somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা সৈয়দপুর......

১৩ ই অক্টোবর, ২০২২ সকাল ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা, সৈয়দপুর


নীলফামারীর সৈয়দপুর বাংলাদেশের প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে একটি। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এই শহরটি অনেক আগে থেকেই প্রসিদ্ধ হলেও অনেকের কাছে সৈয়দপুর ‘রেলের শহর’ বলে বেশি খ্যাত। দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা (Railway Workshop) এখানে অবস্থিত। ১৮৭০ সালে ১শ’ ১০ একর জমির ওপর ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ কারখানার ২৬টি শপে শ্রমিকরা কাজ করে থাকেন। নাট-বল্টু থেকে শুরু করে রেলওয়ের ব্রডগেজ ও মিটারগেজ লাইনের বগি মেরামতসহ সব কাজ করা হয়। পলিটেকনিক ও কারিগরি শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা সফর বা পরিদর্শন করে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করেন। এ কারখানার প্রধান হলেন বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক। তারই অফিসের সামনে সবুজ চত্বরে রাখা আছে ব্রিটিশ আমলের ন্যারোগেজ ইঞ্জিন। ৭২ সালে সর্বশেষ ইঞ্জিনটি চলতো বাগেরহাট-রূপসা সেকশনে। ১৯০১ সালে ইংল্যান্ডের ভলকান কোম্পানির তৈরি এই ইঞ্জিনটিসহ এ ধরনের ৩টি ইঞ্জিনের ঠাঁই হয়েছে এখন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার লোকো ট্রান্সপোর্ট মিউজিয়ামে। কালের সাক্ষী হয়ে রয়েছে এই ইঞ্জিনগুলো। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে নতুন প্রজন্মের অনেকে আসে স্বচোখে দেখতে একনজর এই কয়লার ইঞ্জিন।


পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পুলিশের (জিআরপি) হেডকোয়ার্টারও সৈয়দপুরে অবস্থিত। ফলে নানা দিক দিয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনটি এ অঞ্চলের গুরূত্বপূর্ণ একটি রেলওয়ে স্টেশন হিসেবে পরিণত হয়েছে। ১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ রেলওয়ে স্টেশন।

সৈয়দপুরের ঐতিহাসিক চিনি মসজিদ:


সৈয়দপুর শহরে রয়েছে অনেক মসজিদ। রাজধানি ঢাকার পরেই মসজিদের শহর বললে সৈয়দপুরকে বলতে হয়। কারণ সৈয়দপুর শহর ও গ্রামঞ্চলের আনাচে কানাচে ছোট বড় অসংখ্য মসজিদ গড়ে উঠেছে যা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে সৈয়দপুরকে স্বতন্ত বৈশিষ্ট মন্ডিত করেছে। অনন্য স্থাপত্য নিদর্শনের জন্য বিখ্যাত সৈয়দপুর শহরের ঐতিহাসিক চিনি মসজিদ। নির্মাণশৈলী ও সৌন্দর্যের দিক দিয়ে সৈয়দপুর শহরের চিনি মসজিদ স্বাতন্তের অধিকারী। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৮৬৮ সালে । প্রথমে মসজিদটি দো-চালা টিনের ঘর হিসেবে নির্মাণ করা হয় । পরবর্তীতে ১৯২০ সালে ইমাম হাজী হাফিজ করিমের উদ্যেগে ৩৯ × ৪০ ফুট আয়তনের মসজিদটি প্রথম অংশ পাকা করা হয় । এই অংশে নক্শা করেছিলেন হাজী আব্দুল করিম নিজেই। ১৯৬৫ সালে মনজিদের দ্বিতীয় অংশ নির্মাণ করা হয়। মসজিদের গোটা অবয়ব রঙিন উজ্জল পাথরে আবৃত। কলকাতা থেকে সে সময় ১৪৩ খানা সংকর মর্মর পাথর এনে লাগানো হয়। এছাড়াও চিনা মাটির টুকরো দিয়ে আবৃত মসজিদের গায়ে লাগানোর জন্য সে সময় বগুড়া গ্লাস ফ্যাক্টরি প্রায় ২৫ মেট্রিক টন চীনা মাটির পাথর দান করেছিল। এভাবে মসজিদটি গড়ে উঠে শহরের ইসলামবাগ এলাকায়। অত্যন্ত নয়ানাভিরাম এ মসজিদটির ৩২টি মিনার রয়েছে , এছাড়াও রয়েছে বড় ৩টি গম্বুজ। চীনা মাটির টুকরো দিয়ে ফুল ও গাছগাছড়ার নক্শা এবং মসজিদের দক্ষিণের বারান্দারটি সম্পূর্ণ সাদা সিমেন্টের মোজাইক করা।



