স্টেম সেলের মাধ্যমে জন্মান্ধতা সহ চোখের ছানি পড়া, ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু, ত্রুটিপূর্ণ লেন্স ইত্যাদির চিকিৎসা হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে নবজাতক ও খরগোশের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা এমনটাই বলছেন। স্টেম সেল হচ্ছে দেহের বিশেষ ধরনের কোষ, যারা প্রয়োজন অনুসারে যেকোনো কোষে রূপান্তরিত হতে পারে।
ঠিকঠাক ও ত্রুটিহীনভাবে দৃশ্য দেখতে হলে চোখের লেন্স ও লেন্সের উপরের টিস্যুর আবরণ কর্নিয়া অবশ্যই স্বচ্ছ হতে হবে। স্বচ্ছতায় ঘাটতি দেখা দিলে পরিষ্কারভাবে দেখতে সমস্যা হয়। যাদের চোখের লেন্স বা কর্নিয়ায় অস্বচ্ছতা আছে তাদের এই ত্রুটি সংশোধনের জন্য কৃত্রিমভাবে ইমপ্ল্যান্ট করতে হয় নয়তো কারো দান করা চক্ষু প্রতিস্থাপন করতে হয়। এই দুই প্রক্রিয়াই একে তো কিছুটা বিপদজনক তার উপর এগুলো সবচেয়ে ভালো সমাধানও নয়- এমনটাই বলেন গবেষকেরা।
নতুন গবেষণায় গবেষকেরা ২ বছরের নিচের ১২ টি শিশুকে নিয়ে পরীক্ষা করেন। এদের সবাই জন্ম থেকে চোখের ছানি সম্পন্ন। এই ছানি শিশু বয়সে অন্ধ হয়ে যাবার প্রধান কারণ। গবেষকেরা সার্জারির মাধ্যমে শিশুদের ছানি সরিয়ে খুব সতর্কতার সাথে লেন্স এপিথেলিয়াল স্টেম (lens epithelial stem cells) নামে কিছু কোষ ছড়িয়ে দেন। এই স্টেম কোষেরা পরবর্তীতে পরিবর্তিত ও পুনরুৎপাদিত হয়ে চোখের লেন্স গঠন করে।
স্টেম কোষ প্রয়োজন অনুসারে ভিন্ন কোষে রূপান্তরিত হতে পারে। ছবিঃ উইকিমিডিয়া কমন্স এর সৌজন্যে।
গবেষকদের হিসাব মতে এই চিকিৎসায় নবজাতকেরা ১ মাসের ভেতরেই সুস্থ হয়ে ওঠে। এই স্টেম কোষ সার্জারির ফলে ছানি পড়া চোখের তুলনায় ২০ গুণ পরিষ্কার স্পষ্ট দেখতে পায়।
এর আগে কখনো স্টেম কোষের মাধ্যমে চোখের লেন্স পুনর্গঠন করা হয়নি। প্রথমবারের মতো এমন একটি চমৎকার কাজ করে গবেষণার প্রধান ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির চক্ষু বিশেষজ্ঞ ড. কাং ঝাং বলেন “আমরা আমাদের শরীরের প্রয়োজনে যেকোনো ধরনের কোষ উৎপাদন করতে নিজেদের শরীরের স্টেম কোষ ব্যবহার করতে পারি।” চোখের জন্য প্রয়োজন হলেও ব্যবহার করা যায়।
প্রতিদিন বিজ্ঞান বিষয়ক আপডেটেড খবর পেতে বিজ্ঞান পত্রিকা পড়ুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৮:১৬