কোথাও যাবার ইচ্ছে ছিল না। শেষমেষ ভাবলাম আমাদের পাঠশালায় যাই। হেলতেদুলতে গিয়ে যখন পৌঁছুলাম তখন র্যালী শুরু হয়ে গেছে, মানে দশটা বেজে দশ। হেডমাস্টার রুবেলের বন্ধু, স্বজন, রাজনৈতিক সহকর্মীরা নববর্ষের প্রধান আকর্ষন হিসাবে এটাকে বেছে নিতে শুরু করেছে সম্ভবত।
ফেস্টুন, ব্যানার আর বাচ্চাদের পোষাকে বর্ণীল রঙের ছটা। দরিদ্রঘরের বাচ্চাদের দেখে বোঝার উপায় নাই। চোখে মুখে উপচে পড়া উচ্ছ্বাস, উৎসাহী দর্শক ও পথচারীদেরও ছুঁয়ে যায়।
র্যালী শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেজন্য তৈরী হয়েছে মঞ্চ। বাচ্চারা অভিনয় করলো, গান গাইলো। খোলা আকাশকে ঢেকে একটা সামিয়ানা, তার ভেতরে শিশুদের কলকাকলী, মুখরিত আহবান, আমরা করবো জয়।
ফিরোজের সাথে অনেকক্ষণ কথা হলো। স্কুলের যাবতীয় ব্যায় পাবলিক ডোনেশনের উপরে নির্ভরশীল। মাসে প্রায় ৮০/৮৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। গান, নাচ, ছবি আঁকার জন্য আলাদা ক্লাস, যতটুকু সম্ভব এই ক্ষুদ্র রিসোর্সের মধ্যে করা সম্ভব। পুরো অনুষ্ঠানের আয়োজন, ব্যাপ্তি, পরিকল্পনা দেখে আন্দাজ করা যায় স্কুলের কারিকুলাম। মাত্র গুটিকতেক মানুষ যদি এত সুন্দর একটা স্কুলের মডেল তৈরী করতে পারে তবে সরকারী স্কুলগুলা এত হতদরিদ্র কেন হয় বুঝতে পারি না। শিশুদের জন্য এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে যে পুরা আয়োজন কেবল তাদের উদ্দেশ্যে ডিজাইনকৃত। আমাদের পাঠশালার মত যদি এদেশের প্রতিটা সরকারী প্রাইমারী স্কুল বাচ্চাদের দিকে নজর দিত!
সবশেষে ছিল বরাবরের মতই অরুপ রাহীর গান। এই অসামান্য উদ্যোগটিকে সামনে এগিয়ে নেবার জন্য রুবেল সবার কাছে সহযোগিতা কামনা করেছে। ফান্ডিং থেকে শুরু করে বই, পরামর্শ সবই প্রয়োজন। যোগাযোগ করতে পারেন এই ওয়েবে প্রদত্ত ঠিকানায়।