সচলায়তন থেকে হুবহু কপিকৃত
প্রিয় টাইগাররা,
শুভেচ্ছা নিও। কেমন আছো তোমরা, আশা করি ভালো। আমাকে তোমরা চিনবে না, আমি দেশের আরোও ১৬কোটি জনতার মতো সাধারণ একজন মানুষ। তোমাদেরকে তুমি করেই বলাতে আশা করি রাগ করোনা। কারণ বয়েসে সবাই আমার ছোটই হবে। আর আপনজনদেরকে তুমি করে বলাতে কোন দোষ নেই। দেশের মাটিতে প্রথম বিশ্বকাপ আর তোমরা ১৫জন সেই গর্বিত বিশ্বকাপ দলের সদস্য। তোমাদের সাফল্যে আমরা গর্বিত হই, তোমাদের ব্যর্থতায় আমরা মুষড়ে পরি আবার পরক্ষণে আশায় বুক বাধি।
যাই হোক যে কারণে এই চিঠিটি লিখা, সম্প্রতি ওয়েষ্ট ইণ্ডিজের সাথে ৫৮ রানে অল আউট হওয়ার পর আমাদের দেশের ক্রিকেট বোদ্ধা, প্রাক্তন খেলোয়াড়, সমালোচক, আলোচক সহ বিভিন্ন সাধারণ মানুষও বিশেষজ্ঞ মতামত দিচ্ছেন, কেউ কেউ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করছেন, কেউ কেউ বানিয়ে বানিয়ে অনেক কাহিনী লিখছেন। আমার ব্যাক্তিগতভাবে বেশী খারাপ লেগেছে প্রাক্তন ক্রিকেটারদের সমালোচনায়। প্রাক্তনদেরকে বলতে চাই, বড়ভাইরা, আপনার নিজেরোতো দীর্ঘদিন ক্রিকেট খেলেছেন, জানেনইতো ক্রিকেট মাঠে কিভাবে চাপ থাকে, জানেনইতো সবসময় ভালো রেজাল্ট আশা করা যায় না। সব কিছু জেনেশুনে কেন এভাবে ছোটভাইদের সমালোচনা করছেন, আপনাদের উচিত এখন এদের পাশে এসে দাড়ানোর।
আর আমি তোমাদের বলতে চাই, দয়া করে এসবে কান দিও না। তোমরা তোমাদের নিজেদের মতো করে খেলে যাও। কে কি বললো তাতে কিছু যায় আসে না। পত্রিকার রিপোর্টাররা যারা বড় বড় কথা বলছেন, তাদের৩৩ জনকে মাঠে নামিয়ে দেখো, সবাই মিলেওতো মনে হয় ওয়েষ্ট ইণ্ডিজের সাথে ১০ রানের বেশী করতে পারবে না। সুতরাং এই সব আজে বাজে কথায় কান না দিয়ে নিজেদের খেলাটা উপভোগ করো। আমরা ১৬কোটি মানুষ তোমাদের সাথে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। তোমরাতো শেষ পর্যন্ত আমাদেরই ভাই, সন্তান, আত্নীয়। যত যাই হোক আমরা আছি তোমাদের সাথে। তোমরা যদি ভবিষ্যতে ১রানেও কখনো অলআউট হয়, তারপরেও মনে রেখো এই ১৬কোটি মানুষ তোমাদের সাথে থাকবে। কারণ দলটা যে আমাদের প্রিয় দেশের। এটা যে বাংলাদেশের ক্রিকেট দল। এই দলটাতো আমারই দল, আমাদেরই দল। এই দেশ ছেড়েতো আমি আর কোথাও যেতে পারবো না।
পুরনো কথা ভুলে সামনে এগিয়ে যাও। সামনে গ্রুপ পর্বের আরোও তিনটি খেলা বাকী। কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে হলে ২টিতে অন্তত জয় দরকার। আমি জানি তোমরা পারবে। তোমরা বাংলার দামাল ছেলে। তোমাদের অসাধ্য কিছু নাই। বাইরের কথা কান থেকে মুছে খেলায় মন দাও। মাঠে গিয়ে খেলা উপভোগ করো। সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যায় পড়লে নিজের বাবা-মা আর যারা ঈশ্বর বিশ্বাস করো তারা ঈশ্বরের কথা স্মরণ করো। সামনে রাস্তা একটা না একটা পাবেই পাবে। সব সময় মনে রেখো এই ১৬কোটি মানুষ তোমাদের সাথে চিরকাল থাকবে। এটাকে কোন চাপ মনে করোনা। তারা তোমাদের দলের অংশ হয়েই থাকবে।
দু’একটা বিছিন্ন ঘটনা ঘটতেই পারে, এগুলোকে পাত্তা দিও না। সামনে জয় আমাদের সুনিশ্চিত। তোমাদের গর্জন বিশ্বকে আবার শোনাও। আমাদের কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান থেকে চারটি লাইন দিয়ে শেষ করছি-
“যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে-যাওয়া গীতি,
অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক।।
মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।”
ভালো থেকো।
ইতি
সুপ্রিয় দেব শান্ত
আসল পোষ্ট