তথ্য ভিওিক ফটো ব্লগ
তিন বিঘা করিডোর ও দহগ্রাম-আংগরপোতা ছিটমহল
তিন বিঘা করিডোর
দহগ্রাম
দহগ্রাম পোষ্ট অফিস
দহগ্রাম হাই স্কুল
দহগ্রাম বাজার
অবস্থান
পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ী ইউনিয়ন ও দহগ্রাম-আংগরপোতা ছিটমহলের মাঝখানে এ করিডোরটি অবস্থিত।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত বিভাগের সময় সীমান্ত এলাকা গুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে বণ্টিত হয় এজন্য গঠিত হয়েছিল Radcliffe Commission। বৃটিশদের ডিভাইড এন্ড রুল নীতির সার্থক প্রয়োগ করে Radcliffe Commission সীমান্ত এলাকাগুলোকে এমনভাবে ভাগাভাগি করেছিল যাতে প্রতিবেশি দু'দেশের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ বিরাজ করে, যার দৃষ্টান্ত ছিটমহলগুলো। তন্মধ্যে লালমনিরহাট জেলাধীন পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্তবর্তী ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ছিটমহল দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ব্যাপকভাবে পরিচিত। এ ছিটমহলের সাথে তৎকালীন পাকিস্তানের মূল ভূখন্ডের যোগাযোগের জন্য একটি ‘প্যাসেজ ডোর’ এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, যা বর্তমানে ‘তিন বিঘা করিডোর’ নামে পরিচিত।
পাকিস্তান আমল পেরিয়ে বাংলাদেশ আমল পর্যন্ত তিন বিঘা হস্তান্তর প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের অনেক বৈঠক এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহল পাটগ্রাম উপজেলার একটি স্বতন্ত্র ইউনিয়ন ‘দহগ্রাম ইউনিয়ন’ হিসেবে পরিগণিত হয় এবং ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ আগস্ট এখানে ইউনিয়ন পরিষদের শুভ উদ্বোধন ঘটে। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জুন ইজারার মাধ্যমে উক্ত তিন বিঘা বাংলাদেশকে প্রদান করা হয়। তবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১ ঘন্টা পর পর করিডোর দিয়ে বাংলাদেশীদের যাতায়াতের সুযোগ দেয়া হয়। অতঃপর করিডোর দিন-রাত খোলা রাখার জন্য দাবী উত্থাপিত হলে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ এপ্রিল থেকে তা সকাল ৬-৩০ মিনিট হতে সন্ধ্যা ৬-৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০১১ খ্রি. তারিখে ঢাকাতে অনুষ্ঠিত হাসিনা-মনমোহন বৈঠকে স্বাক্ষরিত চুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশীদের যাতায়াতের জন্য তিনবিঘা করিডোর বর্তমানে ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা হচ্ছে।
কেন বিখ্যাত/ গুরুত্বপূর্ণ
ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ছিটমহল দহগ্রাম-আংগরপোতার সাথে মূল ভূখন্ডের যাতায়াতের একমাত্র পথ হচ্ছে এ ছিটমহলটি।
যাতায়াত ব্যবস্থা
পাটগ্রাম উপজেলা সদর হতে এর দুরত্ব ১০ কিমি। সড়কপথে রিকসা কিংবা ভ্যান দিয়ে এখানে যাওয়া যাবে। সময় লাগবে আনুমানিক ১ ঘন্টা।
আবাসন সুবিধা
দহগ্রাম-আংগরপোতা ছিটমহলে কিংবা এ করিডোরের আশে-পাশে কোন আবাসিক সুবিধা নাই। লালমনিরহাট জেলা সদরে অথবা পাটগ্রাম উপজেলা সদরে অবস্থান করতে হবে'
তিস্তা ব্যারেজ
অবস্থান
বাংলাদেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্পের লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলাধীন গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী এবং পার্শ্ববর্তী নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলাধীন খালিসা চাপানী ইউনিয়নের ডালিয়া- এর মধ্যবর্তী স্থানে তিস্তা নদীর উপর নির্মিত। ব্যারেজের পাশেই মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে অবসর রেস্ট হাউজ অবস্থিত।
