বিসমল্লাহির রাহমানির রাহিম
মৌলবাদ? সাম্যবাদ? নাকি ভ্রান্তিবাদ!!
অনেক সময়েই আমার মনে এই চিন্তাটা কাজ করে যে, আল কুরয়ানে ইহুদিদের কথা এতবার এত ভাবে, এত বেশীবার কেন বলা হল? ওরা বিচ্যুত বা ঘৃণিত এক আয়াতেই বলেদেয়া যেত! তা না করে, যায়গায় যায়গায় মূসা আঃ এর স্ট্রাগালের কাহিনী বর্ননা করা হয়েছে। এরা অপকর্ম করে, হেদায়াত পায়, অত্যাচারিত হয়, মুক্তিপায়, হেদায়াত পায়, আবার বিচ্যুত হয়ে যায়, আবার হেদায়াত পায়, অবাধ্য হয়, আশির্বাদ পায়, নাখোশ হয়, নাশাবুরি করে আবার অভিশপ্ত হয় ......... মানে এই রকম আপস এন্ড ডাউনসে ভরা তাদের সব কাহিনী। কিন্তু আমি চিন্তা করতাম মুসলমানদের এত ডিটেইল জেনে কি দরকার, আমি ভাবি হাদিসে আসতে পারতো বিষয়গুলো, সরাসরি কুরয়ানেই উল্লেখ করে, এত গুরুত্ব দেয়া হল কেন?
একদিন শুয়ে শুয়ে নিজেই বুঝতে পারলাম, কেন(?)। কারন আমাদের মুসলমানদের আর ইহুদীদের অনেক মিল। হ্যাঁ, মিল থাকতেই পারে আমরা উভয়েই ইব্রাহিমী, মিল থাকাই স্বভাবিক। কিন্তু বিষয়টা ঐটা না, বিষয়টা হল আমরা উভয়েই মনে করি, আল্লাহ বেহেশত আমাদের জন্যই বানিয়েছেন। যাই করিনা কেন শেষ পর্যন্ত বেহেশতই আমাদের ঠিকানা।
একজন ইহুদী বিশ্বাস করে যে, সে জন্ম গত ভাবেই চোজেন পিপোলদের অন্তর্গত। আফটার অল, তারা বনী ইসরাইল, তারা নবী রাসূল পরিবারের লোকজন। আর একজন ইমানদার মুসলিম চিন্তা করেন, মনে যদি বিন্দু মাত্র ইমানও থাকে, দুনিয়ায় কৃত সকল আকাম কুকামের শাস্তি, দোজখে যেয়ে ভোগ করার পরে, অবশ্যই সে বেহেশত ভোগ করবে। মানে তার আল্টিমেট চিরকালীন বাসস্থান হল বেহেশত। আজকেই যদি স্ট্যাট করেন, দেখবেন আপনার পরিচিত আশেপাশের সকল মুসলমান বেহেশতে যাবার জন্যই অপেক্ষা করছেন, ইররেস্পেক্টিভ অফ হোয়াট দে আর ডুইং। কেউ দোজখে যাবেনা। কেউ সেখানে যেতে প্রস্তুত না।
যখনই আপনি, নিজের বা অন্যকারো ব্রেইন ওয়াস করতে সমর্থ হবেন, যে বেহেশতের জমিদারী আপনার জন্য অপেক্ষা করছে, তখনই আপনি যা ইচ্ছাতাই করতে আর করাতে পারবেন, যেমন ইচ্ছে জীবন চালাতে পারবেন, যাকে ইচ্ছা তাকে ল্যং মারতে পারবেন। কারন আল্টিমেটলি বেহেশত তো আপনার হবেই। ইহুদীদের সাথে আমাদের যত মিল, তার সবচেয়ে বড় মিল এইটাই।
