(লেখাটি আমার সেভ করা ছিল প্রকৃত লেখকের নাম মনে নেই কেউ যদি নাম জেনে থাকেন আমাকে দয়া করে জানিয়ে দিবেন)
দিদি,তোর দেবরের চরিত্র ভালো না।আজ আমার বুকে হাত দিয়ে বললো,"বেয়াইন সাব আপনার জ্বর এখনো কমে নি?"
দিদি ফিক করে হেসে বললো,জাহিদ একটু ওরকমই পূজা।বেশি ফাজলামি করে,তুই মনে কিছু করিস না।আমি দিদির দিকে চোখ বড় করে তাকিয়ে বললাম,এগুলো কোন ধরনের ফাজলামি, গায়ে হাত দিয়ে কথা বলবে?
দিদি চুপ হয়ে আছে।মিশু কোথা থেকে বল নিয়ে এসে বললো,মাসি,চলো ক্রিকেট খেলি।দিদির উপর রাগ দেখাতে না পেরে চট করে এক থাপ্পড় আমি মিশুর গালে বসিয়ে দিলাম।যাতো মিশু এখান থেকে।মিশু কাঁদতে কাঁদতে বাইরে চলে গেলো।দিদি বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়ালো,তুই আমার ছেলের গায়ে হাত দিলি কেনো পূজা?আমিও ছেড়ে দিলাম না।চড়টা তো তোকে মারা উচিত ছিলো দিদি।তোকে পারিনি তাই মিশুর গালে মারলাম।দিদি হাঁ করে তাকিয়ে আছে।তুই আমাকে এমন কথা বলতে পারলি?
পারলাম।ভালোবেসে ঘর ছাড়লি।তাতেও শেষ হয় নি।সনাতন ধর্ম ছেড়ে মুসলমান হয়ে গেছিস।সেই শোকে বাবা মারা গেলো।শুনছি এখন নাকি গরুর মাংস ও খেয়ে বেড়াচ্ছিস।ছিঃ কথাগুলো বলতে যেয়ে চোখ লাল হয়ে গেলো আমার।দিদি মুখ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বললো,ভালোবেসেছিস কখনো কাউকে?বাসলে বুঝতি প্রেম ধর্ম-কর্ম মানে না।আমার বুঝে কাজ নেই।কেমন ছেলেকে ভালোবেসেছিস তাতো তার ভাইয়ের চরিত্র দেখেই বুঝতে পারছি।তোর এখানে বেশিদিন থাকলে তোর সাথে আমিও নরকে যাবো।দিদি আবার আমার হাত ধরে বসে পরলো।আর ক'টা দিন থাকনা পূজা, তোর দুলাভাই বিদেশে চলে যাওয়ার পর থেকে বড্ড একা লাগে আমার।রাগ দেখালেও মায়া লাগে দিদির উপর।কি করবো?মায়ের পেটের বোন তো! মায়ের কাছ থেকে আসার সময় বলে আসিনি দিদির এখানে আসবো।আত্নীয়-স্বজনও জানে আমি দিদির সাথে যোগাযোগ রাখিনা।উপড়ের দিকে 'থু থু' ছিটালে যে নিজের গায়ে পড়ে।আমি বললাম,থাকতে পারি এক শর্তে। তুই আমার আর মায়ের সাথে ইন্ডিয়া চল।গঙ্গা স্নান সেরে পাপ মোচন করে আসবি।দিদি আমার হাতটা ছেড়ে দিলো।বাবার মতো প্রত্যেকটা কথায় তুই ধর্ম কেনো টেনে আনিস পূজা?পড়শু আসার পর থেকে একবারও আমাকে দেখেছিস নামাজ পড়তে বল? ঠাকুর-দেবতার নাম নিতেও তো দেখেনি।সত্যি করে বলতো দিদি,তুই আর দুলাভাই কি নাস্তিক হয়ে গেছিস?
না,তোর দুলাভাই ঠিকি মুসলিম আছে।আমি কি হয়ে গেছি নিজেও জানিনা।জিহান কখনে ধর্ম নিয়ে জোড় করেনা তবে আমি মাঝে মাঝে ইশ্বর এর কাছে মাফ চেয়ে নেই।তোর কথার মাথা-মুন্ডু না আমি ঠিক বুঝিনা।শোন দিদি,মা আর আমি সামনের মাসে ইন্ডিয়া চলে যাচ্ছি।কবে নাগাত তোর সাথে আবার দেখা হবে জানিনা।দিদি মন খারাপ করে বললো,মা একবার আসবেনা আমার সাথে দেখা করতে?এতো কিছুর পর কেউ কি আর আসে বল?আমি তো পড়েছি দোটানায়! না পারি মাকে ছাড়তে না পারি তোকে।মিথ্যা বলে তোর এখানে এসে দুদিন ধরে পরে আছি।তার উপর এখন জ্বরে পড়লাম।চলে গেলেই তো গেলি।আজকের দিনটা থাক।তোর পছন্দের সব খাবার রান্না করে খাওয়াই।দিদির সাথে রাগ করে থাকতে নেই।আমি আর কথা বাড়ালাম না।দিদি বের হতেই কোথা হতে জাহিদ বজ্জাদ আবার উদয় হলো।আমি মুখ গোমড়া করে খাটে বসে আছি।জাহিদ একটা চেয়ার টেনে আমার কাছে এগিয়ে বসতেই আমি চেঁচিয়ে উঠলাম।দেখুন, আপনি যদি আমাকে আবার বিরক্ত করেন ভালো হবেনা বলে দিচ্ছি।শুধু দিদির কথায় আজকের দিনটা এখানে আছি।কাল চলে যাবো।
জাহিদ বললো, আহা! আপনি এভাবে চেঁচাচ্ছেন কেনো বেয়াইন সাব?দেখুন।আমি কিন্তু আপনাকে বেশ পছন্দ করি।আপনার লাবণ্য দিদি আর আমার ভাইয়ের সম্পর্কটা ঠিক শারুখ খান আর গৌরির মতো।কোন ঝামেলা নেই।
লেকচার দিবেন না।লেকচার আমার পছন্দ না।দিদির মতো নরম মনের মেয়ে আমি নই।রেগে গেলে খুব খারাপ হবে।
আপনি কিন্তু শুধু শুধু রেগে যাচ্ছেন।আচ্ছা আপনার জ্বর কমেছে? যদি আবার গায়ে হাত দিন,হাত কেটে দিবো বলে দিচ্ছি।
জাহিদ হো হো করে হাসছে।আমি ভ্রু কুঁচকে আরেকদিক তাকিয়ে সেই হাসি শুনছি।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২১