আমাকে আর কখনো খুঁজো না তুমি, আমি আমার মতোই
নিভৃতে থাকতে চাই, ভালো লাগে না লিলিয়াকের
নেশা ধরানো গন্ধ, মলিন হয়ে যাওয়া তেল চিটচিটে ডায়েরীর পাতায়
টুপ করে ঝরে পড়া এক ফোটা অশ্রু বিন্দু। আমি যেন কেমন হয়ে গেছি
জানো, মনে হয়- ঘুমিয়ে গেছি কোথাও, দ্বিতীয় কোন জগতে,
... যেখানে কখনো ছিলোনা তোমার কোন অবয়ব- আমি এখনো ঘুমাই,
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে জেগে উঠি, মনে হয় সহস্র বছর শেষে উঠে এসেছি কবর থেকে,
কালো, শীর্ণ সাপের মতো, তোমার শরীরের গন্ধ মিশে গেছে
রজনীগন্ধার সাথে হয়তোবা, আমি জানি না
আমি আরও অন্ধকার চাই, দলা পাকানো একটা গুমোট অন্ধকার;
আমার আর ভালো লাগে না জোনাকি, ওরা বরং তোমার কাছেই
ঘুরঘুর করুক, আমি খুঁজে নেবো বরং মৃত শামুকের খোলস- শেষকৃত্যহীন,
তার পচা গলা দেহটা তো শেষ হয়ে গেছে কবে,
তাতে গুটিসুটি মেরে জায়গা করে ঘুমিয়ে পড়তে পারবো আমি; ঘুমিয়ে পড়তে আমার বড় ভালো লাগে।
আমি ভুলে গেছি পুরনো স্মৃতিগুলি, যেখানে তোমার দীর্ঘশ্বাসের শব্দ আজও
ফুল হয়ে ফোটে। তারা ভরা রাতে, প্রাচীন অশথ বৃক্ষের মতো
ডালপালা-ঝুরি নামিয়ে দিয়ে কোন এক কালে,
হয়তো ভালবেসেছিলাম তোমায়, সে ভালোবাসা শেষ হয়ে গেছে,
পচা গলা শামুকটার দেহের সাথে,
আমি তখনো ঘুমিয়ে ছিলাম সত্যি, যখন তুমি ডেকে ডেকে গিয়েছিলে
জোনাকিপোকা আর তারা ভরা আকাশ, আমাদের গল্প শোনাবার ফাঁকে। আমি
অনেক আগেই কেমন হয়ে গেছি, আমি আর আমার আমি নেই,
হয়তো জেগে আছি অন্য কোথাও- আমি চিনি না, তবু ঘুমিয়ে গেছি তোমার বইয়ের পাতা থেকে।
আমাকে আর খুঁজতে এসো না কখনো,
আমি ভুলে গেছি তোমার দীর্ঘশ্বাস, সহস্র বছরের পুরনো
অশ্বথ, আর তারা ভরা রাতে জোনাকিদের বলে যাওয়া তোমার আমার গল্প।