একটি বছর ঘুরে আবারও রহমাত, বরকত ও নাজাত নিয়ে এসেছে পবিত্র মাহে রমজান। এ মাস মুসলিমদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার। রাসুল স. সুসংবাদ দিয়ে বলেছেন, এ মাসে জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানকে আবদ্ধ করে রাখা হয়।
অন্যান্য বছর থেকে এবছর রমজান মাস অনেকটা ভিন্ন আমেজে কাটবে মুসলিম উম্মাহর। ইতিহাসে এমন রমজান এই প্রথম। এবার মসজিদগুলোতে দেখা যাবে না আগের মতো তারাবি নামাজ, জমজমাট আয়োজন করে ইফতার ও ইবাদাতের দৃশ্য।
রমজান মাসে সাধারণত যোহরের নামাজের ওয়াক্ত থেকেই মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের আনাগোনা বেড়ে যায়। শুধু বড়রা নয়, কোরআন বুকে নিয়ে মসজিদে উপস্থিত হয় মহল্লার ছেলে-মেয়েরা। তারা কোরআন খতম করে এবং এর সওয়াব মাসের শেষ দিকে ইমাম সাহেবের দ্বারা তাদের মৃত আত্মীয়-স্বজনদের নামে উৎসর্গ করা হয়।
এই মাসে বড়দের সঙ্গে মসজিদে ছোটদের ব্যাপক উপস্থিতি বেড়ে যায়। ফজরসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই তারা মসজিদে এসে জামাতের সঙ্গে আদায় করে। বাবার হাত ধরে শিশুরা জামা টুপি পরে সুগন্ধি আতর লাগিয়ে উপস্থিত হয় মসজিদে। শুধু তাই নয়, অনেক ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও রোজা পালন করে।
মসজিদের মেম্বার থেকে ইসলামের অমীয় বাণী শোনান ইমামগণ। ইফতার ও তারাবির আগে অনুষ্ঠিত হয় সম্মিলিত দোয়ার আয়োজন। এমন ইবাদাতে প্রশান্তি খুঁজে পান ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ। কিন্তু এবার মসজিদগুলোতে আর জমজমাট ইবাদাতের দৃশ দেখা যাবে না। দেখা যাবে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে নামাজ আদায় ও সম্মিলিত ইফতারের সেই দৃশ্য। শাব্দিক অর্থেই মসজিদগুলোকে দেখা যাবে নির্জীব। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তারাবি নামাজে অংশ পারবেন মাত্র ১২ জন মুসল্লির।
রমজানে মসজিদে নামাজ আদায়, সম্মিলিত ইফতার ও কোরআন তেলাওয়াতের মতো ইবাদগুলো করতে পারবেন না দেখে মন খারাপ করছেন সব শ্রেণির মানুষ। আমাদের এভাবে মন খারাপ করে বসে থাকলে চলবে না। আমাদেরকে ঘরেই কোরআন পাঠ, তারাবি আদায়, তাসবিহ আদায়সহ সব ইবাদাত চালিয়ে যেতে হবে। রমজান মাস দোয়া কবুলের মাসও। অতএব এ মাসে আমাদের বেশি বেশি দোয়া করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা করোনাভাইরাসের এই বিপদ থেকে দ্রুত আমাদের উঠিয়ে নেন। আমীন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:৩৪