বিজেপি'র মত কট্টোর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজ দলকে ভোট দেওয়ার কারণে আমরা ইন্ডিয়ানদের গাইল্লাইয়া তুষ কইরা ফেলতেছি, বিজেপি'র ডানহাত কট্টোর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস (জামাতের স্ট্রাইকিং ফোর্স যেমন শিবির) এখন পুরা ইন্ডিয়ায় বিজেপি'র সাপোর্টে মুসলমানদের মাইরা নাই কইরা দিবে বইলা হা-হুতাশ করতেছি। আমরা ইন্ডিয়ার এই ধর্মভিত্তিক দলগুলাকে দিনরাত বাপ-মা তুইলা গাইল দিলেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইস্যুতে বলি যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি জায়েজ! কিন্তু খুব সুন্দরভাবে ওভারলুক কইরা যাই যে আমরাও আমাদের দেশে জামাতের মত জঙ্গীবাদী এবং সরাসরি দেশবিরোধী দলকে ভোট দিয়া ক্ষমতায় নিয়া আসছিলাম। আমরা প্রগতিশীল বাংলাদেশীরা পুর্নিমার পুরানো রক্তাক্ত ছেড়া শাড়ীর আঁচল দিয়া মশালের সলতে বানায় সেই মশালের আগুনে এখনো হিন্দু বাড়ি আর বৌদ্ধ প্যাগোডা পুড়ায়া ঈমানের ইট শক্ত করি। সেই সলতেটাতে জীবাশ্ম জ্বালানী হিসাবে অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীর মগজ লাইগা থাকায় আগুনটাও বেশ ভাল জ্বলে। আর গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীর ছাত্ররা এসবের প্রতিবাদ করে "মুক্তমনা" ডিজিটাল বাংলাদেশের জেলে বসে পরীক্ষা দেয় ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হইয়া। হ্যাঁ, আমরা এই বাংলাদেশই চেয়েছিলাম।
একজন মানুষ সাম্প্রদায়িক হইতে পারে। সেইসব মানুষের আদর্শ লালন করা রাজনৈতিক দলটাও দাঙ্গাবাজ হইতে পারে। কিন্তু ওভারঅল একটা দেশের সব মানুষ কি সাম্প্রদায়িক হওয়ার কথা না যদি না দেশটা পাকিস্তান হয়, জন্মের পর থেকেই ধর্মরে আফিম বানায়া ওই নেশায় বুঁদ হইয়া জেনারেলের বন্দুকের সামনে নাচে। কিন্তু তারপরও জামাত-বিজেপি'র মত শুয়র দলগুলা ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ-কংগ্রেসের মত স্বঘোষিত "প্রগতিশীল" এবং একইসাথে চরম দুর্নীতিবাজ দলগুলোর কারণে। মানুষ ভোট দেয় দুর্নীতির হাত থেইকা বাঁচার জন্য, আয়ের দ্বিগুণ-তিনগুণ গতিতে বাড়তে থাকা দ্রব্যমূল্য নাগালে আনার জন্য, সারাদিন পরিশ্রমের পর ফিরার সময় রাস্তায় হাইজ্যাকার-কিডন্যাপারের এর হাতে না পইরা রাতে ছোটমাছের ঝোল দিয়া ভাত খাইয়া লোডশেডীং এর পেইন ছাড়াই বাচ্চারে কোলে নিয়া মশারী টানায় ঘুমানোর নিশ্চয়তা পাওয়ার জন্য। আমাদের দেশে এই নিশ্চয়তা যখন বিএনপি সরকার দিতে পারেনা, তখন মানুষগুলা লীগরে ভোট দেয়। আবার লীগের কাছে ধোঁকা খাইয়া বিএনপি'রে ভোট দিয়া তার সাথে জামাতের মত বিষাক্ত সাপটারেও মাথায় তুইলা নেয় বাধ্য হইয়া। এরপর যখন দুর্নীতির সাথে সাথে ফ্রী জঙ্গী হামলায় দিশেহারা হয় তখন "লীগরে ভোট দিলে মসজিদে উলুদ্ধনি শুনা যাবে" শুইনা এবং অনেকাংশে বিশ্বাস কইরাও সংখ্যাগুরু মুসলমানের দেশে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ নৌকায় সীল মারে। "নিজে বাঁচলে নাহয় পরে ধর্ম বাচামু" -এইটাই সাধারণ মানুষের চিন্তা। গণতন্ত্রের রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কোন স্থান নাই। পলিটিশিয়ানদের কাছে ইসলাম-সনাতন-বৌদ্ধধর্ম একটা ফাটকা ট্রাম্পকার্ড মাত্র, যেটা বেশিরভাগ সময়ই কাজে লাগে। কিন্তু মাঝেমধ্যে ধর্মের শাক দিয়া দুর্নীতির পচা মাছ ঢাকা গেলেও গন্ধটা আটকানো যায় না। টাকাই আমাদের নেতা আর রাষ্ট্রপরিচালকদের ঈশ্বর। আর আমজনতা যদি ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করতো, তাহলে তারা দেশ চালাতে যদি ঈশ্বরকেই চাইতো, ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্বকারী পুরুত-ইমাম টাইপ ভালমানুষদের জোর কইরা ইলেকশনে দাঁড়া করাইতো। জেনেশুনে ৫বছর পরপর প্রমাণিত চোর-বাটপার-খুনী-রেপিস্টদের ক্ষমতায় বসাতো না। গণতন্ত্রের রাজনীতিতে মানুষ ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস করতে না পারলেও শয়তানে ঠিকই বিশ্বাস করে। কারণ ঈশ্বরের দূতরা এখানে দুর্বল, কিন্তু শয়তান এখানে সরাসরি সক্রিয়। শয়তানের হাত থেকে আমাদের বাঁচাতে ঈশ্বর এখানে নেমে আসেন না, কিন্তু এক শয়তানের হাত থেকে বাঁচতে আমাদের আরেক শয়তানের কাছেই সরাসরি হাত পাততে হয়, পর্যায়ক্রমে সব শয়তানকেই কাঁধে তুলে নাচতে হয়।
হোয়াটএভার, অভিনন্দন ভারতবাসী। আমরা ভোট দিতে পারিনা, তোমরা পারো। এবং ভোটের মাধ্যমে তোমরা প্রমাণ করেছো- এইবার, মুতি ছারখার। নদীর পানি তো দিতে পারবা না, মুইতা যদি আমাদের তিস্তা-পদ্মায় কিছু পানি দিতে পারো তো দিও। না দিলেও সমস্যা নাই। আমরা এখনো "হাম দিল দে চুকে সানাম" এর মত আত্মত্যাগী ভালবাসায় বিশ্বাস করি।