং এর চারপাশের মানুষজন ধীরে ধীরে বদলাতে থাকে।
যে কারেন্ট নিয়ে তাদের মনে কোনো অসন্তোষ ছিল না, সেই কারেন্ট না থাকা একসময় প্রভাব ফেলতে শুরু করে এবং বিরক্ত হতে থাকে। যে গ্যাস দিয়ে সারাদেশ চলে, তাদের এখানে গ্যাসের সংযোগ নেই ব্যাপারটা তাদের পীড়িত করতে শুরু করে। হতে পারে যাতায়াত ব্যবস্থার প্রসারে কিংবা বাইরের পৃথিবীর হাতছানিতে কিছু মানুষ বাইরে যাওয়ার কারণে তাদের ভেতরে এই পরিবর্তনের সূচনা হয়। মুরুব্বীদের ভেতরে এই নিয়ে দ্বিমত দেখা দেয়। সুতরাং সমস্যাহীন এলাকায় সমস্যার কালো চাদর বিস্তৃত হতে শুরু করে সবার অজান্তে।
একদিক দিয়ে চিন্তা করলে বলা যায় নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে মানুষ, এটা খুব ভালো। অন্যদিক দিয়ে চিন্তা করে বলা যায়, দীর্ঘদিনের পথ থেকে হঠাৎ কোনো পরিকল্পনা ছাড়া চলে আসা বিপদজনক। তাছাড়া সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়া যখন কোনো পরিবর্তন আসে, তা মঙ্গলের থেকে অমঙ্গল ডেকে আনে। ব্যাপারটা বুঝতে পারার মতো কেউ ছিল না, তবে অনেকেই ছিল যারা সক্রিয় হতে থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংঘটনে নিজেদের জড়িয়ে পরিবর্তনশীল সময়ের সুবিধার ভাগীদার হওয়ার জন্য দৌঁড়াতে শুরু করে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়ে যায়, প্রথমবারের মতো প্রচুর মানুষ ভোট দিতে যায়। এটা অবশ্য ভিন্ন কথা যে তারা যাদেরকে ভোট দিতে যায়, তারা কেউ ভালো ছিল না বরং অযোগ্য ছিল তবু তারা ভোট পায় কারণ সেখানে দাঁড়ানোর মতো ভালো মানুষ ছিল না অথবা মানুষ তখনো ভোটের মর্যাদা ঠিকমত বুঝে উঠতে পারেনি।
নির্বাচনে ওয়াদার ফুলঝুঁড়ি ছিটিয়ে বৈতরণী পার হলেও ক্রমেই মানুষের ভেতর অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠতে থাকে। সেই সময় গিটার হাতে এক তরুণের আবির্ভাব হয়; অধিকাংশ মানুষ তখন প্রথমবারের মতো গিটার দেখে, অনেকেই গিটার সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে। এলাকাবাসীর তখন জানা ছিল না, এমনকি তরুণ নিজেও জানত না এই আবির্ভাব একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হয়ে উঠবে এবং একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক পট-পরিবর্তনের সূচনা করবে।
এলাকায় পোড়াবাড়ি বলে খ্যাত বাড়িটিতে মাথা গোঁজাবার মতো করে ঠিক করে নিয়ে সে সেখানে বসবাস করতে শুরু করে। তাকে নিয়ে মানুষের আগ্রহ দিনদিন বাড়তে থাকে, সে কীভাবে এল, কেন এল, পোড়াবাড়ির সঙ্গেই বা তার কী সম্পর্ক তা নিয়ে সবার ভেতর ছাইচাপা আগুন সদৃশ উৎসাহ দেখা যায়।
মানুষের আগ্রহে যুবকটি বিরক্ত বোধ করে না। সে হাসে, হেসে বলে, আমি আপনাদের-ই লোক। এতে লোকজনের উৎসাহের পালে দ্বিগুণ হাওয়া লাগে, তারা ভাবতে থাকে সে আমাদের লোক কীভাবে হয়?
