এমপি মানুষ, চলতেন দাপটে । তার পত্রিকার ওই মিষ্টি হাসির ছবি ছিল ক্যামেরার জন্যই ।
এইচএসসি পাশ করে একটা জীবন বীমার কোম্পানী তে চাকুরী করতেন । বীমা কোম্পানী তে তিনি মাঠ কর্মী ছিলেন। পরে চাকুরী করা অবস্থার শুরু তে একটা ট্রাক কিনে ট্রাক ব্যাবসার শুরুয়াত করেন । এই ট্রাক দিয়ে তিনি তার শ্যালক লুৎফর রহমানের ইটভাটায় মালামাল দেয়া আসা করতেন। লুৎফর রহমান এখন শ্যামপুর ইউনিয়নের চ্যায়ারম্যান এবং আওয়ামীলীগ সভাপতি।
তখন কে ভেবেছিল এই লোক ডেমরা, সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনালের মাথা হয়ে দাড়াবেন একদিন ?
একটা ট্রাকের মালিক ধীরে ধীরে অঢেল ধন সম্পদ গড়তে থাকেন । ট্রাক ব্যাবসার আড়ালে চলতে থাকে তার নিয়ন্ত্রনে থাকা ছেলে পেলে দের বাস টার্মিনালে চাদাবাজী । ইতিমধ্যে তিনি শ্রমিক দল এবং জাতীয়তাবাদী মালিক সমিতির সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন। ধীরে ধীরে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে থাকেন মূল ধারা রাজনীতির সাথে । ফলাফল স্বরূপ টিকেক পান ৯১ এ এবং বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন । ২০০১ সালেও তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন ।
এত দিনে তৈরী হয় তার বিশাল ক্যাডার বাহিনী । জুরাইনের মাজার রোডে সিএনজি ফিলিং স্টেশন দেন । বলা হয় মাজার শরীফের জমি দখল করে তিনি এই কাজ টা করেছেন।
সায়দাবাদ যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনাল থেকে কোটি কোটি টাকা চাদাবাজী করে বিশাল সম্পদের মালিক হন । একই সাথে ৩৫ টা স্কুলের পরিচালনা কমিটির প্রধান হন। দৈনিক দেশ জনতা পত্রিকার সার্কুলেশন গ্রহন করেন, যা তার ঢাল হিসেবেই মূলত ব্যাবহার কর হয় ।শ্যালক আওয়ামীলীগের নেতা হবার সুবাদে তাকে প্রায় নির্বঘ্নেই সকল কাজকর্ম সারতে হয় । অনুকূল আবহাওয়া তে চলতে থাকে তার টেন্ডার পাওয়া, বিঘায় বিঘায় জমি দখল আর চাদাবাজী । সূর্যের চেয়ে বালু গরম, সেই হিসেবে তার তিনি ছেলেও এগিয়েই ছিল । তানভির আহমেদ , শাহরিয়ার আহমেদ কে জুরাইন শ্যামপুর এলাকায় চেনে না এমন লোক খুব কম । তাদের নিজস্ব ছেলে পেলের বিশাল দল আছে । তাদের নামে আছে কোটি টাকার সম্পত্তি গড়া ।
সক্রিয় ক্যাডার বাহিনী
দৌড় সালাউদ্দিনের সন্ত্রাসী ও ক্যাডার সদস্যরা এখনো এলাকায় সক্রিয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করে অনেকে থেকে গেছে বহাল তবিয়তে।
সাইফুল ইসলাম সিজার দৌড় সালাউদ্দিনের শীর্ষ ক্যাডারদের একজন। যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, শ্যামপুর থানা এলাকার অপরাধ জগতের এক ক্ষমতাবান ব্যক্তি। বনানীর ন্যাম ফ্ল্যাটে আলোচিত আমেরিকা প্রবাসী ফারুক আহমেদ ভূইয়া ও গৃহপরিচারিকা সুমী হত্যা মামলার আসামি। স্থানীয় শ্যামপুর থানায় হত্যাসহ দুটি এবং যাত্রাবাড়ী থানায় রয়েছে একাধিক চাঁদাবাজির মামলা। ডিবি পুলিশের খাতায় সিজার একজন ঠাণ্ডা মাথার সন্ত্রাসী। সে ইতোমধ্যে অবৈধভাবে প্রচুর অর্থ সম্পদের অধিকারী হয়েছেন। অবশ্য ১/১১-এর পর কিছুদিন তাকে এলাকায় দেখা যায়নি প্রকাশ্যে।
জানা গেছে, বিগত জোট আমলে দৌড় সালাউদ্দিনের প্রশ্রয়ে কোটি কোটি টাকার জমি দখল করেছে সিজার। এলাকায় সিজার এবং তার বাবা নজরুল ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। সিজার এখন স্থানীয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার এক ছেলের সঙ্গে আপোস করে পুরনো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মনিরুজ্জামানের সঙ্গে সন্ত্রাসী সিজারের সুসম্পর্কের বিষয়টি এলাকায় ওপেন সিক্রেট।
