somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি স্বার্থক প্রেমের গল্প

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুন্দর এক অপূর্ব সকাল।পাখীরা কলরব
করছে।করছে আনন্দ উল্লাস।ঘাসের উপর
শিশির কণার মাঝে সোনালী রোদের প্রতি
ফলনে মুক্তাদানার মত চকচক করছে।রিনি
ঝিনি বাতাশে গাছের শাখায় মাখায় পাতায়
পাতায় অপূর্ব আওয়াজের শিহরণ তুলেছে।
'
সেই সুরে হৃদয়ে ছুয়ে যায় হর্ষের ফল্গুন ধারার
পরশ।হেমগণী বৃক্ষের পাতার আড়ালে
কোকিল ডাকছে কুহু কুহু সুরে।খুব সুন্দর
লাগছে এই অসময়ে কোকিলের ডাক।যদিও
এখন অগ্রহায়ণ মাস।তবুও ডাকছে কোকিল।
'
সেই মোহনীয় ডাকে মন বিভোর হয়ে যায়।
শিশুরা সেই ডাককে ব্যাঙ্গ করছে।সদ্য ফুটা
তাজা লোহিত বর্ণ গোলাপের মাঝে দুই প্রজা
পতি মনের সকল আবেগ উজার করে মহা
পুলকে খেলা করছে।একবার উড়ে দূরে চলে যায়।
'
আবার ফিরে এসে সৌরভ গ্রহন করে গোলাপ
পাপড়ি হতে।মনে হয় ওরা যেন প্রেমের মহা
আবেগময় খেলায় হিব্বল।তাদের মনের
সকল অনুভূতি প্রকাশ করছে।ঐ শোভা
মিশ্রিত গোলাপের মাঝেই বুঝি প্রজাপতি দুটি
ভালবাসার বাসর রচনা করতে চায়।গোলাপ
টাই বুঝি ওদের বাসর শয্যা।
'
.
সেই অপূর্ব মনোহর দৃশ্য বারান্দায় বসে খুব
মনযোগের সাথে অবলোকন করছিল মারিয়া
পলকহীন দৃষ্টিতেই দেখছিল মারিয়া।মারিয়ার
মনে এক রঙিন স্বপ্ন সুখের হাওয়া ছোয়া
দিয়ে যায়।নতুন আশার উদয় হল তার মনে।
আনন্দের তরঙ্গ প্রবাহীত হচ্ছে তার হৃদয়ে।
মারিয়া তার মনের নিঃস্বঙ্গতার কথা ভাবে।
আজ ক'দিন ধরে তার হৃদয় একনব অনুভূতি দোলছে।
'
সেই ২ বছর আগে থেকে শুরু।যেদিন শুভ্র ও
তার পরিবার ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেছিল
তাদের বাড়িতে।কে যানতো এই অতি ভদ্র
ছেলেটিই মারিয়ার ভালবাসার মনি কোঠায়
নিশ্চিন্তে প্রেমের ঘুড়ি উড়াবে তার আকাশে।
'
শুভ্রকে নিয়ে ভাবতে ভাল লাগে মারীয়ার।
শুভ্রকে বার বার প্রতিবার মনে পড়ে।শুভ্র
সামনে আসলে তার সবকিছু এলোমেলো হয়ে
যায়।প্রত্যেকটা শিরা উপশিরায় অঙ্গ প্রতঙ্গে
কম্পন ধরে যায়।সে কাঁপুনি মারিয়া কিছুতেই
থামাতে পারেনা।নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না
পেরে শুভ্রর সম্মুখ হতে চলে আসে।কিছু
বলতে গেলে মুখ দিয়ে শব্দ আসতে চায়না।
'
আচ্ছা শুভ্র এমন কেন?আসলেই শুভ্র কি?
তার মাঝে কি ভালবাসার অনুভূতি নেই?সে
কি কাউকে ভালবাসতে বা কারো ভালবাসা
পেতে চায়না?সে কি বুঝতে পারেনা আমার
মন কি চায়?তার মন কি আমাকে কামনা
করে না?তার মনে কি আমার জন্য ভালবাসা
জাগতে পারেনা?
.
মারিয়া যখন গভীর মনযোগ দিয়ে কথা গুলো
আনমনে ভাবছিলো।এমন সময় শুভ্র এসে
মারিয়াকে বললো--------
'
.
--কি হল মারিয়া এখানে বসে আছো?তোমার
কি মন খারাপ?
'
শুভ্রর আগমনে মারিয়ার বুকে মোচর দিয়ে
উঠে।চমকে যায় সে।বুকটা দুরু দুরু করে
কাপছে।তার মনের মানুষ-তো তার সামনেই।
তাই-তো তার শরীর কাঁপছে।এমন সবারই
হয়ে থাকে।অব্যক্ত ভাল লাগার মানুষ কাছে
আসলে মনে দেহে কম্পন সৃষ্টি হয়।
'
.