অবসর রেস্ট হাউজ
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
উত্তর জনপদের বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া জেলার অনাবাদী জমিতে সেচ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে বাড়তি ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন সরকার তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। মূল পরিকল্পনা গৃহীত হয় ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রকল্পের কাজ শুরুর উদ্যোগ নেয়া হলেও বিভিন্ন জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে লালমনিরহাট ও নীলফামারী মহকুমার সীমান্তে তিস্তা নদীর উপর ৪৪টি রেডিয়াল গেট সম্বলিত ৬১৫ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ব্যারেজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে। একই খ্রিষ্টাব্দের ৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এইচ.এম. এরশাদ আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্যারেজটি উদ্বোধন করেন। বাই পাস ক্যানেলের উপর নির্মিত গেট সহ এ ব্যারেজের মোট গেট সংখ্যা ৫২টি।
কেন বিখ্যাত/ গুরুত্বপূর্ণ
এ ব্যারেজটি তৈরির ফলে নীলফামারি, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার বিশাল এলাকা সেচ সুবিধার আওতায় এসেছে।
যাতায়াত ব্যবস্থা
লালমনিরহাট সদর হতে অথবা হাতীবান্ধা উপজেলা সদর হতে সড়কপথে তিস্তা ব্যারেজ্ ও অবসর রেস্ট হাউজে যাওয়া যায়। হাতীবান্ধা উপজেলা সদর হতে সড়কপথে এর দুরত্ব ২০ কিমি।
আবাসন সুবিধা
পানি উন্নয়ন বোর্ড অবসর রেস্ট হাউজের তত্ত্বাবধান করে থাকে। তাদের অনুমতি নিয়ে এ রেস্ট হাউজে অবস্থান করা যায়। তবে এটি সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়।
বুড়িমারী স্থল বন্দর
অবস্থান
পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বুড়িমারী সীমামেত এ স্থল বন্দর অবস্থিত।
সংক্ষিপ্ত বর্ননা
ভারত, ভূটান এবং নেপালের সঙ্গে স্থলপথে মালামাল আমদানী ও রপ্তানির সুবিধার্থে বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ বন্দরটি চালু করা হয় ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে। এ বন্দর দিয়ে ভারত, ভূটান ও নেপাল হতে কয়লা, কাঠ, টিম্বার, পাথর, সিমেন্ট, চায়না ক্লে, বল ক্লে, কোয়ার্টজ, রাসায়নিক সার, কসমেটিক সামগ্রী, পশু খাদ্য, বিভিন্ন ধরণের ফলমূল, পিঁয়াজ, রসুন, আদা, চাল, ডাল, গম, বিভিন্ন ধরণের বীজ, তামাক ডাটা প্রভৃতি মালামাল আমদানী করা হয়। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা হয় ইলিশ মাছ, মেলামাইনের তৈরী বাসনপত্র এবং ঔষধ সহ কতিপয় মালামাল।
যাতায়াত ব্যবস্থা
পাটগ্রাম উপজেলা সদর হতে এর দুরত্ব ১৪ কিমি। সড়কপথে রিকসা কিংবা ভ্যান দিয়ে এখানে যাওয়া যাবে। সময় লাগবে আনুমানিক ১ ঘন্টা।
আবাসন সুবিধা
এ স্থল বন্দরের আশে-পাশে ভাল কোন আবাসিক সুবিধা নাই। লালমনিরহাট জেলা সদরে অথবা পাটগ্রাম উপজেলা সদরে অবস্থান করতে হবে।
শেখ ফজলল করিমের বাড়ী ও কবর
কবি শেখ ফজলল করিম
কবি শেখ ফজলল করিমের বাড়ী
কবি শেখ ফজলল করিমের কবর
কবি ফজলল করিম স্মৃতি পাঠাগার
অবস্থান
কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের কাকিনা মৌজায় শেখ ফজলল করিমের বাড়ী অবসিহত, যা ‘কবি বাড়ী’ নামে বহুল পরিচিত।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
নীতিবাদী সাহিত্য সাধক শেখ ফজলল করিমের জন্ম বাংলা ১২৮৯ সালের ৩০ চৈত্র (ইতিহাস গবেষক সমর পালের মতে ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ এপ্রিল) সোমবার রাত্রি শেষে (মঙ্গলবার) তৎকালীন কালীগঞ্জ থানার কাকিনা গ্রামে। তাঁর মাতার নাম কোকিলা বিবি।