এই বার দ্বিতীয় বড় মিলটার কথা বলি। এটা হল আমাদের দলাদলি করার অভ্যাস। মিশরীয়দের(ফেরাউনের) মার খেতে খেতে, শেষ হয়ে দলা পাকিয়ে গেছে, তবুয় তাদের দলা দলির শেষ হয় নাই। গুটিবাজির শেষ হয় নাই। বরং দল থেকেও আরো উপদল তৈরি হয়েছে। ইয়াকুব(ইজরাইল) আঃ এর পুত্রগন যেই বিভেদ শুরু করেছিলেন, ইউসুফ আঃ এর কল্যানে তা কিছু কমলেও তা কখনই লুপ্ততো হয়নি, বরং মুসা আঃ আর হারূন আঃ এর হ্যাজার্ডের সীমা ছিলনা, তাদের নিয়ে। পরবর্তিতে অনেক মার খাবার পরে, তালুতকে এক সময় তারা তাদের নেতা মানতে বাধ্য হয়, তাও ডিভাইন ইঙ্গিতের কারনে, এরপর তালুতও বিচ্যুত হন। এবং দাউদ আঃ ও পরবর্তিতে সুলায়মান আঃ এর সময় এক শক্তিশালী রাজ্য পান তারা, যা সুলায়মান আঃ এর ওফাতের পরেই টুকরা হওয়া শুরু হয় এবং ক্রমেই বিলুপ্ত হয়। আর মুসলমানরাতো নবীজী সাঃ বলার পর দিন থেকেই মনে হয় ৭৩ দলে বিভক্ত হবার পরিকল্পনা করছে। এবং এই পরিকল্পনার মূল প্রিন্সিপালটাই হল, “আমি বা আমরা ঠিক, বাকিরা ভুল”।
আর এই দুই মিলের মধ্যে কমন ব্যাপারটা হল, “আমিই শ্রেষ্ঠ।”
তৃতীয় মিল হল নিজদের ধর্ম গ্রন্থ থেকে দূরে সরে যাওয়া। কৈ আমরা কি আর আজ কুরয়ান মানি। ইনফ্যাক্ট আমরা কি জানি কুরয়ানে কি বলা আছে?? আগেতো জানতে হবে, তারপরে না মানার ব্যাপারটা আসে। কোথা থেকে কোন ওসামা বিন লাদেন আসে, কোথা থেকে কোন আবু বকর আল বাগদাদী আসে, কোথা থেকে কোন বাঙ্গলা ভাই আসে আর তাদের দুই একটা যৌক্তিক কথায় আমাদের ব্রেইন ওয়াশ হয়ে যায়, আর আমরা যুদ্ধ শুরু করে দেই। তাদের মুখের দুই একটা যৌক্তিক কথা কুরয়ানের আদেশ গুলার চেয়ে মহান????!!!!
আমার বাঙ্গলা ভাইদের কুদান প্যাঁদানের(বাড়াবাড়ির) সময় এমনও হয়েছে যে, নিউমার্কেটে যেতেও ভয় লাগতো, কোন জটলা দেখলেই ভয় লাগত, বই মেলায় খুবি, আইমিন খুবি ভয়ে ভয়ে যেতাম, চা স্টলটার সামনেই যেতাম না, যদি কেউ দেখে, যদি আড্ডা দিতে দাঁড়াতে হয়, এই জটলার মধ্যে!! (যদিও বই মেলা থেকে সিংহ ভাগ আমি ইসলামিক বই গুলোই কিনতাম আর বাকি সব রূপকথার বই, উপন্যাস পড়ার মত ধৈর্য আমার কখনই ছিলনা) কি যে এক আতংক আমার মধ্যে কাজ করত, বলে বুঝানো যাবে না। এই গুলা কি ইসলাম?? মানুষকে নির্বিচারে মারা আর নিজে গুরুত্বহীন ভাবে মরার প্রস্তুতি নেয়া কি ইসলাম?? পাকিস্তানে, কাবুলে, কিংবা বাগদাদের বাজারে বা রাস্তায় যখন সুইসাইড বোমা ফাটে তখন ভালো, নিরপরাধ মুসলমান কি একজনও মারা যায় না?? বা অমুসলিম যাকে হত্যা করলেন, আপনি কি নিশ্চিত যে ঐ মানুষটা পরবর্তিতে ইমানদ্বার হত না?? বা ইমানদ্বার যদি কখনই নাও হয়, আপনাকে কি আল্লাহ এদের বিচার করার ক্ষমতা দিয়েছেন???