-মারিয়া আশ্চর্য ভাবে বলে----না!না!এমনি
বসে আছি।
.
মারিয়া মনে মনে ভাবছে।তোমাকে আজ
আমার মনের সাজানো কথা গুলো বলবো।
তোমার জন্য আমার বুক ভরা প্রেম ভালবাসা
রেখেছি।তা আজ উজার করে বিলিয়ে দেব
তোমার মাঝে।আজকে আমাকে বলতে হবে।
অবশ্যই বলতে হবে।
'
শুভ্র এক নাগারে বিভিন্ন কথা মারিয়াকে
জিজ্ঞেস করছে।আর মারিয়া ধীরে ধীরে তার
কথার জবাব দিচ্ছে।তার কথা বলার রেশ
নরম তার মনের মাঝে অপ্রকাশিত ভালবাসা
বজ্রের মত আঘাত করছে।শুভ্র যা বলে
মারীয়া চমকে থমকে জবাব দেয়।সে নিজ
থেকে একটি কথাও বলছেনা।
'
.
-মারিয়া তুমি আজ এমন ভাবে কথা বলছো
কেন?তোমার কি হয়েছে?তোমাকে বড়ই
অসুস্থ মনে হচ্ছে?
'
.
-নাহ?আমার কিছু হয়নি।
'
.
-তবে এমন করছো কেন?
'
.
-কি করছি?
'
.
-কোন কথা বলছোনা,আমার কথার জবাব
দিচ্ছো আস্তে আস্তে।কথায় কথায় তুমি
থমকে উঠছো!
'
.
-কিছুনা,এমনিতেই।মনটা বেশি ভালনা।
'
.
-কেন?
'
.
-বলতে পারবোনা।
.
শুভ্র মারিয়ার দিকে লক্ষ করে দেখলো,তার
সারা মুখ লাল হয়ে আছে।ডালিয়া পাপড়ির
মত মস্রিন মোলায়েম ওষ্ঠ দুটি থরথর করে
কাপছে।দু'নয়ন দিয়ে অশ্রু ঝরছে অঝোর
ধারায়।ফুলের মত কমনীয় হাস্য উজ্জ্বল
মুখশ্রী খানা অমাবস্যার মত অন্ধকার মলিন
হয়ে আছে।কোন এক অজানা ব্যাথা মারিয়ার
মনে যন্ত্রনা দিচ্ছে।ওকে ব্যাকুল করে তুলছে
কোন অব্যক্ত সুর।যা বলার সাহস বা উপায়
কোনটাই পাচ্ছেনা সে।ও কি যেন বলবার
আপ্রাণ চেষ্টা করছে।কিন্তু বলতে পারছেনা।
শুধু ঠোট দুটি কচুঁপাতার মত কাঁপছে।
.

শুভ্র মারিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলে সে
আরো মুষড়ে পড়ে।বুকের যন্ত্রনা আরো বৃদ্ধি
পায়।মনের মাঝে ঘূর্ণিঝড়ে সব উতাল পাতাল
করে দিচ্ছে।শুভ্র বুঝতে পেরেছে কিসের লাগি
যেন মারিয়া খুব কষ্ট পাচ্ছে।যা--ও সহ্য করতে
পারছেনা।তবুও বুকের মাঝে চাঁপা দিয়ে
রেখেছে।মারিয়ার চোঁখ দিয়ে বৃষ্টির মত পানি
ফোটা ফোটা আকাড়ে ঝড়ছে।নীরব শব্দহীন
কন্ঠে কাঁদছে মারিয়া।ওর এই শব্দহীন কান্নাই
ওর মনের প্রত্যাশা প্রকাশ পাচ্ছে।
শুভ্র বলে_____________
.
.
--একি!মারিয়া তুমি কাঁদছো?কি হয়েছে তোমার?
'
.
--শুভ্র তো-মার সঙ্গে আমার কিছু কথা ছিল।
'
.
--বলো!কি বলবে?
'
.
--বললে তুমি রাগ করবে না-তো?
'
.
--আহা!বলই-না আগে।
.