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্য রাতে কাকিনায় নিজ বাড়ীতে তিনি ইন্তেকাল করেন। বাড়ীর সম্মুখে তাঁকে সমাহিত করা হয়। তাঁর স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য লালমনিরহাট পৌরসভাধীন খোর্দ্দসাপটানা মৌজায় কালেক্টরেট মাঠের পূর্ব পাশে ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় কবি শেখ ফজলল করিম শিশুনিকেতন ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
যাতায়াত ব্যবস্থা
লালমনিরহাট সদর হতে অথবা কালীগঞ্জ উপজেলা সদর হতে সড়কপথে কবি শেখ ফজলল করিমের বাড়ী ও কবর দেখতে যাওয়া যায়। কালীগঞ্জ উপজেলা সদর হতে সড়কপথে এর দুরত্ব ১০ কিমি।
তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী
তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী
জমিদারদের স্থাপত্বের ধ্বংসাবশে
জমিদার রমনী মোহন রায় চৌধুরী
অবস্থান
তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের উত্তর ঘনেশ্যাম মৌজায় অবস্থিত।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
মহারাজা প্রাণ নারায়ণের সময় ‘রসিক রায় বিগ্রহ’ নিয়ে ১৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দে তুষভান্ডার জমিদার বংশের আদিপুরুষ মুরারি দেব ঘোষাল ভট্রাচার্য ২৪ পরগনা/ কলিকাতার জয় নগর থেকে কোচবিহার আগমণ করেন এবং উপেঞ্চৌকি ব্যবস্থায় একটি তালুক লাভ করে এখানে বসতি স্থাপন করেন। তৎকালে ধর্মীয় কার্যাদির জন্য উপঞ্চৌকি ব্যবস্থায় ভূমি দান করা হতো। মুরারি দেব ঘোষাল ভট্রাচার্য ব্রাহ্মন হওয়ায় শূদ্র রাজার দান ভোগে আপত্তি উত্থাপন করেন এবং প্রদত্ত সম্পত্তির জন্য খাজনা গ্রহণের আবেদন জানান। মহারাণী অবশেষে খাজনা স্বরূপ ধানের তুষ গ্রহণে সম্মত হন। খাজনা স্বরূপ প্রদানের জন্য তুষ সংগ্রহ করে বর্তমানে জমিদার বাড়ীর পূর্ব পাশে অনতিদূরে স্তুপাকারে রাখা হতো এবং পরে তা কোচবিহার রাজবাড়ীতে প্রেরণ করা হতো। এ তুষ দিয়ে রাজবাড়ীতে বিভিন্ন ধরণের যজ্ঞানুষ্ঠান সম্পাদন করা হতো। জনশ্রুতি মতে, সংগৃহীত তুষের স্তুপের কারণে তৎকালে স্থানটি তুষভান্ডার (তুষের ভান্ডার) হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। ব্রাহ্মন মুরারি দেব ভট্রাচার্যের মাধ্যমে তুষভান্ডার জমিদারীর গোড়াপত্তন ঘটে, আর ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে জমিদার গিরীন্দ্র মোহন রায় চৌধুরীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সুদীর্ঘ চারশত বছরের জমিদারীর সমাপ্তি ঘটে।
কেন বিখ্যাত/ গুরুত্বপূর্ণ
প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন জমিদারির নিদর্শন এই জমিদার বাড়ি। এ বংশের জমিদার রমনী মোহন রায় চৌধুরী একজন প্রজাহিতৈষি জমিদার হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
যাতায়াত ব্যবস্থা
লালমনিরহাট সদর হতে সড়ক পথে এর দুরত্ব ২৫ কিমি। সড়ক পথে বাসযোগে যাওয়া যাবে। সময় লাগবে আনুমানিক ১ ঘন্টা।
আবাসন সুবিধা
লালমনিরহাট জেলা সদরে অথবা কালীগঞ্জ উপজেলা সদরে ডাকবাংলোতে অবস্থান করা যায়।
নিদাড়ীয়া মসজিদ
নিদাড়ীয়া মসজিদ
নিদাড়ীয়া মসজিদের শিলালিপি
অবস্থান
লালমনিরহাট সদর উপজেলাধীন কিশামত নগরবন্দ মৌজায় অবস্থিত। এর অবস্থান রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক হতে ২ কিমি দক্ষিনে।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
