আপনাদের সমাজে আমার খুব এলার্জি হয়ে গেছে। দিনরাত আমার চামড়া চুলকাচ্ছে খুব। মাঝে মাঝে আমার ইচ্ছে হয়, চামড়াটা কেটে আপনাদের সমাজের গাঁয়ে পড়িয়ে দেই।
এই সমাজে আপনারা প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়েদের প্রেম ভালবাসা নিষিদ্ধ করেছেন। আপনাদের প্রথাগত নিয়মে তা পাপ। আমি সেই পাপের পাপী। আমি ভেঙেছি আপনাদের নিয়ম। আমি যুবতীর প্রেমে পড়েছি।
দুজন দুজনকে ভালোবাসি খুব। সেখানেও আপনারা নিয়ম করে দিয়েছেন, বেশি কথা বলা যাবে না, বেশি দেখা করা যাবে না। সমাজ ব্যবস্থার দলেরা এসে আমার ঘাড় ধরে বললো," বালক লেক পাড়ে আর রবীন্দ্রসরবরে ঘুরোঘুরি করলে চলবে না। রিক্সায় যাতায়াত করতে হবে, রেস্টুরেন্টে বসতে হবে। আমার সাথে দেখা করার পর আপনাদের সমাজে প্রবেশ করলেই মানসিক ও শারীরিক ভাবে শুরু করেন নানান পরিক্ষা নিরিক্ষা, আর আপনারা ধরেই নেন যে আমরা কোন শারীরিক সম্পর্কে জরিয়েছি। আমরা আজ সত্যিই খুব ক্লান্ত, ভীত, সন্ত্রস্ত। মাননীয় সুধী সমাজ,
আমার কাছে প্রেম ভালবাসা আর শারীরিক সম্পর্কের মাঝে অনেক তফাৎ।
আমার অগোচরে আমার প্রেমিকাকে বলেছেন, "খারাপ খারাপ খারাপ। সব ছেলেরাই খারাপ।" আমার অগোচরে আমাকে গালি দেন, অপমান করেন, বলেন আমি নাকি খুব মিথ্যা কথা বলি, মোটেও বিশ্বাস করা যায় না আমাকে। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ পরে আছে তোমার। ছেড়ে দাও তো বেঁচে যাবে। কি হবে ভবঘুরের পিছে জীবন কাটিয়ে।
প্রেমিকা আমার ভালোবাসার পাত্রী ছিলে তুমি,আমি তোমাকে ঘৃণা করি না। কে না চায় সভ্য উন্নত সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে। আমি তোমাকে রেস্টুরেন্টে বসাতে পারি না, রাস্তার সস্তা দোকানগুলো থেকে চা খাওয়াই তোমায়। আমি তোমাকে রিক্সায় চড়াতে পাড়ি না, সুধু হাটাই।
কই তুমিতো আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলো নি, তবে এই সমাজ ব্যবস্থার কেন এতো চুলকানি? এতো কতৃত্য দেখানোর সাহসতো আমরা দেই নি। তবে তোমার সমাজ কেনো চায় আমাদের সম্পর্কের মাঝে বিষদাঁত বসাতে? তোমার ওই সমাজ আমাকে খুব গালাগাল দেয়। হাটাতে হাটাতে আমি নাকি তোমার পা ব্যথা করে ফেলি!
বিষয় গুলো আমার মত ফাকা পকেটওয়ালা ছেলের জন্য কেবলই বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি হয়তবা তোমাকে সেই বিলাসিতার মোড়কে মোড়াতে পাড়ি নি।
আমি তোমাকে মোড়কওয়ালা কবিতা দিয়েছিলাম। কবিতায় পেট ভরে না আমি জানি। আমি তোমাকে আমার কাঠগড়ায় দাড়া করাবার সাহস পাই না।
সমাজ খুব নিষ্ঠুর। তোমার আশপাশের সুশীল সমাজের মানুষগুলো চায় না আমরা সুখে থাকি।আমার আর তোমার সম্মান টিকিয়ে রাখার ভয়ে আজ আমরা এতো দূর। দরকার নেই ভালোবাসার, সম্মানটাই বেচে থাকুক। তোমার আশপাশের সমাজতো এটাই চেয়েছিলো।
আমি আমার সভ্য সমাজের গালে ঠাস ঠাস চড় মেরে বলি, দুটো জীবন নিয়ে খেলা করার অধিকার কে দিয়েছে বল? আমি তোমার ওই সমাজের বুকে লাথি মেরে বলি মুখোশের আড়াল থেকে বেড়িয়ে আয়।
জ্ঞান দেবার নাম করে কান পরা গুলো আগুনে ঝলসে দে।
এই সমাজ ব্যবস্থার বাচ্চা,
উচ্চ বিলাসীতে দেখিয়ে যে যুবতিকে আমার বুক থেকে কেড়ে নিলি পারবি তার জীবনে আরেকটি নতুন জীবন দিতে?
ওই সভ্য সমাজের দল,পারবি আমার কলম হতে সেই যুবতীকে নিয়ে সহস্র কবিতার জন্ম দিতে?
ওই নিয়মের নামে অনিয়মের লেবাছ, যেখানে ভালবাসা ফিকে হয়ে যায় সেখানে এলিমনি দিয়ে পারবি দুটো সুন্দর জীবন ফিরিয়ে দিতে।
এই প্রথাগত সমাজের সুশীল মানুষ, আজ তোরা লুকিয়ে লুকিয়ে আমার প্রেমিকাকে নিয়ে বলিস, দেখ দেখ মেয়েটারে তার বয়ফ্রেন্ড ছাইড়া দিছে। নিশ্চই খারাপ মেয়েছেলে আছিল। আমি রাস্তায় হেটে গেলে পিছে পিছে বলিস, দেখ দেখ, এই সেই পোলা যার প্রেম টিকলো না। হালায় একটা ভাদাইম্যা।
ওই তোদের মুখে আমি লাগাম দিবো না। তোদের ওইটা তো মুখই না। তোরা হচ্ছোস সভ্যতার নামে অসভ্য কীট। তোরা নিয়মের নামে আমাদের হাতে পায়ে পড়িয়ে দেয়া লোহার শিকল। আমি এই শিকলের বিরুদ্ধে, আমি এই নিম্ম মনন সমাজব্যবস্থার বিপক্ষে। পরিণত বয়সে আমার সিদ্ধান্তই আমার কাছে সবার উপরে। তোরা জোড় করে আমায় গড়বি আবার আমায় ভাঙবি। বাহ! বড্ড ভাল খেলা জানিস তোরা।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:৫১