আপনারা অনেকেই হয়ত লক্ষ্য করে থাকবেন যে , দেশে রোগ শোকের মহামারী চলছে...ভেজাল খাওয়া, ভয়ংকর বায়ু দুষন জন জীবন কে পর্যুদুস্ত করে দিচ্ছে....আগেও মানুষ অসুস্হ হত কিন্তু রোগ শোকের কথা শুনতে শুনতে ক্লান্ত...বিশেষ করে খাওয়া দাওয়ার যখনই স্বয়ংক্রিয় প্রকৃিয়ায় তৈরি হচ্ছে তখনই নানা রকমের বাড়তি চাপ তৈরী হচ্ছে যেমন মাছের চাষে খাদ্য হিসাবে ধাতু ক্রমিয়াম এর ব্যবহারে আপনার শরীরে যাচ্ছে সেটা নীরব ঘাতক হিসাবে কাজ করছে.....লাভের আশায় ভেজালে সয়লাব হচ্ছে কিন্তু আপনি চোখ কান খোলা রাখলে..বিজ্ঞানে বিশ্বাস থাকলে অনেক কিছু কেই এড়িয়ে যেতে পারেন..। যেমন গরুর দুধ।
এখন গরুর দুধ নিয়ে কথা বলি। দুধ নানা রকমের হয় কিন্তু তার প্রোটিনের (b-Casein) প্রকার ভেদে মেইনলি দুই প্রকার দুধ হয় A1 এবং A2 টাইপ। নীচের ছবি টা দেখুন।
A1 দুধের b-Casein প্রোটিন এর মাঝে এক যায়গায় Histidine Amino Acid আছে আর দুধ যখন আপনার পেটে যায় তখন পরিপাক এনজাইম A1 দুধের Histidine Amino Acid এর যায়গায় ক্যামিক্যাল বন্ড কে ভেংগে BCM7 নামে একটা কেমিক্যাল কম্পাউন্ড (পেপটাইড) তৈরী করে। BCM7 হল অনেকটা মরফিন জাতীয় আকার তাই এরা মরফিন রিসিপটর এর সাথে বাইন্ড করে। বিজ্ঞানীরা এখন নানান পরীক্ষায় প্রমান করেছেন যে BCM7 এর জন্য নানা রকম রোগ হচ্ছে বিশেষ করে টাইপ ১ ডায়াবেটিস (অটোইমিউন ডিজিস), অটিজম, হার্ট প্রবলেম...বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য BCM7 প্রচন্ড ভাবে ক্ষতিকর। বোস্টনের নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি একটা গবেষনায় দেখিয়েছে যে পরিপাক তন্ত্রে বেশী BCM7 থাকলে একটা চেইন রিয়্যাকশানের মাধ্যমে ব্রেইনের
antioxidants কমিয়ে দেয় যেটা অটিস্টিক বাচ্চাদের মাঝে বেশী দেখা যায়। ইদুরকে BCM7 খাওয়ানোর পর দেখে যায় যে সে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছে..নিউজিল্যান্ডে কিছু উপজাতীর বাচ্চারা যারা মেইনলি A1 টাইপ দুধ খায়, তাদের মাঝে টাইপ ১ ডায়াবেটিস প্রবলভাবে উপস্হিত। জনপ্রতি A1 দুধ খাওয়ার সাথে ডায়াবেটিস ও হার্ট ডিজিজ সরাসরি সর্ম্পক পাওয়া গেছে ২০ টা দেশের উপর টেস্ট করে। অনেকে দুধে ল্যাক্টোজ টলারেট করতে পারে না বলে বদ হজম হয়...কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এটা হয় BCM7 এর জন্য...বাচ্চারা এক বছরের আগে গরুর দুধ হজম করতে পারে না BCM7 এর ফলেই....
কিন্তু A2 টাইপ দুধে Histidine Amino Acid এর যায়গায় শক্ত বন্ডের অধিকারী Proline amino acid থাকাতে পরিপাক তন্ত্রের এনজাইম এটাকে ভাংতে পারে না তাই এই দুধ থেকে কোন BCM7 তৈরী হয় না। তাই A2 টাইপ বাচ্চা থেকে বড় সবার জন্য সহনশীল দুধ...এই দুধ থেকে কোন অসুখ হবার আশংখা নাই বললেই চলে।
মিল্কভিটা আসার আগে সবাই দেশী গরু দুধই খাওয়া হত। দেশী গরু এবং ইন্ডিয়ান গরু কিন্তু A2 টাইপ দুধ দেয় কিন্তু বেশী লাভের আশায় অনেক খামারী ও মিল্কভিটা যে প্রজাতি ৩০-৪০ লিটার দুধ দেয় সেই ইউরিপিয়ান প্রজাতি (নিচের ছবি দেখুন) - Holstein type গরুই বেশি ব্যবহার করে এবং এরা সবাই A1 টাইপ দুধ দেয় আর আমরা না জেনে সবাই দেশী গরু বাদ দিয়ে A1 টাইপ দুধ খাচ্ছি আর নানান রোগ শোকে ভুগছি।
নেচার কিন্তু সবসময় A2 টাইপ দুধ দিত কিন্তু হাজার বছর আগে এক মিউটেশনের ফলে A2 টাইপ থেকে A1 টাইপের উৎপত্তি ঘটে...
মায়ের দুধ, ছাগলের দুধ সব কিন্তু A2 টাইপ..তাই বাচ্চা কে সুস্হ রাখতে মায়ের দুধ দিন কেননা কোটার দুধ সব A1 টাইপ। যদিও নিউজিল্যান্ড বাচ্চাদের জন্য A2 টাইপ পাউডার দুধ তৈরী করছে (অনলাইনে পাওয়া যায়)....আপনি নিজেই আরম্ভ করুন A2 টাইপ দুধ খাওয়া দেখবেন অনেক ভাল বোধ করছেন। মিস্টির দোকানীকে বলুন A2 টাইপ দুধ ব্যবহার করতে
যেদিন থেকে এটা জানি সেদিন থেকে দুইগুন বেশী দামে A2 টাইপ দুধ কিনা আরম্ভ করেছি...আমাদের নিজের পরিবারে ও A1 টাইপ দুধ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৬