somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বপ্নসখা! অসমাপ্ত।।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ক্লান্ত কৃষক সারাদিনের খাটুনি শেষে পরিশ্রান্ত মনে বিকেলের সূর্যাস্তে দৃষ্টি রাখে সময়টা বোঝার জন্য। আজকের কাজ শেষ, বাকিটা মাটি যা সে সন্ধ্যা হবার আগেই খনন করতে হবে। ঘড়ে একমাত্র মেয়ে শ্যামা ভাত বেড়ে অপেক্ষা করছে রুজাকার মতন - বাপজান কখন ফিরে আসেন। ঈদানিং তার বাবা সন্ধ্যা হবার সাথে সাথে ঘড়ে ফিরে আসছেন। এ ব্যাপারে গত এক বছর হবে কোন হেরফের হচ্ছে না। কথাটা সে এই কারনেই ভাবে শৈশব থেকে তার বাবাকে সে রাত গভীর করে বাসাতে আসতে দেখছে। এমনও অনকে রাত আছে সে ঘুমিয়ে পড়েছিল মায়ের পাশে রাত্রে বাবা এসছেন কিনা সেটা না জেনেই। শিশুকাল থেকেই সে বাবাকে বিষন পছন্দ করে। অনেকবেশি ভালোবাসে! বাবার সাথে সে কাউকে তুরনা করতে পারে না, এমনকি মাকেও না। বাবা ছাড়া অন্যান্য পুরুষরা তার কাছে কেমন জানি ভয়ঙ্কর ব্যাপার মনে হয়, সে ব্যাপারে অনেকটাই ভাবা হয়নি কারণ এই বিষয়টা শ্রামা এড়িয়ে চলে। তখন সে বাবার কথা ভেবে জিনিসটাকে হালকা করে নেয়। আজকে বাবাকে সে বলে দিয়েছে আসতে সময় মনে করে আজির চাচার দোকান থেকে কেরোসিন নিয়ে আসতে। আগামীকাল তার সমাপনী পরীক্ষা তাই রাত্রে পড়তে বসতে হবে। জানে এই বিষয়ে বাবা কখনও ভুল করবেন না, তাকে এতদূর পড়ালেখাতে নিয়ে আসায় বাবার অবদান অসীম আর উনার স্বপ্ন সে আরো বহুদূর পড়বে। একাডেমিক না তবে সেট হবে পুরাপোরি স্বশিক্ষিত নারী/ অনেকটাই বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত এর মতন। লেখাপড়া নিয়ে বাবার যত আগ্রহ ঠিক ততটাই অনীহা সামগ্রিক চাহিহদার প্রতি। গ্রামের মানুষের কাছে তিনি অর্ধ-মূর্খ হতদরিদ্র কৃষক। শ্যামা বাবার মধ্যে একটা আকর্ষন অনুভুব করে যেটা অনেকটাই অদ্ভুত এবং সে রহস্যটা একান্তই তার ব্যক্তিগত। যেমন অন্যান্য পুরুষ সম্পর্কে কিশোরি মনে যে আতঙ্কটা থাকে সেটা তার বাবার অমায়িক ব্যবহার আর তার প্রতি মায়ের অগাধ বিশ্বাস তাকে সেই অস্বস্তিকর অনাগত ভবিষ্যতের অনুভুতি থেকে সংযত করে। মায়ের প্রতি বাবার ছিল অগাধ নিবিড় ভালোবাসা। যে কোন দিক দিয়েও বাবা মাকে কখনও ছোট করে দেখতেন না। তার পুরুষত্ব যেন মায়ের মহিয়সির কাছে ছিল অম্লান এক বীর পুরুষের হাতের তলুয়ারের মতন জিনি যুদ্ধ জয় করেছেন রানীর কাছে মাথা নত করতে। মাতৃকুলের প্রতি বাবার এই ভক্তি অনেকটাই ঈশ্বর সমতুল্য। বাবা যখন পড়াতে বসেন প্রায়ই মায়ের কথা বলেন। সেটা পড়া বোঝানোর ছলে অথবা অনু্প্রেরণার ক্ষেত্রে। সে মাকে হারিয়েছে ক্লাস ফোরে পড়তে সময়, তখন তার বয়স মাত্র নয় বছর। তাকে লেখাপড়া শেখাতে বাবার যত আগ্রহ, মায়ের ঠিক ততটাই অনীহা। তবে এই ব্যাপারে মা কখনও বাধা দেননি। সেজন্য অ, আ, ক, খ সবকিছুই বাবার কাছ থেকেই শিখতে হয়েছে। আম্মু নীয়ম করে প্রতিদিন সকাল হলে কুরআন আর দুপুরের অলস সময় ও রাতে গভীর সময়ে উপন্যাসের বই নিয়ে পড়তে বসতেন। তার বাবার কাছে তাই মা সবজান্তা পন্ডিত! অনেক সময় আম্মুর পড়াতে ব্যাগাত হবে বলে ঘুমের বান করে চোখ মুজে থাকত, তখন বাবার অবচেতন পা নাড়ানো দেখে শ্যামা বোঝতে পারত বাবা ঘুমায় নি। বাবাকে তার জানার উৎস জিঙ্গেস করলে তার সবটুকু অবদানই তিনি বলতেন মায়ের জন্য। আসলে শ্যামার কাছে জানা ও নাজানার মধ্যে যে সেতু বন্ধন সেটাই হচ্ছেন তার বাবা। সে এবছর অস্টম শ্রেনীতে পড়ছে আর এ পর্যন্ত কোন বিষয়ের জন্য তাকে আলাদা করে শিক্ষক রাখতে হয় নি। তাই তার চিন্তা হয় নবম শ্রেণীতে উঠার পর বাবা তাকে বিষয় নির্বাচন করতে সাহায্য করবেন না বাধ্য করবেন? তখন যদি আরেকজন শিক্ষকের কাছে পড়তে যেতে হয়? তার লেখাপড়ার খরচ বাড়বে, অতিরিক্ত বই কিনতেও টাকার প্রয়োজন আর সবথেকে ভাবার বিষয় অন্য কারও কাছে গিয়ে পড়তে বসাটা তার কাছে অস্বস্তির ঠেকছে। ঘড়ুয়া পরিবেশে সে বাবাকেই শিক্ষক দেখতে দেখতে মানতে শিখেছে। বাবার থেকেও বেশি জানেন এমর কার কাছে গিয়ে শিখতে হবে এমনটি তার কখনও মনে হয় না। তিনি যেখানে পরাভূত সেখানে তারও বিষন অনীহা।



Remember that, When the rain fall, It don't fall on one man's housetop. MarLeY

(ব্যক্তিগত কারনে কিছুদিন নেটওয়ার্কের বাইরে আছি। সময় করে গল্পটা শেষ করে সংস্করন করব। সবাইকে ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য। কিছুদিন পর আবার ইনশাহআল্লাহ সবার কাছে ফিরে আসব। আপনারা সবাই ভাল থাকবেন আর আমার জন্যও দোয়া করবেন। খোদা হাফেজ!)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩৫
১৯টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×