স্থানীয় গোলাম আলী ইমাম ভূইয়া নামক সাবেক এক ব্যাংকার সিজারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করে উল্টো বিপদে পড়েছেন। যাত্রাবাড়ী থানার মামলা নং- ১০৫, তারিখ ২৩ জুন ২০০৯, এজাহার সূত্রে জানা গেছে : শনিরআখড়া এলাকার সোনালী ব্যাংকের সাবেক জিএম গোলাম আলীর কাছে সিজার আট লাখ টাকা চাঁদা চায়। এক লাখ টাকা চাঁদা দেয়া হয়। কিন্তু বাকি টাকার জন্য তার বাড়িতে হামলা করেছে। থানায় অভিযোগ করলে সিজার ক্ষেপে যায়। পরিবার-পরিজন নিয়ে গোলাম আলী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ওসি মনিরুজ্জামান সাপ্তাহিককে বলেন, ‘সিজারের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। স্থানীয় গোলাম আলীর সঙ্গে সিজারের একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। আদালতের নির্দেশে বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থিতাবস্থা বজায় রেখেছে পুলিশ প্রশাসন। তবে সিজার একজন পেশাদার সন্ত্রাসী তা সাপ্তাহিক-এর কাছে শিকার করেন ওসি মনিরুজ্জামান।’
দৌড় সালাউদ্দিনের বডিগার্ড হিসেবে পরিচিত আতাউর রহমান লিটু পেশাদার খুনি। শ্রমিক নেতা গাজী লিয়াকত হত্যা মামলা ছাড়াও সাতটি হত্যা মামলার আসামি। লিয়াকত হত্যা মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজাও হয়েছিল। কিন্তু জোট আমলে দৌড় সালাউদ্দিনের তদ্বিরে অল্প দিনেই বের হয়ে এসেছে। ১/১১-এর পর কিছু দিন আত্মগোপনে ছিল। বর্তমানে এলাকায় প্রকাশ্যে দেখা যায়। ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল মোল্লার ছত্রছায়ায় মীরহাজারীবাগে নিরাপদে রয়েছে সে। জানা গেছে, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে খায়রুল মোল্লা প্রার্থী হচ্ছেন। তার পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পুলিশের ঝামেলা থেকে নিরাপদে লিটু।
দৌড় সালাউদ্দিনের বিশ্বস্ত ক্যাডার আলমগীর ওরফে চিটার আলমগীর। এলাকায় তাকে দেখা না গেলে বিএনপির নয়াপল্টন ও গুলশানের কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত। ডজনখানেক মামলার আসামি চিটার আলমগীর যাত্রাবাড়ী থানা যুবদলের সভাপতিও। জোট আমলে যাত্রাবাড়ীতে মালিক হয়েছেন পাঁচতলা করে চারটি বাড়ির। গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত আলমগীর। বর্তমানে সালাউদ্দিনের রাজনৈতিক কার্যক্রম চলছে তার দ্বারাই।
দনিয়ার আলোচিত সন্ত্রাসী জুম্মন মেম্বার ওরফে কানা জুম্মন এলাকায় রয়ে গেছেন প্রকাশ্যে। দ্রুত বিচার আইনের মামলার চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি কানা জুম্মনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ডজনখানেক। স্থানীয় আওয়ামী লীগের ক্যাডার ওসমানের কাছে এসে বহাল তবিয়তে কানা জুম্মন।
ডেমরা থানার কামারগোপ এলাকার রফিকুল ইসলাম। দৌড় সালাউদ্দিনের নিকটজন। বিএনপির ক্যাডারদের কাছে বড় ভাই হিসেবে পরিচিত। মূল কাজ অস্ত্র কেনাবেচা। ১/১১-এর পর গ্রেফতার হলেও বর্তমানে জামিনে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের অস্ত্রের যোগান দিচ্ছে সে। ডেমরা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী রূপগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে তার অস্ত্র ভাড়ায় চলছে। আমানউল্লাহ নামে জনৈক আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যস্থতায় এমপির ছেলে মনিরের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে রফিকুলের।