সূরা বাকারা আয়াতঃ ২৫৬
( لاَ إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِن بِاللّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىَ لاَ انفِصَامَ لَهَا وَاللّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ )
“দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত’দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।”
এখন একজন মুসলমানের নেতা যদি, ঘোষনা করে, এই এলাকার সকল খ্রীষ্টানকে মুসলমান হয়ে যেতে হবে। তাহলে উনি কি নিজেই মুসলমান কি না, তা নিয়েইতো সবার আগে কনফিউশান হওয়া উচিৎ, নাকি?
সূরা আন আম আয়াতঃ১০৭,১০৮
(وَلَوْ شَاء اللّهُ مَا أَشْرَكُواْ وَمَا جَعَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا وَمَا أَنتَ عَلَيْهِم بِوَكِيلٍ)
(وَلاَ تَسُبُّواْ الَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِ اللّهِ فَيَسُبُّواْ اللّهَ عَدْوًا بِغَيْرِ عِلْمٍ كَذَلِكَ زَيَّنَّا لِكُلِّ أُمَّةٍ عَمَلَهُمْ ثُمَّ إِلَى رَبِّهِم مَّرْجِعُهُمْ فَيُنَبِّئُهُم بِمَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ)
"যদি আল্লাহ চাইতেন তবে তারা শেরক করত না। আমি আপনাকে তাদের সংরক্ষক করিনি এবং আপনি তাদের কার্যনির্বাহী নন।
তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো না, যাদের তারা আরাধনা করে আল্লাহকে ছেড়ে। তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহকে মন্দ বলবে। এমনি ভাবে আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে তাদের কাজ কর্ম সুশোভিত করে দিয়েছি। অতঃপর স্বীয় পালনকর্তার কাছে তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন তিনি তাদেরকে বলে দেবেন যা কিছু তারা করত।"
এই আয়াত গুলো যদি আপনি মানেন, আপনি কোন বিধর্মির বিশ্বাসকে গালিগালাজ করতে পারবেন না। আর যদি তা করেন, এর বিপরীতে ঐ মানুষ যখন ভুল বশত আল্লাহকে গালিগালাজ করবে, তখন আপনি এর দ্বায় এড়াতে পারবেন না। আর কামানের গোলাদিয়ে তাদের প্রতিমা গুলো ভেঙ্গে চুর চুর করাতো অনেক দূরের ব্যাপার। এই কাজ গুলো যারা করে এবং করায় তারা কি ইসলামের মধ্যে আছে??? যদি জেনে করে, তাহলে তো অপরাধ করল আর যদি না জেনে করে, তাহলে আমি বলব এটাইতো আমাদের সমস্যা, মুসলমানদের কাজ হল জানা। এই যে আমাদের দেশে বর্তমানে প্রতিমা ভাঙ্গার নামে, যে রাজনৈতিক খেলা চলছে, কুরয়ানের শিক্ষা থাকলে কি তা করানো সম্ভব হত? বা কুরয়ান যারা জানে এগুলোকি তাদের কাজ??
