somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিন্তা-১

১৯ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জুবায়ের আহমেদ

মানুষ সামাজিক জীব, সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাসের মাঝেই রয়েছে মানুষের জন্য কল্যাণ। সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাসের কারনেই মানুষ মানবিকগুণাবলীর চর্চা করতে পারে। একে অপরের সাথে সুখ দুঃখের অনুভূতি শেয়ার করতে পারে। বিপদে আপদে প্রয়োজনে কাছে ডাকতে পারে। কতটুকু কাছে পায় সেটি ভিন্ন আলাপ, তা আমার লেখার উদ্দেশ্য নয়।
যারা আমাদের আত্মীয়, প্রতিবেশী, চাকুরী কিংবা ব্যবসা সূত্রে খুবই নিকটের মানুষ। তাদের সাথে প্রথমত আমাদের স্বাভাবিক হৃদতাপূর্ণ সম্পর্কই থাকে। একসাথে চলতে গিয়ে কিংবা কাজ করতে গিয়ে অনেক সময়ই বিভিন্ন কারনে মনোমালিন্য কিংবা লাভ-ক্ষতির বিষয় নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হয়, এমনকি মামলা-মোকদ্দমাও হয়ে যেতে পারে।

এই বিষয়ে আমার ভাবনা হলো, যারা খুবই কাছের মানুষ। তাদের সাথেই যতই সম্পদ কিংবা স্বার্থ নিয়ে বিরোধ হোক, আপনি সেগুলো সামাজিক ভাবে কিংবা আইনগত ভাবে মোকাবেলা করবেন। কখনোই খারাপ আচরণ কিংবা অনেতিক উপায়ে ক্ষতিকারক কর্মকান্ডের মাধ্যমে নয়।

এর কারন হলো, এক সময় সমস্যা মিটে যায়, আবারো সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী হয়, কিন্তু মাঝখানে একে অপরের প্রতি বিশ্রি কথায় কাঁদা ছুড়াছুড়ির ফলে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা বাড়ে কিংবা পরবর্তীতে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলেও তিক্ততার সময়ের কাঁদাছুড়াছুড়ির ঘটনাগুলো যন্ত্রনা বাড়ায় সবসময়। সেই সাথে মানুষের মাঝেও ভুল বার্তা পৌঁছায়।

ব্যাপারটা এমন যে, আমার বন্ধুর সাথে ঝামেলা হয়েছে, তারপর আমি তাকে হারামখোর বললাম, বেইমান বললাম, তার পরিবার নিয়ে বাজে মন্তব্য করলাম। এক সময় সমস্যা সমাধান হয়ে গেলে। তার সাথে আবারো একটেবিলে খেলাম, তার পরিবারের সাথে মিশলাম। তখন আসলে মুখ দেখানোর পরিস্থিতি থাকে না, যদিও সমাধান হয়ে যায়। তবে কথা থেকে যায়। কারন আপনি কারো ১০ টাকার ক্ষতি করলে সে সেটা মেনে নিবে, কিন্তু তাকে যদি আপনি হারামখোর বলেন কিংবা তার ত্রুটিগুলো মানুষের মাঝে প্রকাশ করে দেন, তাহলে এগুলো মনে গেঁথে থাকে এবং এগুলোর জন্য লজ্জিত হতে হয় পরবর্তীতে।

ব্যক্তিগত ভাবে আমি পরিচিত কয়েকজন ও ফেইসবুকে কিছু ঘটনা অবলোকন করেছি, যেখানে উভয়ের মধ্যে হৃদতার সম্পর্কের এক পর্যায়ে স্বার্থ বিষয়ে তুমুল ঝগড়া সৃষ্টি হলে আইনগত ভাবে সেসব মোকাবেলা করা ছাড়াও বিশ্রি কথার লড়াই উভয়ের জন্যই বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। পরবর্তীতে আবারো দুজনের মধ্যে সমস্যা মিটে যাওয়ার পর যখন দুজনে একত্রে মিলেমিশে চলছে বা কাজ করছে, সেটা ভালো ব্যাপার হলেও মাঝখানে তাদের তিক্ততার সময়টুকুর কাঁদা ছুড়াছুড়ির ফলে অন্যদের মাঝে সহজেই ভাবনা তৈরী হয় যে, পুনরায় হৃদতায় জড়ানোর সম্ভাবনা কিংবা প্রয়োজনই যখন থাকে, তখন কেন মাঝখানে দুজনার মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে তিক্ততার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল। এসব কারনে মানুষের কাছে হাসির খোরাক হতে হয়।

বিবাদের সময়ে নিজেদের সংযত রাখার উত্তম উপায় হলো ক্রোধ ও ক্ষোভ নিবারণ করা, ধৈর্য্য ধরা। ঝামেলা মেটানোর জন্য আইনগত ভাবে কিংবা সামাজিক ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কথার লড়াই পরিহার করা। কথার লড়াই হলেও তা যেন ব্যক্তিগত আক্রমণ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা। শীঘ্রই সব সমাধান হয়ে যাবে, এই বিশ্বাস রেখে ধৈর্য ধরলে পরিস্থিতি সামলালে সমাধান হবেই। সমাধান না হলেও ব্যক্তিগত আক্রমন, চরিত্র কিংবা যেকোন দুর্বলতায় আঘাত করা পরিহার করা জরুরী।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৪
১৮৪ বার পঠিত
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

১. ১৯ শে মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

কামাল১৮ বলেছেন: যারা গালাগালি করে তারা এইগুলি মনে রাখে না।যে কোন দিন গালি দেয় না, তাকে গালি দিয়ে দেখবেন সে কখনো ভুলবে না।
গালি দিলে রাগ কিছুটা কমে।কিন্তু গালি দেয়ার অভ্যাস থাকতে হবে।ব্লগে আমাকে কতোজনে গালি দেয় কিন্তু আমি তাদের গালি দিতে পারি না।চাইলে আপনিও দুটি গালি দিয়ে পরীক্ষা করতে পারেন।

১৯ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:৪৩

লেখক বলেছেন: শুধু গালি না। মিথ্যা অপবাদ, চরিত্র নিয়ে কথা, কাঁদা ছুড়াছুড়ি সবকিছু।

২. ১৯ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:৫৬

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: প্রায় পাঁচ বছর যোগযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর গত এক বছরে আমি কয়েক জনের সাথে সম্পর্কের উন্নতি করেছি । আমি সাধারণত কারো সাথেই সম্পর্ক খারাপ করি না, একান্তই প্রয়োজন হলে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাই বা যোগযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলি, কিন্তু আমি তাদের বুঝতে দেই না যে আমি তাদের প্রতি নাখোশ।

২০ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:০১

লেখক বলেছেন: ভালো ব্যাপার। তবে নাখোশ সেটা বুঝতে দেয়াটা খারাপ নয়। কিন্তু খারাপ হলো কাঁদা ছুড়াছুড়ি করা। চরিত্র কিংবা দুর্বলতায় আঘাত করা। ঝগড়ার সময়ে এসব না করাই ভালো। আপনার মানসিকতাটাও দারুণ। শুভ কামনা।

৩. ২০ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:১৬

বিটপি বলেছেন: কামাল ১৮ এর এই মন্তব্যের সাথে আমি একমত। আমি মাঝে মাঝে উনাকে খুব অপমানজনক গালাগালি করি। করে খুব তৃপ্তি পাই। মনে হয় গালির উপযুক্ত মানুষকে গালিগালাজ করে ঠিকই করেছি। আরও শান্তি পেতাম যদি যেজন্য গালাগালি করি, সেই কাজগুলো আর না করতেন। গালিগালাজের জন্য আমার পাপ হচ্ছে কিনা জানিনা, কিন্তু কামাল ১৮ নামক কমেন্টেটরকে গালি দিয়ে খুব শান্তি পাই - এটাই আপাতত পুণ্য।

৪. ২০ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: কিছু খারাপ মানুষ সব জায়গায় থাকে।

৫. ২০ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:০৫

জগতারন বলেছেন:
এই পোস্টটি আমার ভালো লাগলো।

২১ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:২৭

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

৬. ২০ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:০৫

জগতারন বলেছেন:
এই পোস্টটি আমার ভালো লাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কামাল আতাতুর্ক: ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন ও স্বকীয়তা ধ্বংসকারী এক বিতর্কিত শাসক

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৪২

কামাল আতাতুর্ক: ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন ও স্বকীয়তা ধ্বংসকারী এক বিতর্কিত শাসক

তুরষ্কের বিখ্যাত আয়া সোফিয়া মসজিদের ছবিটি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১-১৯৩৮) তুরস্কের ইতিহাসে এক প্রভাবশালী ও বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=স্নিগ্ধ প্রহর আমার, আটকে থাকে স্মৃতিঘরে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০০


কিছু স্নিগ্ধ প্রহর স্মৃতির ঝুলিতে বন্দি রাখি,
শহরের ক্লান্তি যখন ঝাপটে ধরে,
যখন বিষাদ ব্যথা আঁকড়ে ধরে আমায়,
স্বস্তি শান্তি দিয়ে যায় ফাঁকি
ঠিক তখনি উঁকি দেই স্মৃতিঘরে,
মুহুর্তেই সময় পরিণত হয় সুখ... ...বাকিটুকু পড়ুন

নাজলী নামের মেয়েটি

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০৫

"নাজলী এখন ভালো আছে"

নাজলীর অসুখ করেছে, আকাশ পাতাল ভাবনায়
ডুবে আছে মেয়েটি।
ঢাকা শহরের উদাস হাওয়া,এলোমেলো পাগলা মিছিলের
আওয়াজে প্রকম্পিত চারদিক, তবুও ভালো আছে নাজলী নামের
মেয়েটি।

গুমোট নগরে
দু:খবোধ জন্ম নেয়, জন্ম নেয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমা করো মা'মনি

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:২৩

এখন অনেক রাত। বিছানায় শুয়ে শুয়ে আইপ্যাডে নিউজ পড়ছিলাম আর সেহরির অপেক্ষা করছি। মাগুরার ছোট্ট শিশুটির হাসপাতালে জীবন-মরন যুদ্ধের খবর বিভিন্ন পত্রিকায় দেখছিলাম। মন থেকে চাইছিলাম মেয়েটি সুস্থ হয়ে যাক।

আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন: প্রতারকদের ভীড়ে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রকৃত ভুক্তভোগীদের সহায়তা কার্যক্রম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৪


জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত হওয়ার ভুয়া দাবি করে সহায়তার টাকা নিতে গিয়ে ফাঁস হয়েছেন মামি-ভাগনে ফারহানা ইসলাম ও মহিউদ্দিন সরকার। তাঁদের জমা দেওয়া এক্স-রে রিপোর্ট যাচাই করে দেখা যায়, দুটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×