একটু আগে টিভিতে খবরে দেখাল ৪৫ জনের মৃতদেহ দরবার হলের পাশের একটি গণকবর থেকে তোলা হয়েছে। ভেতরে আরো লাশ আছে। সাবধানে তোলা হচ্ছে তাদের গর্ত থেকে যেন লাশের কোন অংশ বিচ্ছিন্ন না হয়ে যায়। সেখানে বিডিআর মহাপরিচালক জেনারেল শাকিল আহমেদ এর লাশ সহ আরো অনেকের লাশ পাওয়া গিয়েছে। দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল। এই ঘটনা শুরু হওয়ার পর থেকে অনেকের বিডিআর এর প্রতি সিমপ্যাথি থাকলেও আমার মনে হয় খুব কম সংখ্যকই এখন আছেন যারা বিডিআর এর এই কর্মকান্ডকে সমর্থন করছেন। মানলাম তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। তাই বলে এইভাবে। মানলাম তারা দূর্নীতিগ্রস্ত। তাই বলে এতটা নৃশংসভাবে। আমআর প্রথম থেকেই বিডিআরদের প্রতি একটা সিমপ্যাথি ছিল। কিন্তু এতগুলা লাশ দেখে আমি আর তাদের সমর্থন করতে পারছি না। এদের সবাই কি দোষী ছিল? আর তারা না হয় দোষী ছিল কিন্তু বিডিআর কি তাদের শাস্তি দেয়ার যোগ্যতা রাখে। যেখানে তারা নিজেরা লুটতরাজ করেছে। মানুষ কে হত্যা করেছেন । নির্বিচারে মানুষ হত্যা কি অপরাধ নয়। তারা নিজেরা কি দুর্নীতিগ্রস্ত নন। তারা নিজেরা কি ভাল মানুষ? তারা নিজেরা দূর্নীতিগ্রস্ত হয়ে কিভাবে আরেকজনের বিচারের অধিকার রাখেন।
আমার মনে হয় না কেউ এই হত্যাকান্ডের পক্ষে। আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, শেখ মুজিবের হত্যাকান্ড দেখিনি, মেজর জিয়ার হত্যাকান্ডও দেখিনি। আমার জন্মের পর বাংলাদেশে দেখা সবচেয়ে নৃশংস হত্যাকান্ড আজ প্রত্যক্ষ করলাম। আজ বিডিআর সদস্যরা আমাকে দেখালেন মুক্তযুদ্ধের সময় কিভাবে সবাইকে গণকবর দেয়া হয়েছিল। কিভাবে লুটতরাজ চালানো হয়েছিল। কিন্তু আফসোস আজ আমাকে এই দৃশ্য দেখতে হল নিজেদের দেশের সীমান্ত রক্ষাকারীদের কাছ থেকে। এই হত্যাকান্ড কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। ধিক্কার জানাই তাদের সকলকে। আপনারা পাকিস্তানি সেনাদের চেয়ে কম কিছু করেন নি। ১৩৮ জনকে মেরে ফেলা মুখের কথা নয়। তারপর তাদেরকে একজায়গায় গণকবর দেয়া। এইরকম আচরণ দেশবাসী আপনাদের কাছ থেকে আশা করে না। এদের সবাই দূর্নীতিগ্রস্ত ছিল না। যারা নিরপরাধ ছিল তাদের কে কেন মেরে ফেলা হল।
আমার মনে হয় না সব বিডিআর এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ছিল। যারা জড়িত ছিল তাদের বের করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আর সামনে যারা বিডিআর এর ক্ষমতায় যাবেন তাদের কাছে অনুরোধ করব এমন কিছু করবেন না যাতে দেশবাসীকে পুনরায় আরেকটি গণহত্যা দেখতে হয়।
সকল মৃত আর্মী অফিসারদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।