somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিমুর সাথে একদিন

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

টঙের দোকান থেকে পান নিয়ে চিবাতে চিবাতে রাস্তায় হাঁটছি, গন্তব্য বই মেলা যাওয়া। যাওয়ার কথা ছিল রুপার সাথে, কিন্তু রুপার সাথে দেখা করা খুব জরুরী, ওর বাসায়ও যাওয়া যাচ্ছে না, নতুন বাসার ঠিকানা জানিনা। আমাকে এত কিছু জানতে হয় না। মহাপুরুষের জীবন হবে সাধারণ জীবন থেকে আলাদা।

বাবার কথাটা এখনও স্পষ্ট মনে পড়ছে,

হিমালয় তুমি অতি তুচ্ছ ব্যাপার লইয়া চিন্তা করিয়ো, জগতের মানুষ তুচ্ছ ব্যাপার তাচ্ছিল্য করে বিধায় সত্য অবলোকন করতে পারে না।“

রুপার সাথে দেখা হওয়ার কারণ খুব তুচ্ছ, তাকে একটা বই দিতে হবে , এবারের বই মেলায় আমার একটা বই প্রকাশিত হয়েছে, যদিও লেখকের নাম এর জায়গায় লেখা “শূন্য” মানে আমার মামাতো ভাই বাদলের নাম দেয়া।

আজকাল অনেকেই আমাকে চেনে, রাস্তায় দেখলেই সালাম দেয়। সালামের উত্তরে আমি শুধু মাথা ঝাঁকাই। একবার তো এক ভদ্রলোক কি বলতেছে আমি মাথা ঝাঁকাচ্ছি, তিন চারবার ঝাঁকানোর পর মনে মনে ভাবছি এত সালাম দেয় কেন? পরে দেখলাম ভিক্ষা চাচ্ছে।

ঢাকা শহরে ফকির জা ইনকাম করে, অন্য পেশাজীবী কেউ এত করে কিনা সন্দেহ আছে, রাজনীতিবিদদের কথা আলাদা, তবে তারাও এক প্রকার ফকির।

ফার্মগেটে এক ফকির এমন ভাবে ধরল, পাঞ্জাবী আর ছাড়ে না। এখন আমি কি করবো ? আমার পাঞ্জাবীর পকেট নাই, দেখালাম তারপরেও ছাড়ে না। এখন কি করি!

ভাই আমার কাছে ভাংতি নাই।
-আমার কাছে আছে কত টাঁকা ভাংতি লাগবো কন ভাই।
-দেখো তোমার কাছে কত আছে, গুনতে থাকো।
সাথে আমিও ফকিরের টাঁকা গুনেছি, সব মিলিয়ে ৩৭০ টাঁকা, বাজে সকাল ১০ টা , বাকি দিন তো পরেই আছে। ফকিরটা একটা একটা করে টাকা গুনে আমার হাতে দিতে দিতে এখন সব টাকা আমার হাতে, মনে মনে ভাবছি এই টাকা গুলি নিয়ে ভেগে গেলে কেমন হয়, এমনিতেই হাতে একদম টাকা নেই, চিন্তা করতে করতেই আরেক ফকির এসে হাজির। টাকাগুলি নতুন ফরিকের হাতে ধরিয়ে দিলাম, প্রথম ফকির কিছু বুঝে উঠার আগেই স্থান ত্যাগ করলাম।

বই প্রকাশ করে আমি এক প্রকার ভাষাবিদ হয়ে গেছি। বইমেলায় যাওয়ার আগে বাংলা একাডেমীতে যাওয়া লাগবে, হরতাল শব্দের আভিধানিক অর্থ কি জানতে হবে। এবং আরও একটা শব্দ যুক্ত করতে হবে লবতাল, যেদিন হরতাল থাকবে না সেদিন হবে লবতাল।

এইযে মিস্টার আপনার কাছে ১০০০ টাকা ভাংতি হবে? একটা সোনালী কণ্ঠের মেয়ে পিছন থেকে ডেকে উঠলো। আমি পিছন ফিরে তাকালাম, দেখলাম লম্বা নীল ড্রেস পরা একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে, চোখে কাজল দেয়া, দেখতে মার্জিত লাগছে।
এখন ভাবছি ভাংতি বলতে মেয়েটি কি বোঝাচ্ছে? ভাংতি মানে তো ভেঙ্গে দেয়া, সেই হিসেবে জগতের সব কিছুই ভাঙ্গা সম্ভব। ১০০০ টাকা তো অতি তুচ্ছ ব্যাপার। আমি টাকার নোট টা ছিঁড়ে দুইভাগে ভাগ করে তারপর মেয়েটিকে দিলাম।

বইমেলায় রুপার সাথে দেখা হয়ে গেল। রুপার সাথে একটা ছেলেকে দেখা যাচ্ছে, ছেলেটার কাঁধে একটা বিশাল সাইজের ক্যামেরা। মনে হল ছেলেটার চেয়ে ক্যামেরার লেন্স বড়। সাধারণত এত বড় লেন্স দিয়ে মুভি অথবা নাটক এর কাজে ব্যবহার করা হয়। শুধু ছবি তোলার জন্য হলে অপচয়।

রুপা বিভিন্ন এঙ্গেল এ ছবি উঠছে, আমাকে দেখে তার ভাবের কোন পরিবর্তন হল কিনা বোঝা গেল না। রুপা আমার সাথে কয়েকটা ছবি উঠালো।

রূপাকে রূপকথার মতই সুন্দর লাগছিলো। কিছু মানুষের দিকে তাকালেই সৌন্দর্য বাড়তেই থাকে। বই এর কথা রূপাকে বলা কোন অর্থই হয় না, সে বিশ্বাস করবে না, বরং সে হেসেই উড়িয়ে দিবে।

আমি হাঁটতে থাকি অজানা পথে, যে পথ কখনো ফুরায় না। গন্তব্যহীন পথের শেষ দেখার বড় ইচ্ছা আমার...
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×