ধাঁধা বাড়ার আগেই লোকজন খবর বের করে ফেলে এই ছেলে হচ্ছে আলিম মাস্টারের নাতি। তৎক্ষনাৎ তাদের মনে পড়ে যায় কানাগলির নামকরণের পেছনের কথা, আলিম মাস্টারের ছেলের পালিয়ে যাওয়া, এই পোড়াবাড়িতে একদিন আলিম মাস্টারের মারা যাওয়ার কথা, তবে তখন পোড়াবাড়িতে মানুষ ছিল, এটি একটি বাড়ি ছিল; পুড়ে যাওয়া কিছু ছিল না, সময় এখন এই বাড়িটিকে পোড়াবাড়ি বানিয়ে দিয়েছে।
এতদিন পর কী মনে করে? তোমার বাবা কোথায়? তোমার দাদা মারা গেছে জানো? এই ধরনের প্রশ্নের জবাবে যুবকের চেহারায় অনুভূতির ভিন্নভিন্ন প্রকাশ খেলা করে; যেমন এতদিন পর কী মনে করে প্রশ্নের জবাবে সে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে, বাবা প্রসঙ্গে কিছুটা উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়, দাদার মৃত্যুর কথা তার মন খারাপ করে দেয়।
সে বলে, আমি একটি রহস্য উদঘাটনের জন্য এসেছি। গলির মানুষজন নড়েচড়ে বসে। এইখানে পারমাণবিক বোমার ছোট্ট একটা খন্ড বিস্ফোরিত হয়েছিল, দাদার ভাষ্যমতে। আমি তার খোঁজ করতে এসেছি।
পারমাণবিক বোমার খন্ডটি সম্পর্কে সবাই কমবেশি জানে, তারা যুবককে সাহায্য করবে বলে জানায়, যদিও সাহায্য করার উপায় তাদের জানা ছিল না।
#
এলাকায় নতুন গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে এই খবর শুনে তারা উৎফুল্ল হবে কি’না বুঝতে পারে না, তবে সাময়িকভাবে যুবকের কথা ভুলে যায় এবং চা এর দোকানে, অলিতে-গলিতে তখন আড্ডা জমে ওঠে গ্যাস এলে কী হবে, কত তাড়াতাড়ি তারা রান্না করতে পারবে, ইত্যাদি সব বিষয় নিয়ে।
ওদিকে যুবক খুব দ্রুত তার কাজে নেমে পড়ে। দাদার কাছ থেকে শোনা তথ্য অনুযায়ী পুরোনো জমিদার বাড়ির পুকুরের খোঁজ করতে শুরু করে যেখানে বোমার খন্ডটি বিস্ফোরিত হয়েছে এবং তার কিছু প্রমাণ সে চায়। কিন্তু কেউ তাকে এই ব্যাপারে কোনো সাহায্য করতে পারে না, অনেকেই জমিদার বাড়ির কথা শুনে তাজ্জব বোধ করে, এ ধরনের কিছু তারা জন্ম থেকে শোনেনি। সুতরাং যুবককে তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা প্রথমেই ব্যর্থতায় পরিণত হয়।
গ্যাস সংযোগের খবর জনপ্রতিনিধির কমতে থাকা জনপ্রিয়তার পালে হাওয়া লাগায়, তার বিরোধীরা এতে কিছুটা চুপসে যায়। যুবকের এই ব্যাপারে কোনো আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় না। কারো সঙ্গে দেখা হলে সে জানতে চায়, ভাই জমিদার বাড়িটা কোনদিকে? আর রাতে পোড়াবাড়ির চিলেকোঠায় বসে গিটারে টুংটাং সুর তুলে আপন মনে গান গায় এবং দিনদিন তার গানের স্রোতা বাড়তে থাকে, যাদের অধিকাংশের বয়স ষোল থেকে বিশের কোটায়।
যুবক দেখতে সুদর্শন ছিল, তার পরিপাটি করে পড়া পোশাক পরিমিত রুচিবোধের পরিচিয় দেয়। সেজন্য এলাকা এবং কানাগলির অবিবাহিত তরুণীদের ভেতরে তাকে নিয়ে নানান জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে যায়; তার কী বিয়ে হয়েছে নাকি, বিয়ে না হলে কোনো পছন্দ আছে কি’না। বেশ কয়েকজন তরুণী নিজেদের মতো করে লুকিয়ে চিলেকোঠার সিঁড়ির নীচে হাজির হয়, গান শুনতে চেষ্টা করে এবং নিজেদের ভেতর বচসায় লিপ্ত হয়; কেউ কাউকে যুবকের ব্যাপারে ছাড় দিতে রাজি হয় না। যুবক এসব বুঝতে পারে, সে এসবে পাত্তা দেয় না।