মোগল সুবেদার মনছুর খাঁ ১১৭৬ হিজরীত মসজিদটির জন্য ১০.৫৬ একর জমি দান করেন এবং মসজিদটি নির্মান করেন। ঐ সময়ের মোতয়াল্লি ছিলেন ইজার মাহমুদ শেখ , বিজার মাহমুদ শেখ, খান মাহমুদ শেখ প্রমূখ। সুবেদার মনছুর খাঁর দাড়ী না থাকায় তার নির্মিত্ত মসজিদটি নিদাড়ীয়া মসজিদ হিসেবে জনগন অবহিত করে আসছে মর্মে জনশ্রূতি রয়েছ। বর্তমানে স্থানীয় জনগন মসজিদটিতে নামাজ আদায় করেন।
যাতায়াত ব্যবস্থা
সড়ক পথে মাইক্রোবাস/ বাস/ রিক্সা ইত্যাদি দিয়ে এ স্থানে যাওয়া যায়।
আবাসন সুবিধা
এ মসজিদের আশে-পাশে কোন আবাসিক সুবিধা নাই। লালমনিরহাট জেলা সদরে অবস্থান করতে হবে।
হারানো মসজিদ
হারানো মসজিদের ধ্বংশপ্রাপ্ত দেয়ালের চিহ্ন
নবনির্মিত হারানো মসজিদ
অবস্থান
রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের ১ কিমি দক্ষিনে লালমনিরহাট উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রামদাস মৌজায় এ প্রাচীন মসজিদটি অবস্থিত।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
লালমনিরহাট সদর উপজেলাধীন পঞ্চগ্রাম ইউনয়নের রামদাস মৌজায় রংপুর কুড়িগ্রাম মহাসড়কের অনতিদূরে বহুদিন ধরে একটি পতিত জঙ্গল ছিল। এ জঙ্গলের নাম মজদের আড়া। স্থানীয় ভাষায় আড়া শব্দের অর্থ জঙ্গলময় স্থান। কেউ হিংস্র জীব-জন্তু, সাপ-বিচ্ছু ইত্যাদির ভয়ে ভেতরে প্রবেশ করতো না। জঙ্গল পরিস্কার করতে যেয়ে বেরিয়ে আসে প্রাচীন কালের তৈরী ইট যার মধ্যে ফুল অংকিত। এমনিভাবে মাটি ও ইট সরাতে গিয়ে একটি পূর্ন মসজিদের ভিত বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে ৬’’× ৬’’× ২’’ সাইজের একটি শিলালিপি পাওয়া যায় যার মধ্যে ষ্পষ্টাক্ষারে আরবীতে লেখা আছে ‘লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ, হিজরী সন ৬৯। তখনই স্থানীয় লোকদের মনে প্রত্যয় জম্মে যে, এটি-একটি প্রচীন মসজিদের ধ্বংসাবশেষ। বর্তমানে সেখানে একটি মসজিদ নির্মান করা হয়েছে।
যাতায়াত ব্যবস্থা
পাকা রাস্তা। মাইক্রোবাস/ বাস/ রিক্সা ইত্যাদি দিয়ে যাওয়া যায়।
আবাসন সুবিধা
এ মসজিদের আশে-পাশে কোন আবাসিক সুবিধা নাই। লালমনিরহাট জেলা সদরে অবস্থান করতে হবে।
সিন্দুরমতি দিঘী
সিন্দুরমতি দিঘী
অবস্থান
লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
চৈত্র মাসের নবমী তিথিতে পুকুরটিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ পূজা অর্চনা করে থাকে। কথিত আছে জৈনক হিন্দু জমিদার নারায়ন চক্রবর্তী খরা জনিত কারনে এক পুকুর খনন করেন। কিন্তু পুকুরে পানি না উঠায় স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী তার দুই মেয়ে সিন্দুর ও মতি-কে পুকুরের মাঝখানে নামিয়ে পূজার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু জমিদার পূজার উপাচার সঠিক ভাবে ব্যবস্থা করতে না পারায় তা সংগ্রহের জন্য যান । তিনি উপাচার আনতে গেলে ইতোমধ্যে পুকুর জলে কানায় কানায় ভরে যায়। সকলেই পাড়ে উঠলেও সিন্দুর ও মতি অথৈ জলে তলিয়ে যায়। পরে জমিদার স্বপ্নে দেখেন তার দুই মেয়ে দেবত্ব প্রাপ্ত হয়ে অমরত্ব লাভ করেছে।
যাতায়াত ব্যবস্থা
সড়ক পথে মাইক্রোবাস/ বাস/ রিক্সা ইত্যাদি দিয়ে যাওয়া যায়।
আবাসন সুবিধা
এর আশে-পাশে কোন আবাসিক সুবিধা নাই। লালমনিরহাট জেলা সদরে অবস্থান করতে হবে।
কালীবাড়ি মসজিদ ও মন্দির
অবস্থান
