somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসা আসোলেতে পিটুইটারীর খ্যালা, আমরা বোকারা বলি প্রেম। It's a game.

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :












আমি শুয়ে আছি, এভাবে বলাটা ঠিক হবেনা, বলতে হবে আমাকে শুয়ে থাকতে হচ্ছে। অদ্ভুত এক প্রকারের পিচ্ছিল পদার্থ আমার হাত, পা, মাথা, শরিরে লেপ্টে আছে। চোখ খুলতেও সমস্যা হচ্ছে, কিছুটা। তবুও অস্পষ্ট ঝাপ্সা একটা আলো আমার চোখে লাগছে। কিছুটা রূপালী রংয়ের আলো। দুরে কোন এ্যলুমিনিয়ামের বানানো কোন, উপগ্রহের গায়ের আলো মনে হচ্ছে। আমি যে গ্রহতে এসে পরেছি তার নাম জানিনা, আমাকে জানানো হয় নি। তবে আমার পুর্বের প্রজন্মের অনেক গুন আমার জিনে ভরে দেয়া হয়েছে।

আমি প্রথমে ছিলাম একটা অন্ধকার ক্যাপ্সুলে। সেখান থেকে বের হবার পর আমাকে খসখসে টাইপের কিছু পদার্থের মিশ্রনে তৈরি পোষাকে ভরে দেয়া হয়। এরপর দীর্ঘ অপেক্ষা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর আমি এখানে পৌছেছি। ক্যাপসুলের ভেতরের নিপাট অন্ধকার আর নিঃশব্দতার পর আমার মস্তিস্কের নিউরন, শব্দ এবং আলো গ্রহন করতে কিছুটা সময় নিচ্ছে। আমার চোখের পাতা পিট-পিট করছে। আমার মাথার ভেতরের সমস্ত স্মৃতি মুছে দেয়া হয়েছে, কিন্তু জেনেটিক কোডে থেকে যাওয়া নানা তথ্য সম্ভবত মুছা হয়নি। আমার ইন্দ্রিয়ের আনুভুতি বেচে আছে। আমাকে এখন এই গ্রহ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। জানতে হবে কিভাবে এখানে জীবন ধারন করা যায়? তবে আপাদত যা মনে হচ্ছে, এখানকার বাতাসে অক্সিজেনের তুলনায়, কার্বন, শিসা আর কপারের উপস্হিতি বেশি। যিনি আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন, আমার ধারনা আমাকে নিয়ে তার একটা খুব বড় প্ল্যান আছে। তিনি দেখতে চান নতুন এই পরিবেশে আমি কি করি! তিনি এক্সপেরিমেন্ট করছেন। আর আমি গিনি পিগ। এক্সপেরিমেন্ট সাক্সেস হলে গিনি পিগ বাচতেও পারে, আবার মরতেও পারে। যিনি আমাকে নিয়ে খেলাটা খেলছেন আমি তাকে দেখেছি, কিন্তু এখন আর আমি তার চেহারা মনে করতে পারছিনা। বা আদৌ তার কোন চেহারা আছে কিনা তাও মনে নেই আমার। এই এক্সপেরিমেন্ট তিনি আমার উপরে কেন করছেন সেই ধারনাও আমার নেই।

ক্যাপ্সুলের ভেতর কার সেই উষ্ন ভাবটা এখন আর নেই। কিছুটা ঠান্ডা লাগছে। এই গ্রহের আবাহাওয়া কি, প্রানীর জন্য বাচার অনুকুল না প্রতি কুল তাও জানি না। আমি ছাড়া কি এখানে আর কেউ আছে!? আমার নিঃশ্বাস নিতে তেমন একটা কষ্ট হচ্ছে না। কেবল বাতাসের সাথে এক প্রকারে গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছি। এটা কি হিলিয়াম না মিথেন তা বুঝতে পারছিনা। তবে গাড়ো একটা গন্ধ আমার নাকের ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করছে। এই গ্রহের ভুমিও বিচিত্র, শক্ত নুড়ি পাথর আর কয়লার এক অদ্ভুত মিশ্রনে তৈরী। তবে কিছু দুরে এক প্রকারের তরলের মিশ্রন চোখে পরছে। আমার পিছনে একটা মস্সৃন পাহাড়ের মতন কিছু একটা ঠেকছে। পাহাড়ের এক কোনায় কোন একটা সংকেত ব্যাবহার করা হয়েছে। কি লেখা হয়েছে? আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিনা। এটা কি বর্নমালা? আমার জানা নেই। গ্যাসে ঘনিভুত এই বাতাসে প্রচুর অক্সিজেন আছে, এটা খুব বোঝা যাচ্ছে। দুরে দুটো চোখ জ্বলে ওঠে। অস্পষ্ট রুপালী আলো ভেদ করে চোখ দুট বড় হতে থাকে। এটা তৃতীয় প্রজন্মের রোবটের চোখ। এরা চলার জন্য গোল আকৃতির হাত, পা ব্যাবহার করে। সেটি আমার দিকে এগিয়ে আসছে। এটি কি আমাকে নিয়ে যাবে? রোবোট টা আমার পাশ ঘেষে চলে গেলো। ও আমাকে খেয়াল করে নি করার কথাও না। ওতো সামান্য একটা রোবট বা যন্ত্র ওরতো আর আমার মতন ইন্দ্রিয় নেই, বা নেই জেনেটিক কোড। আছে কিছু সাংকেতিক নম্বর। তবে যাবার সময় ওর পায়ের চাপে সেই ঘনিভুত তরল ছিটে এসে আমার গায়ে লাগে। কিছুটা মুখেও পরেছে। আমি জিভ নাড়াতে পারছি। এবার আমার স্বাদ নেবার পালা। একে নোনতা স্বাধ বলে, হ্যা এই তরলের স্বাদ নোনতা। আমাকে কেনো এই রোবটের জগৎএ পাঠিয়ে দেয়া হলো। এখানে কি কোন প্রানী নেই!?

