হাবল স্পেস টেলিস্কোপের নাম আমরা সবাই শুনেছি। পৃথিবীপৃষ্ঠে টেলিস্কোপ বসালে বায়ুমন্ডলের নানাবিধ প্রতিবন্ধকে এর তথ্যে বিচ্যুতি ঘটে। তাই রকেটে বহন করে নিয়ে গিয়ে মহাশুন্যে টেলিস্কোপ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৯৯০ সালে হাবল টেলিস্কোপ স্থাপনের পর গত দুই যুগে এর মাধ্যমে আমদের মহাবিশ্ব সংক্রান্ত জ্ঞান কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে হাবল থেকে আর বেশী কিছু পাওয়ার নেই তাই একে প্রতিস্থাপন করতে আসছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (James Webb Space Telescope বা JWST, প্রথম চিত্র)। এগুলো সবই প্রতিফলক টেলিস্কোপ। এর আগে আমরা রেডিও টেলিস্কোপ তথা ডিশ এন্টেনার ক্ষেত্রে দেখেছি এর থালাটি যত বড় হবে ততই সিগন্যাল গ্রহন ও প্রতিফলন করে তা কেন্দ্রীভুত করতে পারবে বেশী।
প্রতিফলক টেলিস্কোপগুলো এই মূলনীতিতেই কাজ করে। তবে হাবল বা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপগুলোকে রেডিও টেলিস্কোপের তুলনায় অনেকবেশী নিখুঁত হতে হয় এবং এর গোলীয় প্রতিফলক পৃষ্ঠটি যথাযথভাবে মসৃন হতে হয় কেননা এরা দৃশ্যমান আলো কিংবা অবলালের সীমায় কাজ করে। অর্থাৎ এই টেলিস্কোপগুলো অবলাল ও দৃশ্যমান আলোর সংকেত গ্রহণ করে তা বিবর্ধিত করে এবং সংকেতটি একটি প্রকৃত ছবি হিসেবে পাওয়া যায়। টেলিস্কোপের আয়নায় প্রতিফলিত আলো এর সামনের দিকে স্থাপিত একটি উচ্চ রেজুলেশন বিশিষ্ট্য ডিজিটাল ক্যামেরায় আপতিত হবে যেখানে এর ছবি তুলে ও পরবর্তীতে তা বিবর্ধিত করে দেখা হবে।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের (JWST) প্রতিফলক পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল ২৫ বর্গমিটার, অপরদিকে হাবলের প্রতিফলক পৃষ্ঠটি ছিলো ৪.৫ বর্গমিটার (চিত্রে এই দুইয়ের আয়নার তুলনামূলক আকার দেখানো হলো)। বোঝাই যাচ্ছে নতুন টেলিস্কোপটি আগের তুলনায় সাড়ে পাঁচগুণ বেশী দুর্বল সংকেতকেও একই পরিমান বিবর্ধিত করতে পারবে। অথচ JWST এর ভর হবে হাবলের অর্ধেক। তবে এই বিশাল চওড়া জিনিসটিকে মহাশুন্যে পাঠানো একটা ঝকমারী ব্যাপার। তাই এটিকে কয়েকটি ষড়ভুজাকার প্যানেলে ভাগ করে সেই অনুযায়ী ভাঁজ করে রকেটে বহন করা হবে।
JWST কে ২০১৮ সালের অক্টোবরে আরিয়েন ৫ রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
প্রতিদিন বিজ্ঞান বিষয়ক হালনাগাদ খবর পেতে বিজ্ঞান পত্রিকা পড়ুন।
http://bigganpotrika.com/
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:০২