এখানে মানুষ থাকে, এই নির্দয় নিষ্প্রাণ স্থানে,
লৌহপুরীতে?
এই শহরের ভিড়ে পাখিদের ওড়াউড়ি নেই,
গাভীর হাম্বারব কখনো শুনি না;
শুধু ট্রাফিক পুলিশের ঘন ঘন বাঁশি, লেদ মেশিনের শব্দ, কর্কশ
ঢালাই,
বাড়ির উঠানে এখানে ওঠে না চাঁদ, নদীময় তারাভরা
দেখি না আকাশ
এখানে মানুষ এক সাথে হেঁটে যায় কেউ কাউকে চেনে না, মানুষ
এখানে থাকে?
ঢের হয়েছে বিদ্যা, ঢের হয়েছে প্রাপ্তি, যেটুকু জীবন
আছে বুকে নিয়ে
এবার আপন মানুষদের কাছে ফিরে যাবো, গলা
ছেড়ে ডাকবো বাহার চাচা,
ডাকবো কোথায় তোমরা কানু কাকা?
ছি, এখানে মানুষ থাকে, এই সোনার খাঁচায়, ইটের জঙ্গলে,
বন্দিশালায়
হোটেলের বদ্ধ ঘরে, ফ্ল্যাট বাড়ির চার দেয়ালের মধ্যে
বৈদ্যুতিক আলোর এই অন্ধকারে,
এই স্নেহহীন, মায়াহীন, জলবায়ু শূন্য জতুগৃহে?
কতোদিন শুনি না ঘুঘুর ডাক, রাখালের বাঁশি,
টানা বাতাসের শব্দ
দেখি না সবুজ মাঠ, উধাও দিগন্ত
কোথাও দেখি না সেই মরিচের টালে গঙ্গাফড়িং,
লাউ জাংলার পাশে স্থলপদ্ম,
তবু বলি পেয়েছি প্রচুর সুখ, পেয়েছি প্রচুর শান্তি,
এবার অর্ধেক মানুষ আমি খুইয়ে এখানে
সব অনুভূতি, শুদ্ধতা, আনন্দ
সেই আপন মানুষদের কাছে ফিরে যাবো।
সেই বন্ধুগাছ, বন্ধুপাখি, ডোবার কচুরি ফুল,
সেই কাদামাটি জলে ভেজা বাড়ি
কাজলাদিদির কথা লেখা সেই পাঠ্যবই, তোমাদের কারো
কিছুই জানি না;
পাখিরা যেমন আপন পাখিদের সাথে মিশে যায়
আমিও তেমনি আপন লোকদের মাঝে মিশে যাবো,
এই এটুকু জীবন বুকে নিয়ে তোমাদের কাছে ফিরে যাবো
প্রিয় বৃক্ষ, প্রিয় নদী, আপন মানুষ।