somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেবদাস না মরিলে কি হইত? (রম্য পোষ্ট)

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কিয়ৎকাল পূর্বে ভারতীয় বাংলা একখানা নাটক দেখিয়াছিলাম। প্রারম্ভ দেখা হয়নাই, তবে কিছু সময় অতিবাহত হইবার পরে বুঝিলাম ইহা ঐতিহাসিক দেবদাস ও পার্বতীকে নিয়া।

নাটকে দেবদাস পটকা মার্কা চেহারার এক ছোকরা যে পার্বতীর প্রমে হাবুডুবু খাইতেছে। তারপরের ঘটনা আমরা সকলেই অবহিত। দেবদাস গৃহ ত্যাগ করে ও চুনীলাল আর চন্দ্রমুখীর সহিত সখ্য গড়িয়া ওঠে। লক্ষনীয় পার্থক্য এই যে এইখানে পার্বতী অদ্যাবধি অবিবাহিতা থাকে।

যাহা হউক, ঘটনাচক্র তাহার আদি রূপ পরিগ্রহ করিয়া শেষ হইবার উপক্রম হয়। ভাবি, এই বুঝি দেবু মরিয়া গেল। কিন্তু না, এইখানে শরৎ বাবুর মত অবিবেচকের ভুমিকায় অবতীর্ন হননাই পরিচালক। পাঠক ও দর্শকের দীর্ঘদিনের অনাকাঙ্খিত বাসনা তিনি পূরণ করেন; দেবদাস ও পার্বতীর মিলন হয়।

শরৎববু বিশ্বাস করিতেন; ব্যর্থ প্রেম মাত্রেই ইতিহাস রচনা করে। ঠিক যেমন রোমিও-জুলিয়েট, লাইলী-মজনু, শিরি-ফরহাদ( লক্ষ্য করুন, প্রথমোক্ত ব্যতীত সর্বক্ষেত্রেই নারীর নাম আগেআসিয়াছে :))। কিন্তু আমাদের এ পরিচালক দর্শককে অশ্রুজলে স্নান করাইতে রাজী নহেন।

যাহা বলিতেছিলাম, দেবদাস ও পার্বতীর মিলন হয়। তাহারা সুখের সাগরে অবগাহন করিতে থাকে। দিন যায়, মাস যায়, বছর গড়ায়.. অনেক বছর।

এরপরেই বুঝিতে পারি, উহা ছিল স্মৃতি রোমন্থন বা ফ্লাশব্যাক। পরের দৃশ্যে সেই পটকা দেবদসকে দেখা যায় খাটে চিৎ হ্ইয়া পড়িয়া থাকিয়া দেয়ালে টানানো পার্বতীর একখানা বিবাহের ফটোর পানে মুখ খানা বাংলার পাঁচের মত করিয়া চাহিয়া রহিয়াছে। পাশে কে যেন মেঝ গর্জনের মত করিয়া নাসিকা গর্জন করিয়া ঘুমাইতেছে।

দেবুর দক্ষিন হস্ত ও পায়ে ব্যান্ডেজ। দেখিলে অনুমান করিতে কষ্ট হয়না উভয়ই ভাঙ্গা। হঠাৎ দেবদাস 'আউ..' বলিয়া ককাইয়া উঠিল ও কহিল 'আস্তে'। সাথে সাথে কাহার যেন গুরুগম্ভীর আওয়াজ শোনা গেল "আ মরণ, ঢং দেখে আর বাঁচিনে। বলি ঘুমিয়েও কি শান্তি নেই?"

ক্যামেরায় এবার যাহাকে দেখা গেল তাহাকে হাতী বলিয়া ভ্রম হইতে পারে। বিশাল দশাসই এক রমনী। তিনি পাশ ফিরিতে গিয়া আচম্বিতে একখানা একমণী পা দেবুর গায়ে উঠাইয়া দিয়াছিল বলিয়াই দেবুর এহেন আকুতি।

দেবদাস এইবার দর্শকের সহিত ঘুমন্ত রমনীর পরিচয় করাইয়া দিল। ইহাই সেই পার্বতী যাহার জন্য শরৎবাবু এক ঐতিহাসিক কাহিনী রচনা করিয়াছিলেন নিজে ইতিহাস হইয়াছিলেন।

পার্বতী পুজোয় একজোড়া স্বর্ণের বালা চাহিলে দেবদাস তাহার অপারগতা প্রকাশ করে। তাহাতেই ক্রুদ্ধ হইয়া পার্বতী এক হাতের ঝটকা মারিলে দেবদাস পপাত ধরণী তল হয়। আর তাহাতেই অস্থিভঙ্গ।

দেবদাসের সেই করুন মুখ দেখিয়া আপসুস হয়।! বারংবার সে বলিতেছিল, শরৎবাবুই উচিৎ করিয়াছিলেন।

কাহিনী এইখানেই সমাপ্ত।....

পরিশেষে একখানা উক্তি যাহা আমার এক শিক্ষক মহাশয়ের, " সিনেমার যেখানেই শেষ, বাস্তবতার শুরু সেখানেই"।

সবই ভাল থাকিবেন। আর ভাবিবেন, " ব্যাটা দেবদাস (আসল টা) মরিয়া বাঁচিয়াছে"।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৩০
২২টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×