সূরা তওবা আয়াতঃ ৬
(وَإِنْ أَحَدٌ مِّنَ الْمُشْرِكِينَ اسْتَجَارَكَ فَأَجِرْهُ حَتَّى يَسْمَعَ كَلاَمَ اللّهِ ثُمَّ أَبْلِغْهُ مَأْمَنَهُ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لاَّ يَعْلَمُونَ)
"আর মুশরিকদের কেউ যদি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে তাকে আশ্রয় দেবে, যাতে সে আল্লাহর কালাম শুনতে পায়, অতঃপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌছে দেবে। এটি এজন্যে যে এরা জ্ঞান রাখে না।"
যারা যুদ্ধ ক্ষেত্রে এই কোড গুলো মানে না, তারা কি ইসলামের মধ্যে আছে??? যদি নাই থাকে, কিভাবে তাদের বিজয় হবে ? এই কোড গুলোতো মুসলমানদেরই মানার কথা, ইহুদীদের না নিশ্চই!! হামাসের রকেট হামলায়, ইহুদি আবাসিক এলাকায় কোন শিশু যদি মারা যায় বা ইহুদি কোন অযোধ্যা নারী বা পুরুষ যদি মারা যায়, তবে এটা কি ঐ ইসলাম সম্মত হবে, যে ইসলাম আপনি আর আমি চাই??? জানি রেগে যাবেন আপনি অন্তত এই কথাটা শুনে। আজ থেকে কয়েক বছর আগে বললে, আমিও ভয়ানক রেগে জেতাম। একটু একটু করে কুরয়ান পড়ে অনেক দিকে চোখ খুলেগেছে। এখন মনে হয়, রকেট দিয়ে যদি যুদ্ধ করতে হয়, নিজেদের আগে রকেট বানানো শিখতে হবে, নইলে চুপচাপ বই পড়। কিসের যুদ্ধ? কিসের হাউকাউ? আগে নিজেদের জ্ঞান গরিমায় স্ট্রং কর। তারপরে সব কিছু।
সূরা বাকারা আয়াতঃ১৯৫
(وَأَنفِقُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَلاَ تُلْقُواْ بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوَاْ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ)
"আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।"
সূরা নিসা আয়াতঃ২৯,৩০
( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ إِلاَّ أَن تَكُونَ تِجَارَةً عَن تَرَاضٍ مِّنكُمْ وَلاَ تَقْتُلُواْ أَنفُسَكُمْ إِنَّ اللّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا)
(وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ عُدْوَانًا وَظُلْمًا فَسَوْفَ نُصْلِيهِ نَارًا وَكَانَ ذَلِكَ عَلَى اللّهِ يَسِيرًا)
"হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।আর যে কেউ সীমালঙ্ঘন কিংবা জুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে, তাকে খুব শীঘ্রই আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। এটা আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজসাধ্য।"
সূরা নিসা আয়াতঃ ৯৩
(وَمَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا )
"যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।"
এই আয়াত গুলো অনুসারে সুইসাইড বম্বিং কি সম্ভব ??? বা ইসলামে বৈধ, মনে করেন?? যাদের জঙ্গি বলা হচ্ছে তারা কিন্তু পশ্চিমাদের প্ররোচনায় এই কাজ গুলোই করছে।
হা বুশ, ওবামা, ব্লেয়ার, জিপি লিভিনি, বিবি নিয়াহু এরা সন্ত্রাসী এই ব্যাপারে আমার অন্তত কোন সন্দেহ নাই। তারা মিথ্যা সব ধুঁয়া তুলে নির্বিচারে মুসলমানদের মারছে, এটাও ঠিক। কিন্তু একদল ভাই যারা বিভিন্ন কারনে ভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছে, তারা, বুশ, ব্লেয়ার, আর ওবামাদের এই নিধনে পরক্ষ বা প্রত্যক্ষ সাহায্য করছে। এগুলো ভ্রান্তি, এগুলো ইসলাম না।