মারিয়া তার মনের মানুষের সাথে হৃদয়ের
সাজানো কথা বলবে।কেমন করে বলবে।
কি রূপে বললে সুন্দর হবে।মনের সকল
আবেগ আখাঙ্খা প্রকাশ পাবে।কি করে সে
বুঝাবে তার অন্তরে শুভ্র ব্যাতিত আর কেউ
নেই।শুভ্র মারিয়ার সকল কামনা বাসনা।
মারিয়ার ধ্যান ধারনায় শ্বাস নিঃস্বাশে দেহের
প্রতিটি কম্পনে স্পন্দনে মিশে আছে শুভ্র।
তাকে মারিয়া প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসে।
সে কোন রূপেই মনস্থ করতে পারছেনা কি
ভাবে বলবে তার বহু দিনের কথা গুলি।
মারিয়া দিশেহারা।ঠোট কাঁপছে তার।
'
.
--মারিয়া?বল-না,কি বলবে।চুপ হয়ে আছ কেন?
'
.
--হ্যাঁ!বলছি!বলছি!
'
.
--মারিয়া বুকে অজস্র সাহস সঞ্চার করে তার
আশা আবেগ অনুভূতি প্রকাশ করবে বলে
প্রস্তুত হল।কন্ঠ হতে বের হয়ে ওষ্ঠ অতিক্রম
করে মুখ দিয়ে বের হল_____________
'
.
--শু-ভ্র।আমি তো-মা-কে একান্ত আপন করে চাই।
.
কথাটা বলে মারিয়া নিজেকে সামলাতে
পারলোনা।হু-হু করে কেঁদে ফেললো।তার
হরিণী আঁখি দিয়ে অঝোরে অশ্রু ঝড়তে লাগলো।
'
.
--কি বলছো মারিয়া!(অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে)
'
.
--হ্যা!হ্যা!আমি তোমাকে আমার আত্নার
আত্নীয় বানিয়ে ফেলেছি।তুমি আমার সত্বায়
অস্তিত্বে মিশে গেছ।আমি তোমাকে মন প্রাণ
উজার করে ভালবাসি।
'
.
--মারিয়া!তুমি যা বলছো তা কেমন করে হয়?
'
.
--কেন হয়না?
'
.
--তুমি তা বুঝবেনা।
'
মারিয়া রাগান্বিত সুরে বলে--------
'
.
--হ্যা!তুমি আমাকে আপন করবে কেন?তুমি
তো অনেক সুদর্শন,ভদ্র ছেলে।তুমি তো আরো
বড় লোকের সুন্দরী কন্যা পাবে।তাইনা?
'
.
--আমি তো এভাবে বলিনি।
'
.
--তাহলে কিভাবে বলেছ তুমি হু?
'
.
--আমি বলেছি,আমরা গরীব।তোমাদের
বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকি।আর তোমরা
বড় লোক।আমাদের এই সম্পর্ক তোমার মা
বাবা কখনোই মেনে নিবেনা।
.
মারিয়া ক্ষোভের সাথে জোর গলায় বলে---
'
.
--আমি জানতে চাই তুমি আমাকে ভালবাস
কি-না?
'
.
--প্লীজ!!বুঝার চেষ্টা কর মারিয়া!!
'
শুভ্রর কথা শেষ হতে না দিয়েই মারিয়া বলে
উঠলো________
'
.
--হইছে আর বোঝাতে হবেনা।আমি বুঝতে
পেরেছি তোমার হৃদয়ে আমার প্রতি বিন্দুমাত্র
ভালবাসা নেই।তোমার ভালবাসা যখন পাবনা
তাহলে আর বেঁচে থেকে কি লাভ!!
'
এই কথা বলেই মারিয়া চলে যেতে উদ্যত হল।
যখন পাশ ফিরলো তখনি শুভ্র মারিয়া একটি
হাত টেনে ধরলো।
'
.
--আমিও তোমাকে ভালবাসি মারিয়া।
'
.
--সত্যি করে বলছ তো?
'
.
--আমাকে তোমার বিশ্বাস হচ্ছেনা?
'
.
--তোমাকেতো আমি কখনো অবিশ্বাস করিনি
'
.
-শুভ্র।তুমি আমার----শুধুই আমার
'
তারপর দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে।দুজনের
শরীর হতে বিদ্যুত প্রবাহ অতিদ্রুত বেগে
প্রবাহীত হতে লাগলো।ওদের উত্তপ্ত হৃদয়
গলে একাকার হয়ে যায়।মনের যত দুঃখ
বেদনা ওদের প্রেমের উত্তাপে বাষ্প হয়ে যায়
দূরে বহু দূরে।

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৩৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প বলেছে, বাংলাদেশ পুরোপুরি এনার্খীতে, তারা মাইনোরিটির উপর অত্যাচার করছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬



৩ দিন পরে আমেকিকার ভোট, সাড়ে ৬ কোটী মানুষ ভোট দিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে; ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫১ ভাগ। এই অবস্হায় সনাতনীদের দেওয়ালী উপক্ষে ট্রাম্প টুউট করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×