আর কেউ এস এম এস কৈরেন না! টাইম শ্যাষ
আতিক আর আমি খুব ভালো বন্ধু। স্টেজে ও ছাড়া আর কেউ গীটারে থাকলে আমার খুব অস্বস্তি হয়। আমার কিছু প্রবলেম হয় স্টেজে, ওগুলি আতিক জানে, বোঝে। আমাদের বোঝাপড়াটা তাই অন্তরের। ওর সাথে একবার বেড়াতে গেলাম বগুড়ায়। উপশহর বাজারের পেছন দিকে অপরিনামদর্শিতার উদাহরণ হিসেবে কয়েকসারি দোকান দাড়িয়ে, সাটার বদ্ধ। কোন কাস্টোমার ওদিকে যায় না, ফলাফল ওগুলো গুদাম হিসেবেই ইউজ হয়। এরই মাঝে প্রতিদিন বিকেলে একটি দোকানের শাটার উঠে যায়। কয়েকটি তরুন মেতে ওঠে গীটার, কীবোর্ড, ড্রামসের সাথে সানতানা, ডিপ পার্পল, আর্টসেল, বাচ্চু কিংবা জেমসের সুর সন্ধানে।
মফস্বলের ব্যান্ডগুলোর কীবোর্ডিস্ট হয় সাধারনত: ব্যান্ডের অলংকার টাইপের। কেনো জানিনা, মফস্বলের মানুষের ধারণা, কীবোর্ড ছাড়া ব্যান্ড হয় না। তাই মফস্বল ব্যান্ডের বেশিরভাগ কীবোর্ডিস্ট হয় শুধু নোট ধরে বাজাতে পারে, এরকম। ঠিক ওখানেই প্রথম পরিচয় সোহাগ এর সাথে। অগ্রপথিক এর কীবোর্ডিস্ট। বয়সে ছোট, তারপর মফস্বলের কীবোর্ডিস্ট, খুব একটা পাত্তা দিলাম না। ও কিন্তু তার স্বভাবজাত সুন্দর ব্যবহারে ঠিকই আপন করে নিলো আমাকে। এর মাঝে প্র্যাকটিস সেশন শুরু হলো। অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের হুংকারের ভীড়ে ওর বাজানোর দিকে খুব একটা খেয়াল করিনাই। হঠাৎ একটা গান শেষ করেই সবাই ওকে বললো ওর নিজের কম্পোজিশনের গানটি কীবোর্ড লিডের গানটি গাইতে। ওর হাত কীবোর্ডের ওপর খেলা শুরু করতেই চমকে উঠলাম! আরে! এতো দারুণ বাজায়! মুগ্ধ হয়ে ওর বাজানো দেখলাম আর গানটি শুনলাম। ততক্ষণে টের পেলাম স্থানীয় ছেলেদের মাঝে ওর প্রচুর জনপ্রিয়তা, ছোটরা সোহাগ ভাই বলতে পাগল।
পরে তার স্টেজ পারফর্ম্যান্স দেখেছিলাম বগুড়া ব্যান্ড এসোশিয়েশনের একটি প্রতিযোগীতায়। ৫ টি ব্যান্ডের কীবোর্ডিস্টকে টপকে পেয়েছিলো সেরা কীবোর্ড বাজিয়ে হিসেবে পুরস্কার।
গতকাল শুনলাম চুপি চুপি নাকি সোহাগ Chanel i Nescafe Get set Rock এ রেজিস্ট্রেশন করেছিলো। হাজার হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে এখন সে টপ ৪ জনের একজন কীবোর্ডিস্ট! শুনে গর্বে বুকটা ভরে গেলো। সমগ্র উত্তরবঙ্গের হয়ে যুদ্ধ করছে এই অনুষ্ঠানে মফস্বল থেকে উঠে আসা এই বোগড়ার ছৈল, অস্ত্র তার কীবোর্ড! এতোদিন জানায় নাই, হঠাৎ জানলাম ওকে প্রতিযোগীতায় টিকিয়ে রাখতে হলে নাকি এস এম এস করতে হবে! এই এস এম এস কালচারকে খুব একটা ভালো চোখে না দেখলেও মনে হলো, ওর এই সংগ্রাম কে হেরে যেতে দেয়া যাবে না! আমার কয়েকটি এস এম এস হয়তো পারে এই ছেলেটার সারা জীবনের সঙ্গীত সাধনাকে কয়েক পা এগিয়ে দিতে। ওকে প্রতিষ্ঠিত করতে, ওর সাধনার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন একটি জীবন দিতে।
সময় বেশী নেই, আজ সন্ধা সাতটার মাঝে ওকে প্রতিযোগীতায় রাখতে হলে SOHAG লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে 6969 নাম্বারে। যেকোন নাম্বার থেকে, যতখুশী ততো!
আশাকরি সোহাগ জিতে আসবে ওর যুদ্ধ। হয়তো নতুন কোন কোলাভেরী গানকে উটপাখির ডিম করতে আমার পাশে থেকে আপনাদের শোনাবে ওর কীবোর্ড নিসৃত সুর!
আসুন ওর একটা পারফরম্যন্স দেখি-

(বেটা মদন একটা ভালো ছবিও তুলতে পারেনাই!

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:২৭