আল্-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম, যাকে আমরা সবাই (হাটহাজারী মাদ্রাসা) নামে চিনি। এটি হাটহাজারী উপজেলার সদর শহরে অবস্থিত। এই মাদ্রাসটি ১৯০১ প্রতিষ্টিত হয়। এটি ছিল হাটহাজারী উপজেলার একটি নামী ও ঐতিহ্য বাহী ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্টান । হাটহাজারী সহ পুরো চট্টগ্রামে এই মাদ্রাটির বেশ সুনাম ও পরিচিত ছিল,
কিন্তু দুঃখ জনক বিষয় ১০০ বছরের বেশী পুরানো এই বৃহত্তম মাদ্রাসাটির সুনাম আর ভবিষ্যত ধ্বংস হতে যাচ্ছে কিছু মানুষের রাজনৈতিক খপ্পরে পড়ে। এই মাদ্রাসায় প্রচুর শিক্ষার্থী পড়াশুনা করতো, এটি ছিল মুলত এতিম অসহায় আর দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আশ্রয় কেন্দ্র, কিন্তু শত শত গরীব এতিম অসহায় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত জীবণ অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে কিছু সুবিধা ভোগী ক্ষমতা লোভী রাজনৈতিক ফায়দা কারী ব্যাক্তি ও সংগঠন।
এই মাদ্রাসারটি ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক মুক্ত, এই মাদ্রাসায় প্রতিবছর প্রচুর সাহায্য করতো বি,এন,পি আওয়ামীলীগের বড় বড় নেতা, শিল্পপতি, ব্যাবাসায়ী আর স্থানীয় জনগণ, কিন্তু হঠাৎ করে এই মাদ্রাসায় রাজনীতি ঢুকে পড়ায় সব কিছু ধ্বংস হয়ে গেল।
হেফাজত ইসলাম নামে কোন সংগঠনকে চিনতনা এই মাদ্রাসার ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা, ব্লগার কি, ব্লগারের কি লিখেছে, কোথায় লিখেছে সেই সর্ম্পকে বিন্দুমাত্র জ্ঞান নেই এই মাদ্রাসার ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের,
আমার এক পরিচিত আত্নীয় তার বাড়ী হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সরকার হাট এলাকায়, সেই আত্নীয়ের এক ছেলে পড়েন হাটহাজারী মাদ্রাসায়, সে মাত্র ৫ম শ্রেনীতে পড়ে। তাকে জিজ্ঞাসা করলাম সে কেন ঢাকায় গিয়েছে, কার সাথে গিয়েছে, সে উত্তর দিল হুজুর বলেছে ঢাকায় অনেক বড় একটি মিলাদ মাহফীল হবে, ঐ মিলাদ মাহফীলে যোগ দিতে গিয়েছিলাম হুজারের সাথে ঢাকায় , তার ঢাকার যাবর ব্যাপাটি তার পরিবারের কেউ জানতো না। পরিবার হতে অনুমতি না নিয়ে, মাত্র ৫ শ্রেণীতে পড়ুয়া একটি শিশু শিক্ষর্থীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রতি বছর রমজান, ঈদ, কোরবান এলে মাদ্রাসা ফান্ডের জন্য ফিতরা জাকাতের টাকার জোগাড় করতে এইসব ছোট ছোট শিশু শিক্ষার্থী স্থানীয় এলাকায় ভিক্ষুকের মত গুরে বেড়ায় এক বাড়ী অন্যবাড়ীতে, এক দোকান হতে অন্য দোকানে, হাট বাজারে,
কিন্তু দুঃখ জনক এই বছর প্রথম বারের মত এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ফিতরা জাকাতের টাকার জন্য মানুষের বাড়ীতে গেলে কিছু কিছু লোক তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন খালি হাতে, ফিতরা জাকাতের টাকাতো দিচ্ছেনা বরং উল্টো তাদের নানা রকম আপমান সুচক কথা বলে তাড়িয়ে দিচ্ছেন।
এই মাসের গত ১৯ তারিখ শুক্রবার সকার ১১ টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার বুড়িশ্চর ইউনিয়রে কুয়াইশ বুড়িশ্চর কলেজের সামনের দোকান গুলোতে গিয়ে ফিতরা যাকাতের টাকা চাচ্ছিল এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা, এই সময় এক দোকানদার আল্লামা শফিকে নিয়ে কটুউক্তি করেন। এক পর্যাকে এই নিয়ে কথা কাটিকাটি ও মৌখিক ঝগড়া র্তক বির্তক লেগে যায় ঐ দোকানী ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সাথে। এক পর্যায়ে মারাত্বক লাঞ্চনা আর অপমানিত হয়ে ঘটনা স্থল হতে চলে যেতে বাধ্য হয় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।
ছোট ছোট অসহায় গরীভ এতিম শিশুদের নিয়ে এই কোন নির্মম নিষ্টুর রাজনৈতিক খেলা? এই সব অসহায় শিশুদের অপমান লাঞ্চনার দায় কে নিবে? একটি ঐতিহ্যবাহী অরাজনৈতিক ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্টানকে রাজনৈতিক প্রতিষ্টানে রুপান্তার করার দায় কে নিবে?
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০২