রমজান মাস মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিশেষ সময়ে পরিণত হয়। এই সময় ইবাদতের সুযোগ যেমন বেশি, তেমনি নেকি অর্জনের সম্ভাবনাও অনেক গুণ বৃদ্ধি পায়। ফলে বিশ্বের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই মাসে মক্কা-মদিনায় গিয়ে ওমরাহ পালনের জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকেন। কিন্তু চলতি বছর বাংলাদেশি মুসলিমদের জন্য ওমরাহ ভিসা পাওয়া যেন এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
হঠাৎ করেই সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ ওমরাহ ভিসার সংখ্যা সীমিত করে দিয়েছে, যার ফলে হাজারো বাংলাদেশি মুসলিমের স্বপ্ন আটকে গেছে। আগে থেকে টিকিট কাটা, হোটেল বুকিং, অন্যান্য খরচ বহন করার পরেও অনেক যাত্রী এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে রমজান মাসে যারা ইবাদতের বিশেষ পরিকল্পনা করেছিলেন, তারা এখন হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।
এদিকে, হজের ব্যয় যেভাবে বাড়ছে, তাতে সাধারণ মানুষের পক্ষে পূর্ণাঙ্গ হজ পালন করা অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অনেকেই কম খরচে ওমরাহ পালন করে আত্মিক প্রশান্তি লাভের চেষ্টা করেন। কিন্তু ওমরাহ ভিসার এই সংকট পরিস্থিতি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এমনকি কিছু অসাধু চক্র এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভিসা পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা করছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির মালিকরা বলছেন, সৌদি কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করেই ভিসা কমিয়ে দেওয়ার কারণে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ইতোমধ্যে হাজার হাজার টিকিট বাতিল হয়েছে, অনেক ফ্লাইটেও যাত্রীসংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে যারা ওমরাহর জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, তাদের জন্য এই অনিশ্চয়তা দুঃখজনক।
বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছে, যাতে দ্রুত কোনো সমাধান পাওয়া যায়। তবে এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আকুল আবেদন, যেন তাদের জন্য ওমরাহ পালনের দরজা খোলা থাকে। এই সংকট নিরসনে সৌদি সরকার আরও সহানুভূতিশীল হবে, এমন প্রত্যাশা সবার।
আমরা সবাই জানি, হজ ও ওমরাহ এমন এক ইবাদত, যা একজন মুসলমানের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আল্লাহ যেন আমাদের সবার জন্য কমপক্ষে একবার হলেও হজ করার সুযোগ দেন—এই প্রার্থনাই করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:৩৫