বিশ্বকাপের আর মাত্র ৯ দিন বাকি । আমার মতে বর্তমান বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম অতীতের সববারের চেয়ে বেশী শক্তিশালী।
বিশ্বকাপ শুরু হবার আগের ম্যাচগুলোর পারফরম্যান্সও অতীতের সববারের চেয়ে ভাল। আমরা নিউজিল্যান্ডের মত টিমকে হোয়াইটওয়াশ করেছি , জিম্বাবুয়ের সাথে সিরিজ জিতেছি, ওয়েষ্ট ইন্ডিজকে টপকে দখল করে নিয়েছি ৮ নম্বর পজিশন, রয়েছে উইজডন বর্ষসেরা ক্রিকেটার তামিম ইকবাল, রয়েছে বোলিং এ ৫ নম্বর এবং ১ নম্বর অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এক অন্য রকম দল।
কিন্ত সবকিছু ছাপিয়ে পুরো টিমের মধ্যে তৈরি হচ্ছে একটা চাপা উত্তেজনা। যার মুল হোতা মাশরাফি এবং মিডিয়া। এই মিডিয়ার কারনে কোচ, নির্বাচক এবং খেলোয়াড়দের মাঝে দুরুত্ব ধীরে ধীরে বাড়ছে আর কমছে পারস্পরিক আস্থা।
টিম যত ভালোই হোক না কেন, কোচ এং খেলোয়াড়দের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা না থাকলে সেই টিমের পক্ষে ভালো করা কখনও সম্ভব না
এই মুহুর্তে দলে একটা শৃংখলা প্রয়োজন। কিন্তু মাশরাফি এবং মিডিয়ার কারনে সেটা নষ্ট হচ্ছে ।
আর আমাদের দোষও কম না। মাশরাফিকে বাদ দেয়ায় আমরা মিছিল মিটিং করেছি। কেন করেছি ? তখন তো মাশরাফি ইনজুরড় ছিল । সে এক সময় ভালো খেলত এজন্যে তাকে আমরন খেলায় রাখতে হবে ? খেলায় চান্স পেতে হলে যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে আসতে হবে । ২ বছর আগে ভালো খেলতাম বলে আমাকে ২ বছর পর বিশ্বকাপে চোখ বন্ধ করে নিতে হবে ?
আর মাশরাফিকে আমি রুবেল, কিংবা শফিউলের চেয়ে খুব একটা ভালো বোলার বলি না। হয়ত সে এক সময় ভালো বোলার ছিল। তখন এত ভালো পেসার ছিল না। এখন এসেছে। মাশরাফি চাপে পড়ে কখনও ভালো বোলিং করতে পারে না। তার বড় একটা প্রমান আইপিএলে।
মাশরাফি এমনিতে সুস্থ থাকতেই কয়েক ওভার বোলিং করেই ইনজুরড হয়ে যায়। আর এইবারতো সদ্য সুস্থ আনফিটই বলা যেতে পারে । ওকে দলে নিলে আরেকজন পেসার বাদ দিতে হবে । তখন খেলার মাঝে যদি ৩ ওভার বোলিং করে ধরাধরি করে ওকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় তখন খেলার কি অবস্থা হবে ? হয়ত তখন জেতা কোন ম্যাচ আমরা হেরে আসব।
আমার খুব খারাপ লেগেছে যেদিন মাশরাফি বাদ পড়ার ঘোষনার দিন টিভিতে দেখলাম মাশরাফি কান্না করছে। একটা খেলোয়াড় এত দিন খেলার পর তার মধ্যে প্রফেসনালিজম তৈরী হল না। তার এই কান্নাটা অন্যান্য খেলোয়াড়দের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলেছে অবশ্যই। খেলা তথা জাতির বৃহত্তর স্বার্থে তাকে ঐ ডিশিসনটা হাসিমুখে মেনে নেয়া উচিৎ ছিল। হয়ত এই কান্নার কারনেই বাংলার জন গনের সিমপ্যাথি পেয়েছিল। মিছিল মিটিং হয়েছিল। নড়াইলে হরতাল হয়েছিল।
এই বিশ্বকাপে শুধু মাশরাফিই নয় তার চেয়েও বাঘা বাঘা খেলোয়াড় এইবার ইনজুরির কারনে বাদ পড়ছে। এর মধ্যে অন্যতম মাইক হাসি, জয়সুরিয়া, ভাস। এরা সবাই তাদের নিজ নিজ দেশের রত্ন । তাদের যখন বাদ দেয়া হয় তখন তারা হাসি মুখেই সেটা মেনে নিয়েছিল। হয়ত তারা কষ্ট পেয়েছিল ঠিকই সেটা মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করেনি।
একজন খেলোয়াড় ভালো খেললেই তাকে ভালো খেলোয়াড় বলা যায় না। তাকে অবশ্যই কোচ , টিম ম্যানেজমেন্ট এবং অন্যান্য খেলোয়াড়দের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
মাশরাফির উচিৎ ছিল কোচের সিদ্বান্ত হাসি মুখে মেনে নেয়া। উনি তো খারাপ কিছু বলেনি। ১৫ জনের বাইরে উনি চিন্তা করবেন কেন ? তার দায়িত্ব ১৫ জন নিয়ে।
মিডিয়ার লোকজন এবং ব্লগারদের বলছি মাশরাফি এমনিতেই মানষিকভাবে দুর্বল হয়ে আছে। তার কাটা ঘায়ে খুচিয়ে দলের মধ্যে আর বিশৃংখলা তৈরি করবেন না।