একটু খেয়াল করেন পশ্চিমারা কি করছে, প্রথমে কোন একটা যায়গায় তারা অত্যাচার শুরু করল, এমন অত্যাচার যে, কেউ প্রাণ, সম্পদ, প্রিয়জন বা পরিবার হারান। প্রাণ হারালে সব শেষ, সম্পদের আবারো আশা থাকে, করাও যায়, প্রিয়জন নিজের পরিবারের বাইরে হলে হয়ত কখনো মানা যায়, কিন্তু যে যুবকের প্রিয়তমা আর সন্তান মারা যায় বা যে কিশোর-কিশোরি তার মাকে বা ভাইবোনকে অন্যায় ভাবে মরতে দেখে, তাদেরকে সুইসাইড বোমার বানানো কোন ব্যাপারই না। কারন দে উইল ডু এ্যনিথিং টু গেট রেভেঞ্জ। একি ভাবে একি সময়ে পাশের গ্রামে, পাশের শহরে, পাশের দেশে তাদের এজেন্টরা ধর্মে শিক্ষা কম কিন্তু আবেগ ভালোবাসা বেশি এমন গ্রুপদের, প্রথম যায়গায় ঘটে যাওয়া ঘটনার উসিলা দিয়ে উস্কিয়ে উৎশৃঙ্খল বানাতে চেষ্টা করে, যেন ঐ নতুন যায়গাগুলাতেও আক্রমন চলনো যায়। আবার তাদের অস্ত্রের ব্যাবসা দেখেন, তারাই মুসলমানদের আক্রমন চালায় আবার তারাই মুসলমানদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে। কখন কখন আরেকজন!!!! কিন্তু এত সব ভেজালে আমরা হয়ে যাই অন্ধ। কারন জ্ঞানের আলোই তো নাই বেশির ভাগ যায়গায়।
সূরা মুজাদালাহ আয়াতঃ২১,২২
(كَتَبَ اللَّهُ لَأَغْلِبَنَّ أَنَا وَرُسُلِي إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ)
(لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءهُمْ أَوْ أَبْنَاءهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ أُوْلَئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الْإِيمَانَ وَأَيَّدَهُم بِرُوحٍ مِّنْهُ وَيُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ أُوْلَئِكَ حِزْبُ اللَّهِ أَلَا إِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ)
"আল্লাহ লিখে দিয়েছেনঃ আমি এবং আমার রসূলগণ অবশ্যই বিজয়ী হব। নিশ্চয় আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।
যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না, যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা। তিনি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। জেনে রাখ, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে।"
আপনার কি মনে হয়, যে “আল্লাহের দলের” কথা বলা হয়েছে, মুসলমানরা সেই দলে থাকবার জন্য যা প্রয়োজন, তা মেনে চলছে?? কুরয়ান মানবো না, কিন্তু ভ্রন্তিতে আক্রান্ত হয়ে, একবার রাশিয়ার সাহায্য নিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে আরেকবার আমেরিকার সাহায্য নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে, কেমনে হবে? ??? মুসলমান এমন হবে যেন সে আল্লাহের দলে স্থান পায়। আর তা পেতে হলে মাটিতে মিশে যাবে তবুয় আল্লাহের বিরুদ্ধাচরন কারীদের কখন সাহায্য নিবে না!!! খালি নামে হিজবুল্লাহ হলেই হবে?? কর্মে হতে হবে!!
শুধু নামে জিহাদ না কর্মে জিহাদ হবে মুসলমানদের। নিজের বাড়ি থেকে শুরু হতে হবে জিহাদ। নিজের বাবা সুদ খোর ঘুষ খোর হলে, তাকেও একটা সীমার মধ্যে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। এ্যটলিস্ট বুঝতে দিতে হবে যে, বাবা আমি তোমার আকাম কুকাম ঘৃনা করি।
৯/১১ যখন হয় তখন অনেক ইমমেচিউর ছিলাম। খুব খুশি হয়ে ছিলাম নাসারাদের দেশে এই ধংশযজ্ঞ হবার পরে। ভাবতাম যেই করসে খুব ভালো কাজ করসে। পরে জানলাম তালেবানরা করসে। তালেবানদের উপর খুশি হয়া গেলাম। পরে জানলাম কুকর্মটা ইহুদিদেরই। যাই হোক, যেই করুক না কেন, আমার খুশি হবার ব্যাপারটা একজন মুসলমান হিশাবে ঠিক ছিলনা!!!! কারন একজন মাসুমো কি ছিলোনা ওই খানে????
সাদ্দামকে মনে হত মুসলিম বিশ্বর একমাত্র সিংহ!! অনেক ভালো লাগতো তাকে ছোট বেলায়। তার মৃত্যুতে অনেক দুঃখ পেয়েছি। কিন্তু বলেন প্রকৃত সৎ বা ইসলামপন্থি নেতাকি উনি ছিলেন??? উনার কারনে অনেক মুসলমান কি অন্যায় ভাবে মৃত্যু বরন করে নাই, এই সব নেতাদের(গাদ্দাফি-সাদ্দামদের) কি মুসলিমদের নেতা বলা যায় ?? বাগদাদের রাস্তায় রাস্তায় নিজের বিশাল বিশাল মূর্তি তৈরি করে, এটাকি আল্লাহের দলের একজন নেতার পরিচয় হতে পারে ?
এতক্ষন যে বিষয়ের সমালোচনা করলাম তা হল ভ্রান্তিবাদ(=বুদ্ধিজীবীদের কথিত মৌলবাদ)। এই ভ্রান্তিবাদের(=বুদ্ধিজীবীদের কথিত মৌলবাদ) কারনে ইসলামের স্বর্ণযুগ নিয়েও এখন দুনিয়াভর মানুষের সমালোচনা করার সাহস হয়, যখন মুসলিমরা প্রকৃত ইসলামি মৌলবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। ইসলাম যেন আতংক আর ইসলামি মৌলবাদ হল ভুল অথবা রাক্ষস!!! কিন্তু বাস্তবতা হল মুসলিমদের ইসলামি মৌলবাদের মধ্যে আসতে হবে, ভ্রান্তিবাদ(=বুদ্ধিজীবীদের কথিত মৌলবাদ) বাদ দিতে হবে।
এখন কথা হল ভ্রান্তিবাদ (=বুদ্ধিজীবীদের কথিত মৌলবাদ) আর ইসলামি মৌলবাদের পার্থক্য কি?
একটা ছোট উদাহরন দেই, আমি যেভাবে বুঝিঃ
সূরা নূর আয়াতঃ৩১
(وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ)
“মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও”
এই আয়াতটা যদি ফলো করেন আর নারীদের পর্দা করার ব্যাপারে আপনার মনভাব যদি কঠোর হয়। তাহলে খুবই ভালো। কিন্তু খেয়াল করুন আপনি যদি এর আগের আয়াত, অর্থাৎ সূরা নূর আয়াতঃ৩০ ফলো না করেন, তাহলে ৩১ আয়াতের ব্যাপারে আপনার কঠোরতা হয়ে যাবে ভ্রান্তিবাদ(=বুদ্ধিজীবীদের কথিত মৌলবাদ)।
সূরা নূর আয়াতঃ৩০
(قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ)
“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।”
আর আপনি যদি ৩০ নং আর ৩১ নং উভয়কেই সিনসিয়ারলি বুঝে মানেন তাহলে তা হবে, ইসলামি মৌলবাদ, যা খুবই দরকার। এখানে খেয়াল করুন আগে আপনাকে বলা হয়েছে দৃষ্টিসংযত করতে, অর্থাৎ একটা মেয়ে আপনার সামনে লেগিংস পড়ে হাটছে, নাকি ন্যাংটা হাটছে, নাকি পুরা পুর্নাংগ পর্দা করে হাটছে, এটা বিবেচনা বা বিশ্লেষন করা আপনার কাজ না, আপনার প্রথম কাজ হইল নিজের দৃষ্টি সংযত রাখা। আর মেয়েটা আপনাকে যতই টেমপ্ট করুক আপনাকে আপনার যৌনাঙ্গের হেফাজতও করতে হবে। এবার আপনি ৩১ নং আয়াতের ব্যাপারে সিরিয়াস হন, নিজের বাড়ির ভিতরের মুমিন নারীদের অনুরোধ করুন পর্দা করতে। আর রাস্তায় কে কেমনে হাটছে তাতো আপনার দেখবারই কথা না, তাই না? আর তালেবানদের মত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান সবাইরে পর্দা করতে জোড় দিয়েন না, কারন ৩১নং আয়াতেই আছে মুমিন নারীদের কথা। খেয়াল করুন সাধারন যেকোন নারীদের কথাও কিন্তু বলা হয় নাই, মুমিনাদের কথা বলা হয়েছে। মদ্দা কথা হল ইসলামি মৌলবাদ হল ইসলামকে পুংখানু-পুংখ ভাবে মেনে চলা, যা খুবি দরকার।
ভ্রান্তিবাদ(=বুদ্ধিজীবীদের কথিত মৌলবাদ), ইসলামী মৌলবাদ আশা করি আজকের মত বুঝানো শেষ। এবার থাকল সাম্যবাদ। প্রকৃত সাম্যবাদ আসলে এক অবাস্তব কল্পনা। উঁচ আর নিচ থাকবেই নাহলে পানি গরাবে কিভাবে? সাম্যবাদের নামে বা সমাজতন্ত্রের নামে চীনে, কিউবায় যা আছে আর রাশিয়াতে যা ছিল তা হল, নিতান্তই জনগণকে রাষ্ট্রীয় টর্চার। এগুলো একটা কঠিন ধর্মের চেয়েও আরো অনেক কঠিন। ধরেন আপনি মেথর, ডাক্টার, ব্যাবসায়ি বা কৃষক যেই হন না কেন ৪০০ স্কয়ার ফিটের উপরে কোন বাড়িতে থাকা চলবে না। একজনের বেশি সন্তান নিতে পারবেন না। আগামী ৫০ বছর এইদেশে নতুন কোন গাড়ি কেনা-বেচা হবে না। আপনি যত দূর্বলই হন না কেন, সপ্তাহে ৮৪ ঘণ্টা কাজ করতেই হবে। আপনার প্রিয় খেলা যাই হোক না কেন, রাষ্ট্র আপনাকে যেটা ঠিক করে দিবে আপনার তাই খেলতে হবে। এগুলো টর্চারের কয়েকটা উদাহরন মাত্র!! এগুলা আমাদের দেশের সাম্যবাদী, যারা ইসলামী মৌলবাদের ব্যাপারে না জেনেই সমালোচনা করেন, তারাই সহ্য করতে পারবেন না। আর আমরাতো মানার প্রশ্নই আসে না।
সাম্যবাদের কিছুটা হলেও প্র্যাক্টিক্যাললি মানা হবে যখন আপনি মনে প্রানে ইসলামি মৌলবাদ মেনে যাবেন। তখন, প্রায় সকল মুমিন মুমিনার কাপড়ে সাদৃশ্য থাকবে, টাকাপয়সা আপনার কোন প্রিয় বস্তু হবে না, ভোগের প্রতি আপনার কোন আকর্ষন থাকবে না, আপনি ঠিক মত যাকাত দিবেন, সদকা করা হবে আপনার নিত্যদিনের ব্যাপার, আগামী কাল কি খাবেন জানবেন না, প্রতিদিন বাজারে জেতে হবে, শ্রমিকরা তাদের ঘাম শুকানোর আগেই তাদের পাওনা পাবে, উৎপাদনকারী আর ভোক্তার মধ্যে থাকবেনা কোন মধ্য স্বত্ত্ব ভোগী, রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় যিনি আছেন তাকে জনগণের সামনে প্রশ্ন করতে পারবেন, যে তার দামি দামি শাড়ি গুলো উনি কোথা থেকে পান? উনার বেতন কত? মার্সিরিজ বেঞ্জ যে জিপ গুলতে উনি চড়েন, ঐ গুলো কিভাবে কিনলেন?? ইত্যাদি।
মৌলবাদ, ইসলামি মৌলবাদ আর সাম্যবাদ এগুলো সম্পর্কে কিছুটা হলেও বুঝাতে পেরেছি, আশাকরি। এখন এই পোষ্টটা যদি এতক্ষন মন যোগ দিয়ে পড়ে থাকেন, তাহলে অনুরোধ করব, সূরা মুজাদালার ২১,২২ নং আয়ত গুলো আবার উপর থেকে পড়ে আশার জন্য।
খেয়াল করুন ২২ নং আয়াতে “হিজবুল্লাহ” বলে একটা শব্দ আছে, এটা সিরিয়া বা লেবাননের হিজবুল্লাহ মনে করলে কিন্তু ভুল করবেন। এই হিজবুল্লাহ এর মানে হল “আল্লাহের দল” যার ডেফিনিশন ঐ আয়াতেই দেয়া আছে। তা হল “যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না, যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়।”
মানে আপনি শিয়া, সুন্নি, সূফি, ওয়াহাবী, খারেজী যেই হন না কেন, আপনি কোন অন্যায় কারির বন্ধু হবেন না। আপনি তার সাহায্যকারীও হবেন না, সে হোক আপনার পিতা কিংবা পুত্র এবং আপনি নিজেও কুরয়ান এবং সুন্নাহ মেনে চলবেন। তাহলেই আপনি হিজবুল্লাহ এর একজন সদস্য এবং এই দল যে সফলকাম তাও কিন্তু এই আয়াতেই বলা আছে। ঐ যে, ঐ ফেমাস হাদিস যেখানে বলা হয়েছে ৭৩ দল হবে মাত্র একদল বেহেশতে যাবে, আমার মনে হয়, সেই একদল হল “হিজবুল্লাহ” যারা শিয়া, সুন্নি, সূফি, ওয়াহাবী, খারেজী......ইত্যাদি সকল দলেই বিদ্যমান।
গাজায় আমাদের তেমন কিছুই করার সমর্থ নাই, এটাই সত্য এটাই বাস্তবতা। সবারই অন্তর ইসরাইলীদের অত্যাচারে কাঁদছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে হিটলারের যুগে জন্মালে ইহুদীদের প্রতি অত্যাচার দেখেও আপনার এই মনই হয়ত কাঁদত। পৃথিবীর ইতিহাস এই রকম আপস এন্ড ডাউন্সের মধ্যেই চলতে থাকবে। অত্যাচারী আমরা হতে চাই না। কিন্তু অত্যাচারীত যেন না হই সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সামনেই আবার রাজনীতির বাজার গরম হচ্ছে, কেউ আওয়ামীলীগের জন্য মাঠে নামবেন, কেউ বিএনপি, কেউ জামাত, কেউ জাপা কিন্তু খেয়াল রাখবেন, মুসলমানের আল্টিমেট দল হিজবুল্লার কথা। আবারো বলছি সিরিয়া-লেবাননের হিজবুল্লাহ না, সূরা মুজাদালায় যে আল্লাহের দল বা হিজবুল্লাহের কথা বলা হয়েছে সেই হিজবুল্লাহ। যে হিজবুল্লাহের জন্য মাঠে-ঘাটে নামার প্রয়োজন নাই, দরকার শুধু সৎ কর্ম করা, অসৎ কর্মের অসহযোগীতা করা।
কেউ কেউ মনে করছেন অত্যাচারী হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাবেন, কেউ কেউ মনে করছেন মূর্খ মহিলা খালেদাকে ক্ষমতায় আসতে দিবেন না, এগুলো করে নিজেদের মধ্যে বিভেধ সৃষ্টি করে লাভ নাই। আর উনাদেরো কোন দোষ নাই, উনারা শুধুই আমাদেরই বিগার-বেটার রিপ্রজেন্টেশন মাত্র। গত ১০০ বছরে যা যা আমাদের জাতির প্রতিটা মানুষ করেছে, তারই ছবি হচ্ছেন উনারা।
সামনে তাকাতে হবে, নিজেকে ভালো রাখতে হবে, কোন ধরনের কোন খারাপকে সহায়তা দেয়া চলবে না, নতুন কোন খালেদা বা হাসিনাও তৈরি হবে না। অনেক অনেক অনেক শক্তিশালী এক মুসলিম প্রধান দেশ হবে বাংলাদেশ, যেখানে অন্য ধর্মের মানুষ থাকবে নির্ভয়ে। আর মুসলিমরা হবে এমন, যারা শুধু প্রশংসারই পাত্র হবেন।
বিঃদ্রঃ
১) একান্তই লেখকের মাথা থেকে উদ্ভুত
২) সামু রাগ করলে, কিছুই করার নাই, অনুরোধ থাকবে ডিলিট কইরেন না
৩) পাঠকরা রাগ করলে বুঝবো কিছুই বুঝাতে পারি নাই
৪) কেউ জঙ্গিবাদ খুজলে মনে করব, আমিই পাগল
৫) কুরয়ান বা হাদীসের অপব্যাখ্যা করা হয় নাই, কারো পছন্দ না হলে বুঝতে হবে, লেখক কিছুই বুঝে নাই
৬) কোন সুশিল বা নেতা নেত্রীকে খাটো করাত উদ্দেশ্য ছিলনা, হইলে কিছু করার নাই
৭) হয়ত অনেক দিন ব্লগ লিখবনা
উৎসর্গঃ গাজার সবাই, সামুর সবাই বিশেষ করে ব্লগার ডাঃ নার্গিস পারভীন।
আসসালামুয়ালাইকুম!!
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:২০