আমরা ক্ষমতা গ্রহণ করার সময় সর্ব প্রথম অভিনন্দন জানিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী
২০১২ সাল বিদায় নিয়েছে। খুন, গুম, হত্যা ও মূল্যস্ফীতি ছাড়া সরকার আর কিছুই উপহার দিতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, জনগণের ডাকে সারা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলাম। আমার হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া হয়েছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আমাকে সর্বপ্রথম অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। এখন আমরা খারাপ হয়ে গেছি। জাতীয় পার্টি আগামীতে এককভাবে ক্ষমতায় যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিজয়নগর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে ২৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে র্যালি পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, ‘‘আমরা ছোট দল নই, আমরা বড় ছিলাম আবার বড় দল হয়েছি। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এককভাবে করবোই, করবোই করবো। অন্য কোনো দলের সঙ্গে যাব না। আমাদের আদর্শ বিসর্জন দেবো না। জাতীয় পার্টির ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ক্ষমতায় থেকে পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
দুই নেত্রীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘দেশের জনগণ দুই প্রধান দলের ওপর থেকে আস্থা হারিয়েছে। এই দুই দল ও দুই নেত্রীই দেশকে ভাগ করেছে। আমরা সংগঠিত, আমরা ঐক্যবদ্ধ, আমরা শক্তিশালী, তাই আমাদের পাশে দাঁড়ান, নতুন দেশ উপহার দেব।
সেনাবাহিনীতে থাকার কথা স্মরণ করিয়ে সবার উদ্দেশে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, তখনকার পরিস্থিতিতে আমার স্থলে অন্য যে থাকতো তাকেই ক্ষমতা গ্রহণ করতে হতো। আমি জোর করে ক্ষমতা নিইনি। দেশ ও জনগণের কথা ভেবে আমি সরকারে এসেছিলাম। এরপরে আমি ব্যারাকে ফিরে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে যেতে দেয়া হয়নি। তারপরে ৮৬ সালে আমি জাতীয় পার্টি গঠন করি।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় আমাকে ক্ষমতায় থাকতে হয়েছে। নিজের জীবনবাজি রেখে '৯০ সালে গণতন্ত্র ও সংবিধানকে রক্ষা করে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছি। আমার সরকারের বিরুদ্ধে অন্তত রাজ কর্মচারীরা রাজপথে নামেনি। জনগণ জাতীয় পাটির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেনি। আন্দোলন করেছে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল।
এরশাদ বলেন, ‘‘আমরা হত্যা, রক্তপাত বিশ্বাস করি না। আপনারা নূর হোসেন চত্বর করেছেন, ডা. মিলন চত্বর করেছেন। কিন্তু কানসাটে নিহত কৃষকদের জন্য কোনো চত্বর হয়েছে কি? কিংবা সাগর-রুনির নামে কি কোনো চত্বর হয়েছে। নূর হোসেন চত্বর আর ডা. মিলন চত্বর হলে কৃষক চত্বর আর সাগর-রুনি চত্বরও হতে হবে।’’
দেশের দ্বিতীয় সামরিক শাসক এরশাদের সামরিক শাসনের অবসানে রাজনৈতিক ও ছাত্র আন্দোলনে আইন-শৃক্মখলা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন জাফর, জয়নাল, দীপালি সাহা, নূর হোসেন, নাজিরউদ্দিন জেহাদসহ অনেকে। এছাড়াও এরশাদের মদদপুষ্ট বাহিনীর হামলায় নিহতের তালিকাও দীর্ঘ। এর মধ্যে রয়েছেন ডা. শামসুল আলম মিলন, আওয়ামী লীগ নেতা ময়েজউদ্দিনও।