কালকে প্রপোজ ডে গেলো অথচ নিতিকাকে প্রপোজ করতে পারি নাই, গত এক বছর ধরে আমি যেটা বলার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু পারছিলাম না। কিন্তু আজকে যেভাবেই হোক আমাকে বলতেই হবে যে আমি তাকে ভালবাসি, আজকে আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো। কেননা ভালবাসা লুকিয়ে রাখতে নেই, তাতে ভালবাসা হারিয়ে যেতে পারে, আজকাল যে দিন কাল পরেছে , ছেলেরা, মেয়েদের পিছনে লেগেই থাকে।
গোলাপ ফুলটা পকেটে সুন্দর করে রাখা, কেউ বুঝতেই পারবে না যে এখানে গোলাপ রাখা আছে। আসলে আমার গোলাপ ফুল প্রিয় না, আমার কাছে বেলি ফুল সবথেকে বেশি প্রিয়, ছোটবেলায় আম্মুর কোথায় থেকে একটা বেলি ফুলের চারা নিয়ে এসেছিলেন, সেই গাছে যখন প্রথম ফুল ফুটল, আমি সারা রাত সেই গাছের নিচে বসে ছিলাম , আর একটু পর পর ফুলের সুবাস নিচ্ছিলাম। সেই থেকে আমার বেলি ফুল প্রিয় হয়ে গেলো।
প্রথমে ভেবেছিলাম বেলি ফুলের মালা দিয়ে নিতিকাকে প্রপোজ করবো কিন্তু এইসময় বেলি ফুল আমি পাবো কোথায়। তাই ঝটপট গোলাপ কিনে ফেললাম আজকাল যেখানে সেখানেই গোলাপ ফুল পাওয়া যায়। লাল টুকটুকে গোলাপ, পবিত্র গোলাপ। পৃথিবীতে সচচেয়ে পবিত্র আর নিষ্পাপ বলতে যদি কিছু থাকে তাহলে সেটা ফুল।
রুম থেকে বের হতেই রুধির এর দেখা, ও প্রায়ই আমাকে দেখে না চিনার ভান করে। নাকি চিন্তে পারে না আমি ঠিক বুঝি না। ওকে দেখে মনে হল কোন একটা টেনশনে আছে। বললাম কি হয়েছে রুধির?
"জটিল সমস্যায় আছি...
কেন যেন মনে হচ্ছে আমি খুব দ্রুত মারা যাবো।হুট করেই মারা যাব, কাউকে জানান না দিয়েই...... জানান দিয়ে মারা গেলে মানুষের কষ্ট বেশী হয়, আর হুট করে মারা গেলে মানুষ একটা ঘোরের মধ্যে থাকে...... কখন সব কিছু অন্ধকার হয়ে যায় টের পায় না.."
আমি বললাম, "আরেহ চিন্তা করো না, এইসব কোন ব্যাপার না, কোন বিষয় কে যত সিরিয়াস নিবা তত বিপদে পরবে , অনেক কঠিন বিষয় যদি সাধারনভাবে নেয়া যায় সেটা খুব সহজেই সমাধান হয়। মানুষের অনেক কিছু মনে হতে পারে , সেটা নিয়ে চিন্তা করে সময় নষ্ট না করাটাই ভাল।"
"ব্যাপার সেটা না... আমার মনে হচ্ছে কিছুক্ষণ এর মধ্যে তুই বিরাট এক প্যাচে পরে যাবি...
কিন্তু প্যাচ টা কিসের তুই ধরতে পারবি না"
আমি মনে মনে ভাবলাম, ও কি কিছু জানে নাকি! কিন্তু জানার তো কোথা নয়!! আমি বেশ অবাক হলাম। ভাবতে ভাবতেই নিতিকার কোথা মনে পড়লো, তাড়াতাড়ি যেতে হবে, সেতো আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
এইটা দশ বছর আগের কাহিনী, রুধির ঠিকই বলেছিল। আমি প্যাচে পরে গেছি, বিশাল প্যাচে পরে গেছি। যে প্যাচ থেকে মৃত্যু ছাড়া বের হওয়া যাবে না। নিতিকার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। আমরা সারাজীবনের জন্য প্যাচে পরে গেছি।
অনেক জানতে ইচ্ছা করে রুধির কিভাবে জানলো আমাদের ব্যাপারটা। কিন্তু তাকে আমি সেদিন এর পর থেকে আর খুঁজে পাই নি, শুনেছিলাম সে নাকি নিলুর প্রেমে পাগল হয়ে গিয়েছিল, তার হদিস কেউ জানে না। কেউ প্রেমের কারণে মারা যায় আর কেউ প্রেমের কারণে বেচে থাকে এইটাই জগতের নিয়ম, জগতের নিয়ম বড়ই অদ্ভুত।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৩:০৬