আমি আমার কানের কাছে এক প্রকারের সো সো শব্দ শুনতে পাচ্ছি। অস্পষ্ট আলোয় আমি সেই কুৎসিত, কদাকার প্রানীটা কে দেখি। কপালের দুই পাসে দুটি মার্বেলের মতন বস্তু যেটি বসানো আছে সাদা আর একটি বলের উপর। কপালের পাশের থেকে একটু উপরে দুটি পাতা সেটি লক লক করছে। নাক নেই। চেহারার একেবারে নিচের দিকে তিনটি গুহা। একটি বড় দুটি ছোট, সম্ভবত ছোট দুটি দিয়ে এরা শ্বাস প্রশ্বাস করে। বড় গহবরের মধ্যে দিয়ে এক প্রকারের স্বচ্ছ পিচ্ছিল আঠালো পদার্থ বেয়ে বেয়ে নেমে আসছে লক লকে পাতার মতন অংগের গা ঘেষে। প্রানীটি আমার উপর ঝুকে আছে। আমার শরির ক্রমস ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিলো প্রানিটির লোমস শরিরের উষ্নতায় আমার শরিরের ও কিছুটা উষ্নতা বাড়ছে মনে হচ্ছে। কিছুটা আরাম বোধ করছি। খানিক ক্ষন পরে প্রায় একি রকম দেখতে আর একটা প্রানী এসে আমার গা ঘেষে দাড়ালো, এটি আগেরটার চেয়ে কিছুটা ভারি। পেটের কাছে সারি সারি বোতামের মতন কিছু ঝুলে আছে। এটি তার পাতার মতন অংগ দিয়ে আমাকে পর্যবেক্ষন করলো। এক প্রকার সাকসন প্রক্রিয়ায় এটি আমার শরিরের আঠালো পদার্থটা শুসে নিলো। আমি আমার পা নাড়াতে পারছি। তবে কোমর এতোটা ভাড়ি হয়ে আছে যে, মনে হয়না এই প্রানী গুলোর মতন নড়তে পারবো। সে আমার শরিরের আঠালো পদার্থ গুলো পরিষ্কার করে আমার মুখের কাছে এসে বসলো। তার পেটের নিচের অংশ আমার মুখের উপর চেপে ধরলো। আমি শ্বাস নিতে পারছিনা। আমি মুখ খুলি, মুখের ভেতরে সে একটা বোতাম ভড়ে দেয়। একটা তরলের মিশ্রন আমার গালা বেয়ে নেমে যেতে থাকে। আমার আরাম লাগতে থাকে, আরাম। আমি অপেক্ষা করতে থাকি, আমি তলিয়ে যেতে থাকি গাড়ো অন্ধকারে। কিন্তু অস্বচ্ছ ঘোলা আলো পেরিয়ে এক প্রকারের গাড়ো লাল আলো আমার চোখের উপর এসে পরে। তবুও আমি তলিয়ে যেতে থাকি নিকাশ অন্ধ কারে। আমার কানে একপ্রকার সংকেতিক শব্দ ভেষে আসে। আমি এই শব্দ চিনি। এই শব্দ বিলাপ করে, সুরের ধারায় সমগ্র মানব জাতীকে ঐক্যের পথে ডাকার সংকেত।


