গত কয়েকদিনের কতিপয় আলোচিত সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি.....
এশার নামাজ পড়িয়ে খুন, লাশ গুম করে পড়ালেন ফজরের নামাজ (বাংলা ট্রিবিউন, ২৬ মে ২০২১)
"গত ১৯ মে এশার নামাজে ইমামতি করেন আব্দুর রহমান। এরপর পোশাক শ্রমিক মো. আজহারুল ইসলামকে (২৮) মসজিদে নিজের শয়নকক্ষে বিশ্রাম নিতে বলেন। সেই কক্ষে ইমামের সঙ্গে আজহারের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় ছুরি দিয়ে আজহারকে আঘাত করেন আব্দুর রহমান। দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন আজহার। কিন্তু পারেননি। সিঁড়িতেই কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন আব্দুর রহমান। এরপর নিজের কক্ষে নিয়ে যান লাশ। সেখানে ছয় টুকরো করেন। এরপর মসজিদের অজুখানার পাশে থাকা সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন লাশের টুকরোগুলো। ট্যাংকের মুখের ঢাকনা সিমেন্ট দিয়ে আটকেও দেন রাতারাতি। পানি ঢেলে ধুয়ে দেন রক্ত। এরপর ফজরের নামাজে ইমামতি করেন।
মূলত আজহারের স্ত্রী আসমা আক্তারের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার সরদারবাড়ি মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান। দক্ষিণখানের সরদারবাড়ি মসজিদে ৩৩ বছর ধরে ইমামতি করছেন আব্দুর রহমান।"
ইয়াবাসহ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ গ্রেফতার (বাংলা ট্রিবিউন, ২৬ মে ২০২১)
"ইয়াবাসহ মো. ইয়াছিন (৩৮) নামে এক মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার মো. ইয়াছিন আগ্রাবাদ বেপারীপাড়া তালিমুল করিম আদর্শ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। তার বিরুদ্ধে এর আগেও একটি মাদকের মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কুমিল্লার দেবিদ্বার থানায়ও অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের আছে।
অধ্যক্ষ হওয়ায় এলাকায় তার পরিচিতি ভাল এবং ঝুঁকিও কম। তাই তিনি এই পরিচয়ের আড়ালে ইয়াবা বিক্রি করেন। ২০১১ সালে ইয়াবা বিক্রি করতে গিয়ে একবার গ্রেফতার হন। তখন দেড় মাস জেলও খাটেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন নিজে ইয়াবা সেবন করে বলে স্বীকার করেছে। যৌন সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তিনি ইয়াবা সেবন করে থাকেন বলে জানিয়েছেন।"
ইতিপূর্বেও মাদ্রাসা অধ্যক্ষ কর্তৃক তার ছাত্রিকে যৌন নির্যাতন ও তার প্রতিবাদ করায় তাকে শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারার আলোচিত ঘটনাসহ মসজিদে ইমাম কর্তৃক আরবী পড়তে আসা শিশু ধর্ষনের অনেক ঘটনা আমরা জানি।
এছাড়াও, সম্প্রতি সারাদেশে ওয়াজ-নসিহত করে মানুষকে পরকালে 'জান্নাতের' লোভ দেখিয়ে রাস্তায় নামিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতিসহ ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে বহু মানুষের প্রানহানি করা এক রুহানি হুজুরের দামী রিসোর্টে গিয়ে ফুর্তি করার মত 'দুনিয়াতেই অনেক জান্নাতের' সন্ধান পাওয়া গেছে।
মাদ্রাসার শিক্ষক/ অধ্যক্ষ, মসজিদের ইমাম/ মুয়াজ্জিন যারা মানুষকে ধর্মের শিক্ষা দিয়ে থাকেন, এরা সমাজে কেবল ধার্মিক হিসেবেই সকলের কাছে সমাদৃত ও সম্মানিত। তাদের অন্য কোন পরিচয় হয়ত এখানে মূখ্য নয়।
কিন্তু ধর্মের মুখোশের আড়ালে তাদের কেউ কেউ ঠিক কতটা মানুষ কিংবা কতটা মানুষ রুপি অমানুষ তা তাদের কর্মকান্ডই মাঝেমাঝে আমাদেরকে স্বরণ করিয়ে দেয়!!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০২১ সকাল ১১:২৮