এভাবে বেশ কিছুদিন পার হয়ে যায়, যুবক না জমিদার বাড়ি, না পুকুর—কিছুই খুঁজে পায় না। হতাশ হয়ে ভাবে সে চলে যাবে। তো তার চলে যেতে চাওয়ার ইচ্ছে মানুষের কাছে পৌছে যায়, তার ভক্তকুলের মাধ্যমে এবং যা হওয়ার তা হয়, তাদের মন খারাপ হয়ে যায়, তারা তাকে থেকে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকে।
তাদের অনুরোধে কাজ হয় কি হয় না যুবক কি ভেবে তার যাওয়া পিছিয়ে দেয়। ততদিনে নারীদের তার প্রতি আগ্রহের কথা সে জেনেছে এবং আশৈশব, কৈশোর নারীসঙ্গবিহীন থাকায় তার ভেতরেও সামান্য আগ্রহের দেখা মেলে। তাই সে নারীদের প্রতি মনোযোগ দিতে চেষ্টা করে। বাজার করতে গিয়ে একজনের সাথে কথা হয়, তারপর আবার অন্য কোথাও দেখা হয়, একসময় দেখা যায় নারী অথবা কিশোরীটি যুবকের বাড়ির আশপাশ থেকেই নড়েই না
কিশোরীর সাথে অবাধ মেলামেশায় এক শ্রেনীর মানুষের ভেতর অসন্তোষ দেখা দেয়। যাদের ভেতর কেউ কেউ কিশোরীর পাণিপ্রার্থী, কেউ মুরুব্বী গোছের লোকজন, কেউ অতিরিক্ত ধর্মপ্রাণ নাগরিক সমাজ যাদের ইতিপূর্বে কানাগলিতে খুব একটা দেখা যেত না, ইদানীং শুধু দেখা যায় না বরং বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেয়ার চেষ্টা করে অথবা বলা যায় তাদের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে।
এভাবে নানা সমস্যার ভেতর দিয়ে শুরু হয় যুবকের নতুন জীবন ওদিকে এলাকায় গ্যাসের সংযোগ এসে গেছে।
#
গ্যাস পেয়ে মানুষের উল্লাসের আর সীমা ধরে না। আর যারা গ্যাস সংযোগ নিতে পারে নি তারাও হা-হুতাশ করতে থাকে আর বিরোধী দলের লোকজনের মুখ শুকিয়ে কাঠ হয়ে যেতে থাকে। স্পষ্টই যে তারা খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না তখন তারা যুবকের কাছে যায় এবং তার সাহায্য কামনা করে।
যুবক গান নিয়ে ব্যস্ত ছিল, সে বিরক্ত হয় এবং তাদের তাড়িয়ে দেয়।
তবে খুব শীঘ্রই তাদের সামনে সুযোগ এসে হাজির হয় যখন গ্যাস ব্যবহারে অনভ্যস্ত জনগণ দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে এবং বিরোধী দল তখন বলতে থাকে এটা ক্ষমতাসীন দলের ব্যর্থতা, তারা টাকা খেয়ে গ্যাসের লাইনে বাজে জিনিষ দিয়ে ভরে দিয়েছে। এই কথাটির পালে আরো হাওয়া লাগে যখন ছোটখাটো দুর্ঘটনার পর পুরো বাড়িসুদ্ধ মানুষ আগুনে পুড়ে মারা যায়। যদিও মানুষ এই ধরনের পরিস্থিতির সাথে অচেনা তবু তারা মিথ্যে কথাটিকেই সত্য বলে ধরে নেয়। সেই দাঁড়ি ওয়ালা লোকগুলো দৃশ্যপটে হাজির হয় এবং বিরোধী দলের সাথে হাত মেলায়। এই পরিস্থিতিতে বিকেলের বিদায়বেলায় পোড়োবাড়ির সামনে কিশোরী, যুবককে বলে—চলো আমরা যাই গা, এইখানে সব কেমন জানি। যুবক উদাস ভঙ্গিতে হা ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে, আমারো ভালো লাগছে না। কিন্তু পুকুর যে খুঁজে পেলাম না!