মকবুল সাহেব আজান সুনে ওজু করতে বের হয়েছেন। বাড়ীর সামনের দেয়াল ঘেষে, পিচঠালা রাস্তায় পলিথিনে মোড়া কাদা মাখা একটা শিশু পড়ে আছে। দুটো কুকুর শিশুটিকে আগলে ধরে রেখেছে। শিশুটি মৃত না জীবিত বোঝা যাচ্ছে না। তিনি শিশুটিকে বুকে নিয়ে দৌড়াচ্ছেন। একে এখুনি হাসপাতালে নিতে হবে। আল্লাহর তৈরী এই মানব শিশুকে তিনি মরতে দিবেন না। ধিরে ধিরে তার বাড়ীর দেয়ালে লেখা "এখানে ময়লা ফালানো নিষেধ" কথাটা সরে সরে যাচ্ছে।


মুখ বন্ধঃ এই গল্পের প্রতিটা চরিত্র কড়ায় গন্ডায় সত্য বা অক্ষরে অক্ষরে সত্য। যারা ভালো বাসার মানে বোঝে যৌনতা তেদের কে উৎসর্গ করলাম লেখাটা। বাবা দিবসে লেখাটা প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম। পরে ভাবলাম এইরকম লেখা বাবা দিবসে প্রকাশ করলে সত্যি কারের বাবা দের অপমান করা হবে। তাই আজকে দিলাম সেই সকল বাবা দের উদ্যেশ্যে যারা যানেও না তাদের কয়টা সন্তান নষ্ট হয়ে গেলো গলির নর্দমায়। ছবি গুগল। আর শিরোনাম নচিকেতার একটা গানের লাইন।
ফিকশন লেখা হয়না খুব একটা, লেখাটায় ইচ্ছেকরেই কিছুটা পিকশন ঢুকিয়েছি, একটি নবাগত একটি শিশুকে যখন ডাষ্ট বিনে ফেলে আসা হয় তখন হয়তো তার এরকমই লাগে।

এর আগে ব্লগে একটা লিখে ছিলাম চাইলে দেখতে পারেন, লিংকঃএকটি সাইন্সফিকসন ও সমকামীতা (১০০০ শীত বসন্ত শেষে ১৮+)


সবাই ভালো থাকবেন।



আমার রিসেন্ট একটি লেখাঃ
অন্তঃসত্তা জেনি এবং আমরা অবাক মানুষেরা!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৪৪
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব ইসলামী আন্দোলনের।

লিখেছেন রাবব১৯৭১, ১০ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:২২

বাংলাদেশের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব ইসলামী আন্দোলনের।
এ দলের প্রতিষ্ঠয়তা মাওলানা এস এম ফজলুল করিম যিনি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ফতোয়া দিয়েছিলেন যে-- বাংলাদেশের মেয়েরা হচ্ছে ”গনিমতের মাল” মাওলানা নিজ হাতে অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

গার্মেন্টসে শোষণ, সিনেমায় চুরি: অনন্ত জলিলের স্বনির্ভরতার মুখোশ উন্মোচন

লিখেছেন মি. বিকেল, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:০৬



অনন্ত জলিল—বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে একটি হাস্যকর নাম এবং গার্মেন্টস শিল্পে একটি বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। তার চটকদার জীবনযাত্রা, বিলাসী জীবনযাত্রা এবং স্বঘোষিত ‘স্বনির্ভরতা’ ও ‘গরীবের বন্ধু’র আড়ালে লুকিয়ে আছে শ্রমিকদের শোষণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষ ইজ গুড ফর হেলথ !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:২৩


সিরাজদিখানের মাহফুজুর রহমান সাহেবের কান্ড দেখে মনে হলো, তিনি ব্রিটিশ আমলের একটা গল্প খুবই সিরিয়াসলি নিয়েছেন। গল্পটা পুরনো, কিন্তু ঘুষখোরদের মধ্যে এখনো জনপ্রিয়। এক ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেট বাংলায় দুর্বল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ার রক্তচোখ: ক্রোধের নগর

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৫২


ষড়ঋপু সিরিজের দ্বিতীয় কাহিনী ”ক্রোধ”

রাত্রি নেমেছে শহরের উপর, কিন্তু তিমির কেবল আকাশে নয়—সে বসেছে মানুষের শিরায়, দৃষ্টিতে, শ্বাসে। পুরনো শহরের এক প্রান্তে, যেখানে ইট ভেঙে পড়ে আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নববর্ষের শোভাযাত্রা নাম বদল করছি না, পুরোনো নাম–ঐতিহ্যে ফেরত যাচ্ছি: ঢাবি উপাচার্য

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:০৪



পয়লা বৈশাখে ফি বছর চারুকলা অনুষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘আমরা নাম পরিবর্তন করছি না। আমরা পুরোনো নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×