এছাড়াও মসজিদের প্রবেশের জন্য উত্তর দক্ষিণে দু’টি ফটক রয়েছে। দোতলায় রয়েছে একটি কক্ষ। মসজিদ রয়েছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের গোরাস্থান। মসজিদের অনন্য নির্মাণশৈলী ও সৌন্দর্য্য দেখতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক লোকজন আসেন। ১৮৬৩ সালে কয়েক’শ দক্ষ কারিগর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় সৈয়দপুর চিনি মসজিদ। এর গায়ে লাগানো রয়েছে ২৪৩ টি শংকর মর্মর পাথর, পাথরের সাথে লাগিয়ে দেয়া হয় ২৫ টনের মতো চীনামাটির টুকরা। নয়নাভিরাম এই মসজিদটির ২৭ টি মিনার রয়েছে যার ৫টি এখন অসম্পূর্ণ মিনার। মসজিদটির উত্তর পার্শ্বের নতুন ভবনের কাজ চলছে।


কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনে সরাসরি সৈয়দপুরে চলে যেতে পারেন। কল্যাণপুর, গাবতলী, কলেজগেট, মহাখালি থেকে সৈয়দপুর সরাসরি অনেকগুলো উন্নতমানের বাস সার্ভিস চালু আছে। এছাড়াও বিমানযোগে সরাসরি সৈয়দপুর যেতে পারেন। সৈয়দপুরে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও বেঙ্গল এয়ারওয়েজ এর বেসরকারি বিমান সপ্তাহে দু’দিন চালু আছে। সময় লাগে ৩০/৪০ মিনিট।

কোথায় থাকবেনঃ
সৈয়দপুরে থাকার জন্যে যেসব আবাসিক হোটেল আছে তাদের মধ্যে অন্যতমঃ- ইকো হেরিটেজ হোটেল এন্ড রিসোর্টস, দিয়াজ হোটেল এন্ড রিসোর্টস।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:২৭
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=একটু সৃজনশীল হও=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৬


খেয়ে দেয়ে আরামসে ঘুম, এ জীবন বুঝি
খাও দাও ঘুমাও এ কর্ম রোজই,
টিকটকে ভিডিও, ফেসবুকের রিল,
তাতেই করছো সুখ ফিল?

সাজুগুজু, প্রাশ্চাত্যের ড্রেসাপ, হাই হিলে হাঁটা
ব্যস! এমন অহমে পূর্ণ জীবনে ঝাঁটা
নেই সংসার গুছানোতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে সরকার কি পদক্ষেপ নিবে ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:২৭


আওয়ামী লীগের মিছিলের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ঢাকার ডেমরা-উত্তরা- বাড্ডা - মিরপুর সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগ ঝটিকা মিছিল করছে। প্রায় তিনমাস ধরে রাস্তায় মিছিল নামানোর প্রস্তুতি ছিলো। মিছিলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবেনাকো তুমি- যেদেশে হাসির জন্যও প্রাণ দিতে হয়!

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:৩৩

কয়েক দিন আগে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম হবু চন্দের আইন কবিতা নিয়ে, যেখানে কান্নার বিরুদ্ধে রাজা আইন জাড়ি করেছিলেন.....আজ লিখতে হচ্ছে- হাসির জন্য প্রাণ কেড়ে নেওয়ার ঘটনা নিয়ে। আমরা সবাই ইতোমধ্যেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু কিছু মানুষ জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও তা কাজে লাগাতে পারে না

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৪৯


নারীর বাড়ি দিনাজপুর। স্বামী ঢাকায় ব্যবসা করেন। পারিবারিক কলহের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাবার্তা বন্ধ ছিল কয়েকদিন। এরমধ্যে ফেসবুকে রংপুরের কাউনিয়ার যুবক শামীমের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই নারীর। পরে মোবাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

৭১ না দেখেও কেবল ইতিহাস পড়ে যদি আপনি ৫৩ বছর পরে এসেও পাকিস্তানকে ঘৃণা করতে পারেন। তাহলে নিজ চোখে ভারতের আগ্রাসন দেখেও চুপ কেন?

লিখেছেন তারেক সালমান জাবেদ, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৪:৩৭

প্রথমেই শুরু করতে চাই সীমান্ত হত্যা নিয়েঃ -
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী দ্বারা ২০০০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ সাধারণ ও বেসামরিক বাংলাদেশি হত্যা করা হয়েছে। ভারত সরকারের বাংলাদেশের সীমান্তে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×