বিপন্ন প্রজাতির এই প্রানিটির বাসস্থান বাংলাদেশ সহ আশেপাশের অন্চলে। বাংলায় এটি অন্চলভেদে গিরগিটি, তক্ষক, রক্তচোষা ,আনজিলা এবং শান্ডা নামে পরিচিত।পার্বত্য অন্চলের আদিবাসিরা বলে টক-টেন। ইংরেজিতে একে বলা হয় Tokey Gecko ।
টিকটিকি জাতিয় এই প্রানিটি টেকে টোকে অথবা গেককো-গেককো শব্দে ডাকে বলে ডাক থেকেই এর নামকরন হয়েছে। ঢাকা শহর থেকে শুরু করে দেশের সবজায়গায় এটির বিচরন, বিশেষ করে পুরান বট গাছে। এর ডাক শুনেছে গ্রাম বাংলার হাজারো মানুষ কিন্তু চোখে দেখেছে খুব কমই কারন দিনের বেলা এদের দেখা মেলা ভার।
ঢাকার রাস্তায় বিশেষ করে গুলিস্তানে অনেকেই হয়তোবা দেখেছেন যে শান্ডা তেল বিক্রি করতে।
কিছু মানুষ ভ্রান্ত ধারনার বশবর্তী হয়ে বিশেষ অংগের মালিষের জন্য দীর্ঘদিন যাবতই এই প্রানীটিকে হত্যা করে আসছে। কিন্তু ইদানিং কালে এক ভয়াবহ গুজব ছড়িয়েছে এই প্রানীটিকে কেন্দ্র করে যার ফলে এই বিপন্ন প্রজাটিটির একবারে বিনাষ হবার উপক্রম হয়েছে।
সমগ্র দেশে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে ৩৫০ গ্রাম ওজনের একটি জীবিত অবস্থায় ধরে দিতে পারলে বিদেশি ক্রেতা এটিকে কমপক্ষে ৮ কোটি টাকায় কিনে নিবে, আর ওজন যদি ৫০০ গ্রাম এর অধিক হয় তাহলে এর মূল্য হবে ২০ কোটির উপর।
বলা হচ্ছে যে একটি বিদেশি ওষুধ কম্পানি এইডস, ক্যান্সার এর মত রোগের প্রতিষেধক তৈরির গবেষনার জন্য এটি কিনে নিবে। কিন্তু কে সেই ক্রেতা তার কোন নিশ্চিত হদিশ নেই।
এই ফালতু গুজব ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সব জায়গায়। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, গাজীপুর, টাঞাইল, সিলেট, বরিশাল এবং পার্বত্য অন্চলে। নিমেষেই কোটিপটি হবার আশায় মানুষজন অকাতরে এই নিরিহ প্রানীটিকে ধরে হত্যা করছে। কারন খুব রেয়ার কেস ছাড়া প্রানীটি সাধারনত ১৫০-২০০ গ্রাম এর উপর হয়না। মানুষজন ধরার পর যখন মেপে দেখছে যে এর ওজন কোটি টাকার মূল্যের ওজনের চেয়ে কম তখন হতাশায় সেটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে।
বন্য প্রানী আইনে বিপন্ন ঘোষিত এই প্রানিটিকে প্রশাষনের নাকের ডগার সামনেই হত্যা করা হচ্ছে। দেশের অনেক প্রত্যন্ত অন্চলে পুলিশ, বিডিআররাও এই প্রানীটিকে খুজছে সাধারন মানুষের সাথে কোটি টাকার আশায়।
ইতিমথ্যে প্রায় ৫ মাস যাবত চলছে এই প্রানিটির নিধনযঞ।ফিলিপাইনে এই Tokey Gecko ক্রয়-বিক্রয়ে জড়িত থাকার শাষ্তি হচ্ছে ১২ বছরের জেল অথচ আমাদের দেশের এর শাস্তি ১ মাসের বিনা শ্রম কারাদন্ড শুধু। সরকার এখনই যদি এ ব্যাপারে কঠোর অবসথান না নেয় তাহলে আর বেশিদিন লাগবেনা এটিন বিপন্নপ্রায় থেকে সম্পূর্ন বিলুপ্ত হতে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১২:১৫