এই বেনিয়া বিশ্বে আমরা সবাই বেশ্যা!
কেউ যোনী- কেউ মন, কেউ বুদ্ধি- কেউ শ্রম।
এখানে সবই পসরা সাজিয়ে অপেক্ষায় থাকে,
এখানে সবাই যার যার সাঁঝে,
বিশ্রামের সূর্যটুকু নিভিয়ে দিয়ে এক ফুঁয়ে
অবলীলায় মেলে ধরে-
শরীরী ও অশরীরী কামের নির্লজ্জ বিপণি সম্ভার!
এখানে সবকিছু বিক্রয়যোগ্য হতে হবে,
এখানে সবার সব কিছুর বিনিময় মূল্য থাকতে হবে!
বহুদূর হেঁটে আসা এক বিন্দু হিম জল-
সেও তার পাওনা মিটিয়ে নেয় এক বুক তৃষ্ণার দামে,
এখানে প্রতি আউন্স আনন্দের বিপরীতে-
ভারনিয়ার স্কেলে মেপে দিতে হয় চুল চেরা দুঃখের গতিপথ!
এখানে আবার কেউ কেউ কখনও কখনও-
আকাশের সুনীল স্বপ্নে ধোঁকা খেয়ে দুঃখের বিনিময়ে দুঃখ কিনে ঠকে যায়,
দিকভ্রান্ত দেউলিয়া অভিমানে ঘুরপাক খেতে থাকে সুতোছেঁড়া ঘুড়ি মতন!
এখানে ভালোবাসার বিনিময়ে ভালোবাসা জরুরী নয়,
প্রকৃত লক্ষ্য সম্পর্ক, তাই একটা প্রস্তাব আর একটা সম্মতি সম্মেলনেই-
এখানে সঙ্গম কিনতে পাওয়া যায়, সন্তান দামে অমরত্বও বিকোয় একই হাটে।
এখানে সবই পণ্য, চটকদার বিজ্ঞাপনী মুখোশে কামিনী মোহিনী বিলবোর্ডের মেলা,
চামড়ার আবরণ ভেঙ্গে সত্যকে নগ্ন করবে যে উত্তাপ,
তাও নাকি সিএনজির মিটারে গুনে গুনে বিক্রি হয় একলা ল্যাম্পপোস্ট নিরালায়!
এখানে যা কিছু যত পবিত্র ঘোষণা, তার অনুচ্চারিত কোটরে ততই বিনীত পাপাচার!
এখানে যা কিছু যত মহান প্রতিশ্রুতি, তার নিগুঢ় কেন্দ্রে কেবল বানিজ্যের অধিবাস!
এখানে সত্য অধিষ্ঠিত নয়, প্রতিষ্ঠিত হয়!
এখানে সত্য সহজাত নয়, তাই সত্য যা সুবিধাজনক!
স্বয়ং ঈশ্বর যেখানে স্বর্গ আর নরকের দাঁড়িপাল্লায় বিকিয়েছেন নিজের স্বাধীনতা,
সেখানে মানুষ তো শুধুই বিনিময়, যদি দামে না পোষায়-
স্রষ্টাও ফেলে ছুঁড়ে, যদি শর্ত না মান- প্রেমিকাও দেয় প্রত্যাখ্যান!
তবুও দোষ কেবলি টানবাজারের মাগিদের!
সভ্যতার যত পতিত জঞ্জাল-ক্লেদ-পুঁজ-মধুঘাম,
কিনে কিনে তোমাদের সমাজে ওরা বেঁচে শান্তি, ওরা সাজায় নির্বাণ!
দৌলতদিয়া আর বানিয়াশান্তার খানকিপাড়াগুলো প্রকৃত অর্থে-
তীর্থ যদি কিছু থাকতো তোমাদের, তবে ঠিক তাই!