হযরত হাজী জোট আমলে ডেমরা-সারুলিয়ার আরেক সন্ত্রাসী। জোড়া খুনসহ ডজনখানেক মামলা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে। দৌড় সালাউদ্দিন ও হযরত একই মামলার আসামি হয়েছেন। কিন্তু জোট আমলে কোনো মামলায় বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি। এর আগে ক্ষমতার প্রভাবে মামলা খতম করে ফেলেছে সালাউদ্দিন। এখন হযরত হাজী আওয়ামী লীগের মদদে তার বাহিনী নিয়ে এলাকায় বহাল তবিয়তে আছে। আর এই সন্ত্রাসী বাহিনী দেখভাল করছে জামায়াতের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ওমর ফারুক। ’
ক্ষমতার দাপটে থাকা সাংসদ ভাবেন নি কোন দিন জনগনের দৌড়ানি খেয়ে হয়তো পালাতে হবে ।
২০০৩ সালের কথা । পেপার পত্রিকায় ৬ দিন বললেও পানি গ্যাস বিদ্যুৎ এর জ্বালাতন মাসের পর মাসই চলেছে । কঠিন বিএনপি করা চায়ের দোকানদার ও সেইদিন দোকান বন্ধ করে রাস্তা বন্ধ করে ক্ষোভে ফুসছিলেন ।
তার ভিতর সালাউদ্দিন আহমেদ ধমকাধমকি শুরু করেন পোলাপান নিয়ে । তবে তিনি বলেন, এলাকাবাসী দের শান্ত করতে তিনি গিয়েছিলেন ।
পাবলিক তারে ঠিকই ধরছিলো, কোন মতে হাত ছুটাইয়া তিনি দৌড় দেন ।
২০১০ সালে বিএনপি থেকে তিনি বহিস্কৃত হন । হাই কমান্ডের নির্দেশ অমান্য করার কারনে তার সকল সদস্যপদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হয় ।
বহিষ্কার যেভাবে
দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশ না মানায় গত ২৮ জানুয়ারি রাতে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। জানা গেছে, ২৭ জানুয়ারি মেয়র সাদেক হোসেন খোকা সমাবেশ ডাকেন মুক্তাঙ্গনে। একইদিন মহানগরীর থানায় থানায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দেয় দৌড় সালাউদ্দিন ও মিরপুরের সাবেক এমপি এস এ খালেক। খোকার সমাবেশকে ভণ্ডুল করতে পাল্টা কর্মসূচি দেন এই দুই নেতা। এতে ক্ষুব্ধ হন খালেদা জিয়া। এ্যাডভোকেট শিমুল বিশ্বাস ও সানাউল্লাহর মাধ্যমে সালাউদ্দিনের কাছে বার্তা পাঠান কর্মসূচি স্থগিত করতে। কিন্তু নির্দেশ মানেননি সালাউদ্দিন। ফলে তাকে বহিষ্কারের চিঠি পাঠান দলের দপ্তর সম্পাদক রিজভী আহমেদ। তার মদদদাতা হিসেবে পরিচিত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর রায়ও হয়েছেন দলের মধ্যে কোণঠাসা।
ঢাকা মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় সম্পাদক সালাউদ্দিন দলীয় গ্রুপিংয়ে মির্জা আব্বাসের সহচর। আব্বাস ও খোকার দ্বন্দ্বে আব্বাসের পক্ষে রাজনৈতিক মাঠ গরম রাখেন দৌড় সালাউদ্দিন। মহানগর সভাপতি পদে প্রার্থী হতে মির্জা আব্বাস ছিটকে পড়লে খোকার বিরুদ্ধে মাঠে নামান দৌড় সালাউদ্দিনকে। তাকে মহানগর সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণাও করা হয়েছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার নির্দেশে ২৮ জানুয়ারি বহিষ্কার করা হয় তাকে।
তবে ৩০ জানুয়ারি বিকালে দৌড় সালাউদ্দিনের ক্যাডার যুবদল নেতা চিটার আলমগীরের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী বহিষ্কারের প্রত্যাহার চেয়ে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ের সামনে মিছিল করেছে। মিছিলে অবশ্য আব্বাস গ্রুপের কোনো নেতাকর্মীকেই দেখা যায়নি। আর দলের মহানগর কাউন্সিল হওয়ার আগে তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের কোনো সম্ভাবনা নেই
তবে আপনি যখন দলের টাকা বানানোর যন্ত্রে পরিনত হবেন, তখন আপনাকে দল থেকে বেশী দূরে থাকতে হবে না ।
তাকেও দল টেনে নেয় আবার । কলকব্জা নাড়েন, তার বহিস্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়, নেত্রীর সাথে দেখা করেন এবং শুভেচ্ছা জানান ফুল দিয়ে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর সময় তাকে গ্রেফতার করা হয় । শুরু তে পলাতক এবং পরে ধরা দেয়া এই নেতার (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর ১১ ফেব্রুয়ারি দায়ের করা অভিযোগগুলোর মধ্যে প্রথম অভিযোগে রয়েছে ৭টি অংশ৷ এগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্যামপুর-ডেমরা এলাকার ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি হিসেবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ আত্মসাত্৷ এছাড়া ধনিয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজ থেকে তার ব্যক্তিগত সহকারী রফিক ও শিক্ষক একরামুল হক লিটনের নেতৃত্বে কর্মচারী ও ছাত্র ভর্তির নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত্৷ যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুলের পাশে ভবন নির্মাণের নাম করে স্কুল ফান্ডের ৩০ লাখ টাকা দিয়ে ১৪/৫ উত্তর-পশ্চিম যাত্রাবাড়ীতে বাড়ি নির্মাণ৷ ধনিয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজের ফান্ড থেকে ১৮ লাখ টাকা নিয়ে কালো রঙের ২টি ভিসতা গাড়ি ক্রয়৷ এর একটি ব্যবহার করে তার ছেলে রাসেল৷ গাড়ির নম্বর ঢাকা-১৪-৭৩০৬৷ এছাড়া স্কুলের পাশে থাকা সরকারি খাসজমি স্কুলের টাকায় কিনে পরে তা বিক্রি করেন সালাউদ্দিন৷ জমি বিক্রির কয়েক কোটি টাকা স্কুল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম ভুঁইয়াসহ ভাগাভাগি করে নেন৷ এ ছাড়া শহীদ জিয়া স্কুলের সাইনবোর্ড এবং বিলবোর্ডের নামে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাত্ এবং এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত সাহায্য আত্মসাত্ করে ২০ কোটি টাকা আয়৷
এছাড়া নিজ মালিকানায় প্রকাশিত ‘দেশ জনতা’ পত্রিকার নামে সরকারি বরাদ্দকৃত কাগজ কালোবাজারে বিক্রি করে ১০ বছরে ২ কোটি টাকা আত্মসাত্ করেন সালাউদ্দিন৷ আরো রয়েছে শ্যামপুর ওয়াসার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের পানিতে অবৈধভাবে মাছ চাষ করে ২ কোটি টাকা আয়, মাতুয়াইল শিশু মাতৃসদন হাসপাতালের টেন্ডার ২০% কমিশনের মাধ্যমে অনুগত লোকদের দেওয়া এবং অবৈধভাবে ২০ কোটি টাকা আত্মসাত্, ডিএনডি বাঁধ সংস্কারের নামে ১০ কোটি টাকা আত্মসাত্, নির্বাচনী এলাকায় ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে সমজিদ-মন্দিরের নামে বরাদ্দ দেওয়া অর্থ গায়েব, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে এলাকাবাসীর জন্য বরাদ্দ আনুমানিক ১৫ কোটি টাকা আত্মসাত্, ঢাকা-৪ আসনের বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বরদের অধীনে এলাকার উন্নয়নের জন্য চাল, গম ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে নেওয়া, কাবিখা ও এনজিওর টাকা, মাতুয়াইল-ধামড়িপাড়া রাসত্মা উন্নয়নের ৩১ লাখ টাকা, কবরস্থান ভরাটের ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ৷ সরকারি টাকা আত্মসাতের পাশাপাশি চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে৷ নির্বাচনী এলাকার ছোট-বড়ো প্রায় ৫০০ শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ বছরে ৩০ কোটি টাকা এবং পাগলার মুন্সিখোলা ও শ্যামপুরের বিভিন্ন ইটভাটা, বালি-সিমেন্ট ও রডের গদিসহ সেনাকল্যাণ ঘাট বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জমা পড়েছে দুদকে৷ বাংলাদেশ কোঅপারেটিভ ইনসু্যরেন্সসহ আরো কয়েকটি ইনসু্যরেন্স কোম্পানি থেকে দুনর্ীতির মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা আত্মসাত্, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যনত্ম সংসদে আধিপত্য বিসত্মারের মাধ্যমে ৪০ কোটি টাকা আত্মসাত্ এবং মোহাম্মদি হাউজিং লিমিটেড কোম্পানিসহ বহু নিরীহ মানুষের জায়গা দখল৷ এ ছাড়াও রয়েছে হাউজিং কোম্পানির পক্ষে জায়গা দখল করে দিয়ে বিগত ৫ বছরে ১০ কোটি টাকা আয়ের অভিযোগ৷ রয়েছে কুখ্যাত খুনি, সন্ত্রাসী, চোরাচালানকারী ও মাদক ব্যবসায়ীদের পালন এবং তাদের থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ৷ সারুলিয়া গরুর হাট থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা, সালাউদ্দিনের ছেলে রাসেলের ঢাকা জেলা পরিষদ থেকে টেন্ডারবাজির মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা আয়৷ এছাড়াও রয়েছে ধনিয়া এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুম্মনসহ অপরাধীদের আশ্রয়ের মাধ্যমে অর্থ আদায়ের অভিযোগ৷ ডেমরা-শ্যামপুর এলাকায় ভূমিগ্রাসী হিসেবে সালাউদ্দিন ব্যাপকভাবে কুখ্যাত৷ তার পছন্দের জমি যে কোনো উপায়ে দখল করেছেন তিনি৷ অনুগত ক্যাডারদের দিয়ে সালাউদ্দিন এলাকায় দখলের রাজত্ব কায়েম করেন৷ থাকতে চেয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে৷ যে-ই প্রতিবাদ করেছে তাকেই শিকার হতে হয়েছে সালাউদ্দিনের পৈশাচিকতার৷ দেওয়া হয়েছে হত্যার হুমকি৷ বিভিন্নভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে মামলায়৷ গত বছরের ৫মে এলাকাবাসী তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ধাওয়া দেয়৷ এর পর থেকে ধস নামে তার রাজত্বে৷ ফাঁস হয়ে যায় সালাউদ্দিনের নানা কুকীর্তির কথা৷ প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে নির্যাতিত এলাকাবাসী৷ দুদকে দায়েরকৃত অভিযোগে সালাউদ্দিনের সন্ত্রাস, ভূমিগ্রাস ও অবৈধ আয়ের চিত্র ফুটে ওঠে ।
এই নেতার স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির বিবরন মাথা নষ্ট করে দেবে ।
রাজধানীর ৭৪, মতিঝিলে দেশ জনতা পত্রিকার নামে জমি দখল, কাজলায় জমি দখল করে এস আহম্মেদ ফাউন্ডেশন নির্মাণ (জমিটির দাগ নম্বর- ৩২৩-৩২৪), গুলশান ১-এর ১৬/এ নম্বর রোডের ১/এ নম্বর ২২ তলা বাড়ি (যা ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়), মাতুয়াইলের বড়ো কাটারায় ২০৫৮ নং দাগের ২০ কাঠা জমি জোরপূর্বক নামমাত্র মূল্যে দখল, শনির আখড়ায় ৪০৭ নম্বর দাগের ৫ কাঠা জমি অবৈধ ক্রয়ের মাধ্যমে মার্কেট নির্মাণ, জুরাইনে মাজার দখল করে পাম্প নির্মাণ, বুড়িগঙ্গার পাড়ে খাসজমিতে নিজের বাড়ি তৈরি, পাগলার মুন্সিখোলায় ২টি সিএনজি স্টেশন স্থাপন, জুরাইনের ঋষিপাড়ায় মন্দিরের জায়গা দখল, যাত্রাবাড়ীর টামপাড়ায় ১ বিঘা জমি দখল, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে উড সাইড কুইন্স স্ট্রিটে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বিতল ভবন নির্মাণ, মদিনায় বাদশাহ কিং আবদুল আজিজ বিন ফাহাদ-এ ১০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়ি ক্রয়৷ এ ছাড়া বিগত ১০ বছরে সালাউদ্দিন বিদেশে প্রায় ১৭০ কোটি টাকার এবং বেনামে আরো প্রায় ১৩০ কোটি টাকার সম্পত্তি কিনেছেন বলে জানা যায়
তবুও অপেক্ষায় আছি, কবে তিনি আবার এলাকায় আসবেন ভোট চাইতে । বোধহয় আবার জনগন তাকে ভোট দেবে একটু ভাল থাকার জন্য । বলা যায় না, আবারও খেতে পারেন সেই বিখ্যাত ধাওয়া ।
বি:দ্র: তিনি এর পর থেকে নাকি সভা সম্মেলনে কেডস পড়ে যান
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১২ দুপুর ১২:৩০