তাহলে কি আমরা আর লিখবো না? চোখের সামনে অকাজ কুকাজ হতে দেখলেও আমরা কিছু বলতে পারবো না? যার ক্ষমতা আছে তার জন্য সব কিছুই বৈধ? চোরকে চোর বলা যাবে না। খুনীকে খুনী বলা যাবে না। ঘুষখোরকে ঘুষ খোর বলা যাবে না। তাহলে ঘোষণা দিয়ে দিলেই তো হয় যে, রাষ্ট্র তো দূরের কথা রাষ্ট্রের শালার কাজের ব্যাটার পোষা কুকুরটিকেও ‘রাষ্ট্রীয় কাজে নিয়োজিত’ চেন গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হোক।
যেহেতু রাষ্ট্রের দানা-পানি যারা খায় তারা ভিন্ন বাকি লোকজন আম। তারা নিরাপত্তা বেষ্টনী থেকে বের হলে বাদুর, কাক-পক্ষী সেই আমে ঠোকর মারতে পারে। পিঁপড়া বা পোকায় কাটতে পারে। কাজেই সেইসব মানুষ গর্তে লুকাইয়া থাকুক। রাস্ট্রের কোনো কাজে তাদের কোনো ভূমিকার প্রয়োজন নাই। রাষ্ট্রের ভালোমন্দ নিয়া কথা বলার কোনোরকম হক তাদের নাই।, রাষ্ট্র আর তার আশপাশের লোকজনের জন্যই দেশটা- আম জনতা এখানে নিষ্প্রয়োজন।
বড় বড় খুনি, ব্যাংক লুটেরা সরকার বা প্রেসিডেন্টের ক্ষমা পাইয়া যায় কিন্তু একজন মুশতাক, একজন কিশোর ক্ষমা পায় না। তাদের অপরাধ সত্য বলার সাহস বেশি। এই দেশে সত্য বলার প্রয়োজন নাই। সত্যের মূল্য নাই। আদালতে ‘যাহা বলিব সত্য বলিব’ প্রতিজ্ঞার মতন বড় মিথ্যা বোধ করি জগতে আর নাই। আমার দেশটা আজ মিছার দেশ হইয়া গেছে। রাষ্ট্রপক্ষের মানুষ আর রাষ্ট্রবিরোধী মানুষে কোনো পার্থক্য খুঁজে পাই না।
বঙ্গবন্ধু নিজেই ঠিক থাকতে পারেন নাই আর শেখ হাসিনা তো তাঁরই কন্যা। মাতৃ গোত্রের নরম মনের মানুষ। তানিরে ইনাইয়া বিনাইয়া যা বুঝান যায় তাই হয়তো তানি বুঝেন। সত্যটা তাঁর ধারে কাছেও ভীড়তে পারে না। চাটার দল পরিবেষ্টিত থাইক্যা একা একা কতটা আর সত্যের কাছাকাছি যাইতে পারবেন তিনি?
শেখ হাসিনার চেহারায় আমি আমার মায়ের চেহারা দেখি। ঘরে বইসা দুইজনের চেহারা পাশাপাশি মিলাইয়া মিলাইয়া দেখি। কিন্তু জনতারে দেখানোর জন্য ফেসবুকে আপ করতে সাহস পাই না। কোনদিক থাইক্যা কোন চাটুকার আবার মামলা কইরা দিয়া ৫৭ধারার ধুয়া তুইল্যা আমার গায়ে কালি ফেলবে। বিগত সরকারগুলার আমলে বর্তমান সরকারে বিদ্যমান অনেক মহারথী দমন পীড়নের শিকার হইছিলেন। আমি অবাক হইয়া ভাবি তাঁরা কী কইরা সেইসব দিন ভুইল্যা গেলেন? তারা তো ভালোমতনই জানেন দমন নীতির পরিণতি কখনও ভাল ফল বইয়া আনে না। আসিফ নজরুলও দমন নীতির শিকার নাকি দলকানাদের আক্রোশের শিকার বুঝতে পারি না।
কাজেই এখনও সময় আছে চামচামি কইরা কেউ যেন কারো নামে ৫৭ ধারায় মামলা করতে না পারে, ৫৭ ধারার আড়ালে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে না পারে, সেই দিকটা সরকার এবং বিচার বিভাগকেই দেখতে হবে। এমন কালা কানুন নিজের দেশের মানুষের জন্য অপপ্রয়োগ ছাড়া ভিন্ন কিছু না তা যত দ্রুত বোধগম্য হয় ততই দেশের জন্য মঙ্গল।