ঘাম নয় শ্রমিকের রক্তে চলে এই সার কারখানা। শ্রমিকদের শ্রমে, ঘামে, রক্তে কারখানাতো দারাতে পারেইনি অন্যদিকে শ্রমিকরাও দাঁড়াতে পারেনি।
যেখানে নিজের দেশের উৎপাদিত সার দিয়েই দেশের সারের ঘাটতি পুরন করে দেশের বাইরে সার রপ্তানি করা সম্ভব, সেখানে নিজের দেশের উৎপাদন বন্ধ রেখে দেশের বাইরে থেকে সার কিনে এনে চলছে রমরমা সাররের বাণিজ্য। এভাবে কারখানা বন্ধ রেখে বাণিজ্যদেবতারা বানিজ্য চালিয়ে গেলে অচিরেই পুরো কারখানা অকেজো হয়ে যাবে।
বহু মানুষের কর্মসংস্থান এই কারখানাকে ঘিরে। শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তা প্রায় সবাই দিনে এনে দিনে খাওয়ার মত অবস্থা। মাস গেলে যে বেতন পায় তা সংসার আর ছেলে মেয়ের লিখা পড়ার পেছনেই সব শেষ হয়ে যায়।
তাই এই মধ্যবিত্তরা না পারেন ব্যাবসা করতে না পারে বাণিজ্য করতে। এক রকমের বাধ্য হয়েই চাকুরী করে জীবনটাকে কাটিয়ে দিতে হয় এই মধ্যবিত্তদের। এরা না গরীব না ধনী। এই শ্রেণীর লোকগুলো পৃথিবীতে আসেই সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার জন্য !
আমি দেখেছি এই কারখানার মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ স্বপ্ন দেখে না বা স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়! কারন স্বপ্ন ভাঙ্গার কষ্ট খুবই মারাত্মক। ইচ্ছা থাকলেই কোন কিছু করা যায়না। সবাইকে সবাইকে প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে হয় চিন্তা ভাবনা করে! আপনি চাইলেও আর দশ জনের মত জীবনটা কাটাতে পারবেন না । কারন ছোটবেলা থেকেই আপনার নিয়তি ঠিক করা থাকে, পড়ালেখা করে আপনার কিছু করতে হবে ! আপনার সংসারের হাল ধরতে হবে ।
এই কারখানার মধ্যবিত্ত একটা বাবা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অসহায়, মধ্যবিত্ত একটা বাঙালি বধু পৃথিবীর সবচেয়ে অসুখী নারী! মধ্যবিত্ত প্রতিটা মানুষ পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী নিগৃহীত!
আমি এই মধ্যবিত্ত জীবনটাকে খুব ভালবাসি ।কারণ আপনি সংগ্রাম করতে পারবেন ,সংগ্রামের মধ্যে আসল জীবনটা চিনতে পারবেন। কখনো চরম হতাশ হবেন আবার কখনো অল্পতেই খুশি হবেন ! মধ্যবিত্ত জীবন, আহা! কী শান্তি, আহা! কী পবিত্র।
এখানে প্রতিটি পরিশ্রমের ঘামের ফোটা খুবই পবিত্র। এই জীবনে আছে না পাওয়ার বেদনা, আছে মিষ্টি একটু ভালবাসা ,আছে হাসি কান্না, আর আছে সবগুলো মানুষের একটা স্বপ্ন একটাই চাওয়া, নিশ্চত জীবন !
আর কয়েক মাস এই সার কারখানা এভাবে বন্ধ থাকলে এই নিশ্চিত জীবনের স্বপ্ন দেখাটাও হয়তবা দুঃসাহস হয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১৮ রাত ১০:০৯