সাধারণত এই নির্জন রাস্তায় যুবকের ভক্ত বাদে কেউ আসে না কিন্তু হাত ধরে থাকার মুহূর্তে যুবকের পাশ দিয়ে বিরোধী দলে এক চ্যালা অতিক্রম করে এবং পরে সে ছড়িয়ে দেয় যুবককে সে চুমো দিতে দেখেছে এবং যুবক যে তাদের ফিরিয়ে দিয়েছিল সেটা ভেবে এর প্রতিকার করার উদ্যোগ নেয়।
বুঝলেন এলাকায় ধর্মকর্ম নাই, তাই এইসব দূর্ঘটনা ঘটতেসে-দাঁড়িওয়ালা লোকজন এইসব কথা বলার চেষ্টা করে।
অনেকে যোগ করে, গান বাজনা, মাইয়া মানুষের হাত ধরে ঘুরে বেড়ানো কেয়ামতের আলামত।
ক্ষমতাসীন দল এসব কে প্রশয় দিচ্ছে বিধায় তাদেরকে দায়ী করে এবং ধর্ম-কর্ম চলে যাচ্ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে।
যুবককে তারা এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। যুবক এমনিতেই চলে যাচ্ছিল তবে তাদের আদেশ শুনে খেপে গিয়ে বলে যাবে না। এক উত্তেজিত ধর্ম রক্ষাকারী তখন রামদা বের করে এবং নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর বলে কোপ দেয় এবং অল্পের জন্য রক্ষা পায়। দ্বিতীয়বার আর সে নিজেকে রক্ষা করতে পারে না, রক্তে পোড়াবাড়ির ফ্লোর ভেসে যায়।
ঠিক তখন চোখ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময়ে যুবক আলিম মাস্টারের কানাগলির আসল থিওরী ধরতে পারে। ধরতে পারে এই কানা মানে অন্ধ হয়ে যাওয়া নয়, এই কানা মানে ফুটো হয়ে যাওয়া অনেকটা তলাবিহীন ঝুড়ির মতো যা দিয়ে মানবিকতা হারিয়ে যাচ্ছে, এতদিন সুপ্ত অবস্থায় ছিল, এখন ফুটো দিয়ে সব বের হয়ে যাচ্ছে—মানুষ, স্বপ্ন, ভালোবাসা, মানুষের যা সুন্দর আছে, সব!
কানাগলির রহস্য উদঘাটন শেষে যুবকের মুখে প্রশান্তির হাসি ফুটে ওঠে, যদিও সে হাসি দেখার জন্য কেউ সেখানে ছিল না। তারা রেডিয়শনে আক্রান্ত গলিবাসী, এখন আর ভালো কিংবা মানবিক কোথাও তারা থাকবে না।
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন