আয়কর সর্ম্পকে প্রথম বেসরকারীভাবে গণসচেতনা বৃদ্ধি এবং Online free consultancy দিচ্ছে গোল্ডেন বাংলাদেশ এবং গোল্ডেন এসোসিয়েট্স
অগ্রিম কর প্রদান এবং নতুন করদাতা কর্তৃক অগ্রিম কর প্রদান
ক. অগ্রিম কর প্রধান- ধারা ৬৪
করদাতাকে প্রত্যেক আর্থিক বৎসরে অগ্রীম কর প্রদান করিতে হইবে যদি কোন করদাতার সর্বশেষ নির্ধারিত মোট আয় সাময়িক বা নিয়মিত কর নির্ধারনী আওতায় ৩,০০,০০০/- টাকা অধিক হইলে।
তবে কৃষি আয় এবং মূলধনী লাভ খাতে আয়ের ক্ষেত্রে অগ্রিম কর প্রদানকরিতে হইবে না অর্থাৎ ৬৪(১) ধারা এই খাতে আয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
(অর্থ আইন ‘৯৩ এ অগ্রিম কর প্রদানের জন্য সর্বনিম্ন আর্থিক সীমা করদাতার শ্রেনীভেদে ৫,০০০/-, ২০,০০০/-, ৬০,০০০/- টাকা যে নির্ধারিত ছিল, তাহা পরিবর্তন করিয়া সকল শ্রেণীর করদাতার জন্য এই সীমা ১,০০,০০০/- টাকায় উন্নীত করা হইয়াছে এবং আইন ২০০১ দ্বারা এই সীমা ২ লক্ষ করা হইয়াছে।) (অর্থ অধ্যাদেশ ২০০৭ দ্বারা ২,০০,০০০/- হইতে ৩,০০,০০০/- করা হইয়াছে।)
খ. অগ্রিম কর নির্ণয় -ধারা ৬৫
করদাতা কর্তৃক সেই পরিমাণ কর অগ্রিম প্রদান করিতে হইবে যে পরিমাণ কর সর্বশেষ আয়বর্ষের মোট আয়ের উপর নিয়মিত ভাবে বা শর্ত সাপেক্ষে নির্ধারিত হইয়াছে। তবে উক্ত অগ্রিম কর প্রদানের সময় উৎসস্থলে কর্তিত বা আদায়কৃত কর হ্রাস করা যাইবে।
গ. অগ্রিম করের কিস্তি- ধারা ৬৬
চারটি সমান কিস্তিতে অগ্রিম কর প্রদান করিতে হইবে। আয় বর্ষের ১৫ই সেপ্টেম্বর, ১৫ই ডিসেম্বর, ১৫ই মার্চ এবং ১৫ ই জুনের মধ্যে তাহা প্রদান করিতে হইবে।
ঘ. অগ্রিম করের অনুমান- ধারা ৬৭
তবে যে করদাতা অগ্রিম কর প্রদান করিবেন তিনি যদি মনে করিয়া থাকেন যে, সংশ্লিষ্ট কর বৎসরে তাহার করের পরিমাণ পূর্ববতী কর পৎসরের চেয়ে কম হইবে তাহা হইলে তিনি শেষ কিস্তি অগ্রিম কর প্রদানের পূর্বে উপকর কমিশনারের নিকট প্রদেয় বিবরণ দাখিল করিয়া পূর্বে প্রদত্ত কিস্তির টাকা বাদ দিয়া অবশিষ্ঠ টাকা সর্বশেষ কিস্তিতে প্রদান করিতে পারিবেন।
ঙ. নতুন করদাতা কর্তৃক অগ্রিম কর প্রদান- ধারা ৬৮
যে কোন ব্যক্তি যাহার আয়ের উপর এই অধ্যাদেশের বিধি অনুযায়ী পূর্বে কর নির্ধারণ করা হয় নাই, তাহার আয়ও যদি কোন অর্থ বৎসরে ৩ লক্ষ টাকার উপরে হইবার সম্ভাবনা থাকে, তবে তাহাকেও অগ্রিম কর প্রদান করিতে হইবে।
(অর্থ আইন ১৯৯৩ এ ৫০,০০০/- টাকা হইতে বর্ধিত করিয়া ১,০০,০০০/- টাকা করা হয় এইঅর্থ আইন ২০০১ দ্বারা ২ লক্ষ টাকা করা হয়।)
(অর্থ অধ্যাশে ২০০৭ দ্বারা ২ ল হইতে বর্ধিত করিয়া ৩ লক্ষ করা হইয়াছে।)
চ. অগ্রিম করের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থতা – ধারা ৬৯
যে করদাতা অগ্রিম কর প্রদানের যোগ্য, করের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হইলে সংশ্লিষ্ট কিস্তির জন্য খেলাপী করদাতা মনে করা হইবে।
ছ. অগ্রিম কর প্রদানে ব্যর্থতার জন্য সুদ- ধারা ৭০
যে করদাতা অগ্রিম কর প্রদানের যোগ্য, নিয়মিত কর নির্ধারণের সময় যদি দেখা যায এই বিধি অনুসারে অগ্রিম কর প্রদান করা হয় নাই তখন করের সহিত সরল সুদ যোগ করা হইবে।
জ. অগ্রিম কর জমা (Credit) হিসাবে বিবেচিত-ধারা ৭১
সুদ বা জরিমানা ব্যতিত কোন টাকা করদাতা কর্তৃক অগ্রিম প্রদান বা আদায় হয়, তাহা যে আয় বৎসরের আয়ের সহিত সম্পর্কিত সেই বৎসরে কর প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া গন্য করা হইবে।
ঝ. অতিরিক্ত অগ্রিম কর প্রদানের জন্য সরকার কর্তৃক সুদ প্রদান –ধারা ৭২
কোন করদাতা নির্ধারিত করের চেয়ে কোন আয় বর্ষে অধিক অগ্রিম কর প্রদান করিলে সরকার উক্ত করদাতাকে প্রদত্ত অতিরিক্ত করের উপর শতকরা ১০% টাকা হারে সরল সুদ প্রদান করিবেন। সরল সুদ দুই বৎসরের বেশি সময়ের জন্য প্রদান করা হইবে না এবং যে তারিখে নিয়মিত কর নির্ধারিণ করা হইয়াছে, সেই কর নির্ধারণী বৎসরের ১লা জুলাই হইতে গণনা করা হইবে।
(অর্থ আইন ১৯৯২ এ সুদের হার ১৮% হইতে ১২% করা হয এবং অর্থ আইন ৯৪ এ ১২% হইতে ১০% করা হয় এবং১৯৯৭ সালের অর্থ আইনে ১লা এপ্রিলের পরিবর্তে ১লা জুলাই হইতে গণনা করা হইবে বিধান করা হয় এবং ১৯৯৮ সালের অর্থ আইনের মাধ্যমে “কর বর্ষের ১লা জুলাই হইতে” শব্দসমূহ প্রতিস্থাপন করা হইয়াছে।
ঞ. কম অগ্রিম কর প্রদানের জন্য করদাতা কর্তৃক সুদ প্রদান –ধারা ৭৩
কোন অর্থ বৎসরে করদাতা নিজে অগ্রিম কর নির্ধারণ করিয়া পরিশোধ করিলে পরিশোধিত অগ্রিম কর উৎসে কর্তিত কর সহ, তাহার নিয়মিত নির্ধারিত করের ৭৫% এর কম হইলে উক্ত করদাতাকে অপরিশোধিত করের উপর ১০% সরল সুদ প্রদান করিতে হইবে।
(অর্থ আইন ১৯৯২ এ সুদের হার ১৮% হইতে ১২% করা হয এবং “নির্ধারিত করের” পরিবর্তে “নির্ধারিত করের৭৫% প্রতিস্থাপন করা হয এবং অর্থ আইন ৯৪ এ ১২% হইতে ১০% করা হয় সুদের সময়কাল হইবে অগ্রিম কর পরিশোধের সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষের ১লা জুলাই হইতে নিয়মিতকর নির্ধারণের তারিখ পর্যন্ত বা ১লা জুলাই হইতে দুই বৎসর পর্যন্ত এই দুইয়ের মধ্যে যেটি কম হইবে।
(অর্থ আইন ২০০২ দ্বারা এপ্রিল এ পরিবর্তে জুলাই করা হয়।
ট. রিটার্নের ভিত্তিতে কর প্রদান ধারা-৭৪
(ধারা ৭৫, ৭৭, ৭৮, ৮৯(২), ৯১(৩) অথবা ৯৩(১) অনুসারে রির্টান জমা দেওয়া প্রযোজ্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে রির্টান জম দিবার দিন বা পূর্বে রিটার্নেল ভিত্তিতে দেয় কর অবশ্যই প্রদান করিতে হইবে। এক্ষেত্রে তাহার আয়ের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন করা হইলে বা প্রদান করা হইলে তাহা বিয়োগযোগ্য হইবে। যদি কোন ব্যক্তি যথাযথ কারণ ব্যতীত কর প্রদান করিতে ব্যর্থ হন তবে তাহাকে খেলাপী করদাতা হিসাবে বিবেচনা করা হইবে।
ধারা-৬৪, ৬৫, ৬৬ এবং ৬৭ অনুসরণ করে করদাতার অগ্রিম কর প্রদান, অগ্রিম কর নির্ধারণ, অগ্রিম করের কিস্তি এবং অগ্রিম কর নিরূপণ করা হয়।
করদাতার সর্বশেষ আয় বৎসরের নিয়মিত অথবা সাময়িক কর নির্ধারণের মাধ্যেমে মোট আয় তিন লক্ষ টাকার উপর নির্ধারণ করা হলে তখন প্রত্যেক করদাতাকে প্রত্যেক বৎসরে অগ্রিম প্রদানের মাধ্যমে কর প্রদান করতে হবে। তবে কৃষি আয় এবং মূলধনী আয়ের ক্ষেত্রে ইহা প্রযোজ্য হবে না।
ধারা ৬৮ অনুসরণ করে নতুন করদাতার মোট আয় তিন লক্ষ টাকা অতিক্রম করলে তিনি প্রত্যেক অর্থ বৎসরের ১৫ জুনের পূর্বে তার মোট আয় এবং অগ্রিম কর প্রাক্কলন কর প্রদান করবেন।
আয়কর সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদেরকে জানাতে পারেন আমরা যথা সাধ্য দ্রুত চেষ্টা করব সমাধান দিতে।