লালমনিরহাট পৌরসভার সাপটানা মৌজার কালীবাড়িতে একই চত্ত্বরে অবস্থিত বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনবদ্য এক নিদর্শন এ মসজিদ ও মন্দির।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দশকে কেদার মাহেশ্বরী নামে জনৈক মারওয়ারীর উদ্যোগে এখানে একটি কালীমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। মন্দিরে রাধা-কৃষ্ণের প্রতিমা এবং শিব লিঙ্গ সহাপন করা হয়। পরে মন্দিরটি সম্প্রসারিত করে রাধা-কৃষ্ণের প্রতিমা ও শিব লিঙ্গ এর জন্য পৃথক পৃথক ঘর নির্মাণ করা হয়। কালী মন্দিরের কারণে এলাকাটি ধীরে ধীরে কালীবাড়ী নামে পরিচিতি লাভ করে। এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে অটুট করতে বাংলা ১৩০৭ সালে স্থানীয় উদ্যোগে জনৈক আসান উল্লা দালালের তত্ত্বাবধানে মন্দিরের পাশে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হয়। মসজিদটি দোতলা করা হয় ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের পরে। মন্দির ও মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এলাকার ধর্মভীরু উভয় সম্প্রদায়ের লোকজন তা ব্যবহার করে আসছে স্বাভাবিক ভাবে। জানা যায়, পাশাপাশি অবসিহত মন্দির ও মসজিদদ্বয় নিয়ে উভয় সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে আজও কোন দ্বন্দের সৃষ্টি হয়নি। মন্দিরে যথারীতি পূজার পাশাপাশি প্রতি বছর মন্দির চত্ত্বরে মেলা বসে। অন্যদিকে মসজিদেও প্রতি দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি প্রতি শ্রক্রবার জুম্মার নামাজ আদায় হয়। এছাড়াও ইসলামী জলসা অনুষ্ঠিত হয় বছরে দু'একবার।
কেন বিখ্যাত/ গুরুত্বপূর্ণ
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনবদ্য এক নিদর্শন এই মন্দির ও মসজিদ। দূর-দূরান্ত থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শহর লালমনিরহাটের এ অনবদ্য নিদর্শন দেখতে আসেন অনেকেই।
যাতায়াত ব্যবস্থা
এ মসজিদ ও মন্দিরের অবস্থান একেবারে লালমনিরহাট শহরের প্রানকেন্দ্রে। গাড়ী কিংবা রিকসা করে যখন-তখন এখানে যাওয়া যায়।
হালা বটের তল
অবস্থান
জেলার একটি কিংবদন্তীমূলক স্থানের নাম ‘হালা বটের তল’। প্রায় দেড় একর জমি জুড়ে বিস্তৃত অতি পুরানো এ বটগাছের অবস্থান লালমনিরহাট পৌরসভাধীন সাপটানা (উত্তর) মৌজায় লালমনিরহাট-কুলাঘাট সড়কের উত্তর পাশে।
সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
জনশ্রুতি থেকে জানা যায় যে, বটগাছটির বয়স নূন্যতম ১৩০ বছর। গাছের নিচের ঈদের মাঠটি আরও পুরানো। পাকিস্তান আমলে (১৯৫১-৫২ খ্রিষ্টাব্দে) স্থানীয় খতি ফকির জৌনপুরের জনৈক পীর সাহেবকে এনেছিলেন ওয়াজ করার জন্য। পীর সাহেব এ গাছের নিচে বসে ওয়াজ করেছিলেন। আগত লোকজনদের ওজু করার জন্য মাঠের পাশে একটি কুয়া খনন করা হয়েছিল। কিন্তু কুয়ায় পানির অপর্যাপ্ততার কারণে ওজু করার সমস্যা সৃষ্টি হয়। এতে পীর সাহেব এক বদনা পানি নিয়ে সেটি কুয়ায় ঢেলে দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে আর ওজুর পানির অভাব হয়নি। আবার ওয়াজ শেষে খিচুরী বিতরণের সময় তাও কম হওয়ার আশংকা দেখা দিলে পীর সাহেব খিচুরীর হাড়ির মুখে ঢাকনা দেন। পরে তার নির্দেশ অনুযায়ী ঢাকনা একটু সরিয়ে খিচুরী বিতরণ শুরু করা হয়। ঐ হাড়ির খিচুরী আগত লোকজনের মাঝে বিতরণ শেষে পার্শ্ববর্তী কয়েক গ্রামের লোকজন যারা ওয়াজ শুনতে আসেনি তাদের জন্যও পাঠিয়ে দেয়া সম্ভব হয়। পীর সাহেব ওয়াজ করে চলে যান, কিন্তু ওয়াজ করার মাঠটি এলাকার লোকজনের কাছে পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হতে থাকে, সাথে সাথে সাহেবকে ছায়াদানকারী বট গাছটির প্রতিও বিশেষ সম্মান দেখানো শুরু হয়। দু'একজন এখানে এসে মানত করে সুফল পাওয়ার পর পাকিস্তান আমলেই মানতের প্রচলন হয়। আর তা ব্যাপকতা লাভ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর। এখনও প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক লোকজনকে মানতের উদ্দেশ্যে এখানে আসতে দেখা যায়।
যাতায়াত ব্যবস্থা
