রাত ১২টা ১মিনিট।বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি ।ক্ষেতের ধারের ভাঙা ঘর থেকে ভেসে এলো নবজাতকের কান্নার আওয়াজ।বৃষ্টির ধ্বনি আর কান্নার শব্দ মিলে মনে হচ্ছে এক ধরণের রিমিক্স বাজছে।
দিন যায়।অভাব অনটনে বেড়ে উঠতে থাকে ডানপিঠে ছেলেটি।এরই মাঝে একদিন প্রচন্ড জ্বর আসে ছেলেটির বাবা রইসুদ্দিনের।দরিদ্র কৃষক রইসুদ্দিনের অসুস্থতা দিনে দিনে আরও বাড়ে।একদিন নিরুপায় হয়ে স্ত্রী রহিমাকে পাঠায় গ্রমের মাতব্বর মকবুলের কাছে।সুন্দরী রহিমাকে দেখে আর লোভ সামলাতে পারে না মকবুল।ক্ষুধার্ত হায়েনার মতো হামলে পড়ে রহিমার উপর।কোনো রকমে সম্ভ্রম নিয়ে বাড়িতে ছুটে আসে রহিমা।বাড়িতে এসে দেখে স্বামীর নিথর দেহটি পড়ে আছে মেঝেতে ।
রইসুদ্দিনের মৃত্যুর দুই দিন পরের কথা। রাত ১২টা ১মিনিট।৫ বছরের ছেলেকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে রহিমা।এমন সময় বাইরে কারা যেন ক্রমাগত দরজা ধাক্কান্নো শুরু করে।ভয়ে ছেলেকে নিয়ে খাটের নিচে গুটিসুটি মেরে থাকে রহিমা।একসময় দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে মকবুল আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা।হিংস্র জানোয়ারদের হাত থেকে নিজেকে সেদিন রক্ষা করতে পারেনি সদ্যবিধবা রহিমা।আর ৫ বছরের অবুঝ ছেলেটির চোখের সামনে ঘটে মাযের অপমান।বাকরুদ্ধ হয়ে চেয়ে থাকা ছাড়া সেদিন তার কিছুই করার ছিল না।
পরের দিন সর্বস্বহারা রহিমা ছেলেকে নিয়ে পাড়ি জমায় খুলনা সদরে।খুলনা লঞ্চঘাটে ছেলেকে রেখে নিজে পা বাড়ায় অজানার উদ্দেশ্যে।ছেলেটি বেড়ে উঠতে থাকে ঘাট এলাকার নোংরা পরিবেশে;চোর,বাটপার আর রংবাজদের মাঝে।এখান থেকেই সে শিখে- জোর যার,মুল্লুক তার।দয়া,মায়া,ভালোবাসা- এই শব্দগুলোর সাথে কখনোই তার পরিচয় হয়নি।সে শুধু শিখেছে,কিভাবে মানুষকে ঠকানো যায়,অন্যায়ভাবে প্রভাব বিস্তার করা যায়।
পাঁচ বছরের সেই ছেলেটিই একদিন হয়ে উঠে দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী,সিরিয়াল কিলার এরশাদ শিকদার...........
বি: দ্র: উপর্যুক্ত ঘটনার মূল সত্যতা ঠিক রেখে কল্পনার মিশেলে তৈরী একটি অণুগল্প
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৩৫