আমি যখন প্রথম আন্ডারওইয়ার পরা শুরু করি তখন আমি কেবল ক্লাস সেভেন থেকে এইট এ উঠেছি। অনেকটা বাধ্য হয়েই আন্ডারওইয়ার পরার সিদ্ধান্ত নেই। কারণটা খুলে বলছি।
সেভেন থেকে এইট এ উঠেছি। যৌবনের হাল্কা পাতলা বাতাস এসে প্রায়ই সুড়সুড়ি দিয়ে যেতে শুরু করল। কারনে অকারনে "খোকাবাবু" ঘুম থেকে জেগে উঠত !! :p স্কুল এ লজ্জায় পরতে হত এই নিয়ে। স্যার বা ম্যাডামদের দেখলে অনেকসময় ঘুরে দাঁড়াতাম, কারন খোকাবাবু যখন তখন মাথা চারা দিয়ে উঠত!!!!!
বাসাতেও প্রব্লেম এর শেষ নাই। বেশিরভাগ সময় হাফ প্যান্ট এর পকেটের ভেতর হাত ঢুকিয়ে খোকাবাবুকে ঠেসে ধরতে হত উরুর সাথে। নইলে বাসার সবার সামনে হাঁটাচলা করা যেত না। :p
অনেকেই বলবেন সমস্যাটা আমার একার ছিল। আসলে আমার সাথের ছেলেপেলেদেরও এই প্রব্লেম পরতে হত। এই যেমন ক্লাস এ একজনের খোকাবাবুর হয়ত ঘুম ভেঙ্গে গেছে !!! ঠিক সে সময় তাকেই ম্যাডাম দাঁড়িয়ে পরা মুখস্ত দিতে বলল!!
বেচারা আর কি করবে ভেবে পায় না, অইদিকে ভয়ে তার গলা হয়ত শুকিয়ে যাচ্ছিল। (আমারও এই ধরনের অভিজ্ঞতা হইসে রে ভাই)
তারপরও সে কোন রকমে বেঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়াল। তার হাতে একটা খাতা তলপেটের ঠিক সামনে সে লম্বা করে ধরে রেখেছিল যাতে অস্বাভাবিক উচু জায়গাটা ম্যাডাম এর চোখে না পরে।
কিন্তু আমরা ছিলাম পুংটা। আমরা ম্যাডামের সামনেই বলতাম খাতা ধরে পরা বলছ কেন?? খাতা নামিয়ে রাখ!! যে ওই ভিক্টিম এর পাশে থাকতো সে শুরু করে দিত খাতা টানাটানি। প্রাণপণে ওই ছেলেটি খাতাখানা তার তলপেটের সামনে ধরে রাখার আপ্রান চেষ্টা করত!!! ভয়ে আর লজ্জায় হয়ত খোকাবাবু ঘুমিয়ে পরত। তখন সে খাতাখানা ছেড়ে দিত। আর আমাদের দিকে এমনভাবে তাকাত যেটার মানে দাঁড়ায় ঃএই নে এখন কি দেখবি দেখ!!"
বন্ধুরা মিলে এই সমস্যার ব্যপারে অনেক আলোচনা হত। জাঙ্গিয়া কোথায় পাওয়া যায় তা কেউ জানত না। কথা থেকে এই "ইজ্জতের ত্যানা" খরিদ করব তা ভেবে ভেবে টেনশন করতাম।
এমন সময় একদিন রাস্তায় জাঙ্গিয়া সদৃশ বস্তু ফুটপাতে বিক্রয় করতে দেখে মহাআনন্দে তা কিনে বাসায় নিয়ে আসলাম।
আমার যে কি খুশি লাগছিল তখন তা বলে বুঝাতে পারব না। বন্ধুদের মধ্যে সবার প্রথমে জাঙ্গিয়া পরার গৌরব আমি অর্জন করতে চলেছি!!!!!!!!!
পরেরদিন জাঙ্গিয়া পরে স্কুল এ গেলাম.
আর সবার কানে কানে আমার পুরুষত্ব অর্জনের খবর রটিয়ে দিলাম (মেয়েদের বাদ রেখেছি অবশ্যই)
বন্ধুদের মধ্যে যারা খুব ক্লোজ তারা এই অভূতপূর্ব ঘটনাটির সত্যতা স্বচক্ষে যাচাই করতে চাইল। টইলেট এ গিয়ে চেইন খুলে আমার পিঙ্ক কালারের জাঙ্গিয়া তাদের সবাইকে দেখালাম!!
হ্যা আমার জাঙ্গিয়াটা পিঙ্ক কালারের ছিল । অইটার চারপাশে মেয়েলি লেইজ লাগানো ছিল। আমি এবং আমার বন্ধুরা কেউ বুঝতে পারি নাই যে ওইটা আসলে ছিল লেডিস জাঙ্গিয়া!!
বুঝবই বা কেমন করে ???
মেয়েদের কোন কারনে আন্ডারওইয়ার পরতে হইতে পারে তা এই অধমের কস্মিনকালেও কল্পনায় আসে নাই। কি করিয়া সম্ভব!!! নারি জাতির আমাদিগের মত এই ধরনের প্রব্ললেম কি করিয়া হইতে পারে যে উহারা আন্ডারওইয়ার পরিবে?????
আন্ডারওইয়ারটা আসলে আমাকে বেশ ভুগিয়েছিল!!!
ওটার সামনের অংশ বেশ সরু হওয়ায় আমার জিনিসপত্র সে কিছুতেই জায়গামত ধরে রাখতে পারতো না । হয় ডানদিক নয়তো বা দিক দিয়ে জিনিসপত্র বের হয়ে যেত। অনে কায়দা কসরত করে কিছুতেই ওইটাকে টেনে চওড়া করে আমার মালামাল ধারনের উপযোগী করতে পারি নাই।
পরে বুদ্ধি করে ওটাকে উল্টো করে পরতে লাগলাম। মানে সরু অংশটাকে পেছনে দিয়ে ঘুরিয়ে পরতে শুরু করলাম। এতে করে জাঙ্গিয়াটা আমার মালামাল ধারন করার উপযোগী হল বটে বাট প্রব্লেম হল পেছনদিকে। জাঙ্গিয়ার সরু অংশটা আমার পেছনে WWF রেসলার ড়িকিসি পাথুর মত ভেতরদিকে ঢুকে থাকতো। (আর ভাইঙ্গা বলতে পারব না )
কয়েকদিন পর আমার এক সচেতন খালামনি আমাদের বাসায় বেড়াতে এসে জিজ্ঞেশ করল প্রিতম তুমি কি আন্ডারওইয়ার পর?
আমি হ্যাঁসূচক মাথা নাড়ায় খালামনি আমার আন্ডারওইয়ার দেখতে চাইল।
দেখে খালামনি মিটিমিটি হাসলেন, আর বললেন এটা মেয়েদের,
আমি পুরাই টাস্কি!!!!!
পরে খালামনি আমার জন্যে এক্কেবারে পারফেক্ট সাইজের এক জোড়া আন্ডারওইয়ার পাঠিয়েছিলেন,
এরপর থেকে আমি পুরুষদের আন্ডারওইয়ার পরার গৌরবময় ইতিহাস শুরু করলাম।
উৎসর্গঃ-
গুরু ১
গুরু ২
সংগ্রহেঃ- আল ফাতাহ, ফেবু
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৩২