জেলা সদর হতে সড়ক পথে গাড়ী কিংবা রিকসা নিয়ে এখানে যাওয়া যায়।
বিমান ঘাঁটি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই রানওয়েটি ব্যবহৃত হতো
বর্তমানে এখানে বিমান বাহিনীর একটি ইউনিট রয়েছে
অবস্থান
লালমনিরহাট জেলা সদর ও মহেন্দ্রনগরের মাঝামাঝি স্থানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এ স্থাপনাটির অবস্থান।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামার সময় অক্ষ শক্তির বোমারু বিমান বঙ্গদেশের কোলকাতা ও আসামের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা চালায় ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে। অক্ষ শক্তির সামরিক অভিযান থেকে ভারতের পূর্বাঞ্চল রক্ষার্থে মিত্র শক্তির প্রধান সামরিক ঘাঁটি সহাপনের জন্য লালমনিরহাটের ‘চিনির পাথার’ এলাকাকে নির্বাচন করা হয়। চিনির পাথার ছিল লালমনিরহাট রেল ষ্টেশন থেকে মাত্র ২ মাইল দূরে এবং মহেন্দ্রনগর রেল ষ্টেশনের পশ্চিমে প্রায় ৪ বর্গমাইল এলাকাব্যাপী এক দূর্গম জঙ্গলময় সহান, যা বর্তমানে সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ও হারাটি ইউনিয়নভূক্ত। বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন অবিভক্ত ভারতের পূর্বাঞ্চল বিশেষ করে আসামকে রক্ষার জন্য লালমনিরহাট বিমান ঘাঁটিই ছিল মিত্র বাহিনীর একমাত্র ভরসা স্থল। ১৪ আগষ্ট ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর মিত্র বাহিনীর সৈন্যরা দেশে ফিরতে শুরু করে। সাথে সাথে নিসতব্ধতায় ডুবে যেতে থাকে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বলে অভিহিত এ বিমান ঘাঁটি।
এখানে ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে বিমান সার্ভিস চালু হয়। লালমনিরহাট-ঢাকা ভাড়া ছিল ৪৫ টাকা। সে সময় লালমনিরহাট-ঢাকা রেলওয়ে প্রথম শ্রেণীর ভাড়া ছিল ২২ টাকা। ভাড়া দ্বিগুনেরও বেশি হওয়ার কারণে কর্তৃপক্ষকে প্রায়ই খালি বিমান নিয়ে যাতায়াত করতে হতো। এক সময় বিমান সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ভারতীয় বোমা হামলার পর পাকিস্তান সরকার বিমান ঘাঁটির স্থাপনা সমূহ নিলামে বিক্রি করে দেয়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে লালমনিরহাটের বিমান ঘাঁটিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেড কোয়ার্টার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, কিন্তু তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। বর্তমানে বিমান বাহিনীন একটি ইউনিট এখানে অবস্থিত।
যাতায়াত ব্যবস্থা
এটি লালমনিরহাট শহরের একেবারে উপকণ্ঠে রংপুর-লালমনিরহাট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। শহর হতে বাস কিংবা রিকসাযোগে এখানে যাওয়া যেতে পারে।
চার্চ অব গড
ক্যাথলিক চার্চ
ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত লালমনিরহাট জেলা জাদুঘর
জাদুঘরে রক্ষিত কিছু প্রাচীন নিদর্শন
নব নির্মিত তিস্তা সড়ক সেতু
তিস্তা রেল সেতু
তথ্যসূএ ও ছবিঃইন্টারনেট(কপি পেষ্ট)
বাংলার গৌরব ও ঐতিহ্য (৫মকিস্তিঃতিন বিঘা করিডোর ও দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল+ তিস্তা ব্যারাজ + তুষভান্ডার জমিদারবাড়ি+ কাকিনা জমিদারবাড়ি,……)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।
ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন
কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী
ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)
সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)
সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন