আমাকে যদি কেউ প্রশ্ন করে জীবনের সুন্দর সময় গেছে কখন- আমি নির্দ্বিধায় উত্তর দেবো ছাত্র জীবন। এই সময়ে বাস্তব জীবন নিয়ে ভাবতে হয়েছে কম, বাবার হোটেল ছিল, সেই হোটেলে নিশ্চিন্তে জীবন-যাপন করেছি। বি ফার্ম শেষ হয়ে যাবার পর কিছুদিন বুঝতে পারিনি কি করবো? তারপরই বাস্তবতা সামনে চলে এলো- একটা চাকুরী দরকার!
আমাদের দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় আন্ডার গ্র্যাজুয়েশন বা অনার্স শেষ করেই একজন ছাত্র সাধারণত চাকুরী পাবার যোগ্যতা অর্জন করে। তাই এ সময়ে খুব সাবধানে নিজের ক্যারিয়ার ভবিষ্যত নিয়ে ভাবা উচিত। এবং সেই অনুযায়ি নিজেকে প্রস্তুত করা জরুরী।
ধরুন আপনার অনার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষা দেয়া হয়ে গেছে। কি করবেন?
«« আপনি যে ডিসিপ্লিনে পড়ালেখা করছেন সেই ডিসিপ্লিনে অনার্স করে চাকুরী পাওয়ার সম্ভাবনা কেমন? যদি ভালো হয় তবে জবের জন্য অ্যাপ্লাই শুরু করুন।
এ জন্য আপনার যে অস্ত্রগুলো লাগবে তার ভেতর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে একটা সি ভি এবং কাভার লেটার।
ᴥ কিভাবে লিখবেন সি ভি? ● লিংকঃ সাধারণ গাইডলাইন ● লিংকঃ সিভি স্যাম্পল
ᴥ কিভাবে লিখবেন কাভার লেটার? কাভার লেটার হচ্ছে জবের জন্য একটা এপ্লিকেশন। ● লিংকঃ সাধারণ গাইডলাইন ● লিংকঃ কাভার লেটার স্যাম্পল
বি.দ্র. আমার মতে প্রথম জবের জন্য সব পাথর সরিয়ে দেখাই যুক্তিযুক্ত। হতে পারে আপনি খুব ভালো ছাত্র। কিন্তু তাই বলে নাক উচু হওয়ার প্রয়োজন নেই। অ্যাপ্লাই করুন, লিখিত পরীক্ষা দিন, ভাইভা ফেস করুন। আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে। কোন ক্ষতি হবেনা।
«« আপনি যে ডিসিপ্লিনে আছেন সেই ডিসিপ্লিনে যদি অনার্স করেই জবের খুব একটা সুযোগ না থাকে তাহলে মাস্টার্স শুরু করা উচিত। দেরি করবেন না।
«« যে সময়টাতে জব খুঁজছেন সেই সময়টাতে আপনার হাতে কিছু সময় আছে। এই সময়টাকে কাজে লাগান। কিভাবে কাজে লাগাতে পারেন?
যদি আপনার বাইরে পড়তে যাবার ইচ্ছা থাকে এবং সুযোগ থাকে তাহলে আপনি- আইইএলটিএস , জিআরই , টোফেল করতে পারেন।
এগুলো মুলত ইংলিশ স্পিকিং কান্ট্রিতে যাবার জন্য প্রয়োজনিয়। কানাডা এবং আমেরিকাতে যাবার ইচ্ছা থাকলে জিআরই, টোফেল পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়া উচিত। ইউকে, অস্ট্রেলিয়া বা অন্য দেশ যেগুলোতে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি সেগুলোর জন্য আইইএলটিএস-এ ভালো স্কোর থাকতে হবে।
কিছু কিছু দেশে পড়তে যাবার ক্ষেত্রে ঐসব দেশের ভাষা জানা থাকা আপনাকে বাড়তি সুবিধা দেবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- জাপান, জার্মানি, ফিনল্যান্ডের নাম। আবার কানাডা যেতে চাইলে ফ্রেন্চ শিখলে বাড়তি সুবিধা পাবেন।
বাংলাদেশে জাপানিজ ল্যাংগুয়েজ কোর্স করতে পারেনঃ
● ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে Institute of Modern Languages
● স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে জাপানিজ ল্যাংগুয়েজ কোর্স
এছাড়া আরো থাকতে পারে আমার জানা নেই!
বাংলাদেশে জার্মান শিখতে পারেনঃ
● গ্যোথে ইন্সটিটিউট
ফ্রেন্চ শিখতে চাইলে প্রথম পছন্দ রাখা উচিত আঁলিয়াস ফ্রসে । এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়তো আছেই! নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইন্সটিটিউট অব মডার্ন ল্যাংগুয়েজে ও ভর্তি হতে পারেন।
বাংলাদেশে কোথাও ফিনিশ ভাষা শেখা যায় কিনা আমার জানা নেই।
«« যারা একাডেমিক দিকে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ার কথা ভাবছেন তাদের জন্য কিছু উপদেশঃ
যেহেতু আপনি ভবিষ্যতে একজন একাডেমিশিয়ান হওয়ার কথা ভাবছেন, স্বপ্ন দেখছেন সেহেতু আপনাকে পড়ালেখায় মনোযোগী হতে হবে এটা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। যদি আপনি গবেষণা ভিত্তিক কোন বিষয়ে পড়ালেখা করেন (ফার্মেসি, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমেস্ট্রি ইত্যাদি) তাহলে নিজেকে গবেষণাধর্মী কাজে নিয়োজিত করতে পারেন। আপনার ডিপার্টমেন্টে বড় ভাই-আপু যারা মাস্টার্স বা অনার্সে প্রজেক্ট বা থিসিস করছেন তাদের কাজে সহায়তা করতে পারেন। তবে এখানে নিজের আগ্রহ খুবই দরকারি।
তবে এসব ক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত কোনভাবেই রেগুলার পড়ালেখাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবেনা আর বড় ভাই-আপুর কাজে সমস্যা সৃষ্টি করা যাবেনা।
নোটঃ
ডিপার্টমেন্টের সিনিয়ারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। সব সময় সিভি আপডেট করুন। স্টুডেন্ট লাইফ এবং প্রফেশনাল লাইফ সম্পূর্ন আলাদা।
পুনঃ নোটঃ
পড়ালেখা শেষ করে আপনি নিজে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বন্ধুরা মিলে নিজেদের ফার্ম খুলতে পারেন।
পুনঃ পুনঃ নোটঃ
ডেস্টিনি বা এ জাতিয় বিষয়াদি থেকে নিজেকে শতহাত দূরে রাখুন। নিজে এমন কোন কিছুর সাথে জড়াবেন না, অন্যকেও নিরুৎসাহিত করবেন। কাছের খুব ভালো বন্ধু হলে প্রয়োজনে ধরে বেঁধে এসব থেকে দূরে রাখুন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাঃ নিজের উপর আস্থা হারাবেন না। আত্মবিশ্বাসি হোন। মনে রাখবেন বরফ থেকেও কিন্তু আগুন জ্বালানো সম্ভব যদি আপনি কায়দাটা জানেন।
এই ধরণের পোস্ট সম্ভবত সবকিছু কাভার করে লেখা প্রায় অসম্ভব তাই অনেক বিষয় চোখ এড়িয়ে যেতে পারে। মতামত জানালে তা পোস্টে যোগ করে দেবো।