এক দুপুরে বালিকা সুমাইয়া বসে ছিল দীঘির পাড়ে। দশ বছরের সুমাইয়ার স্কুলে যায় না। মাঠে গরু ছাগল চরায়, ঘরে বসে বিভোর হয়ে দেখে হিন্দি সিরিয়াল। সুমাইয়ার বাবা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। সুমাইয়ার মা ওর বাবার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্য্যন্ত সুমাইয়ার মায়ের দম ফেলার সময় হয় না। ঘরদোর সামলে ছুটতে হয় তাকে মাঠে ঘাটে সবখানে। মাঝে মাঝে নদীর ভাঙ্গা পাড়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাকে, বাতাসে ওড়ে তার শাড়ির আঁচল। সন্ধ্যায় ঝলমলিয়ার ঘাটে জল আনতে যেতে যেতে অপেক্ষায় থাকে, কথা বলে কারো সাথে। সমস্ত দিনের হাড় ভাঙ্গা খাটুনির পরে এই একটুকু তার মনের শান্তি। প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে মানুষ টিকে থাকে, মনের সাথে যুদ্ধ করে মানুষ বাঁচতে পারে কি? ঝলমলিয়ার জলে টলমল করে মানুষের মুখচ্ছবি। দীঘির মিষ্টি জলে কখনো ঝড়ে পড়ে ক'ফোটা চোখের নোনা জল ক্যামেরার লেন্স তা ঠিক করে ধরতে পরে না। মানুষের অন্তরে অচিন যে পাখির বাস সে কেবল খাঁচা ছেড়ে উড়ে যেতে চায় বারে বারে। মুক্তি কি শেষমেষ মিলে কারো!
দিন যায়, বদলায় প্রকৃতি, পরিবেশ। প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠা মানুষের জীবনে তার প্রভাব পড়ে। প্রকৃতির ইচ্ছায় মানুষের ঘর ভাঙ্গে, মানুষ ভীটে ছাড়া হয়। নিজের ইচ্ছায়ও মানুষ ঘর ভাঙ্গে ঘর ছাড়া হয়। মানুষ বদলালে কতটুকু বদলায়? জীবন ভাসতে ভাসতে কখনো কী কোন পথ খুঁজে পায়?
আইলা পরবর্তী ৬ বছর দক্ষিন-পশ্চিম উপকুলের একটি গ্রাম, গ্রামের মানুষ, মানুষের জীবন ও যাপন নিবিড় পর্য্যবেক্ষনের প্রামাণ্য ছবি, "ঝলমলিয়া"।
বিস্তারিত জানতে: http://www.facebook.com/jholmolia/
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৫