somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বান্দরবেলা..............৬

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ ভোর ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটখালার প্রথম বাচ্চা হবে। সবাই খুব খুশী,কয়দিন পর যাওয়ার পর আস্তে আস্তে খালার পেট ফুলতে লাগলো।খালার পেট ফোলা দেইখা বড় মামারে জিজ্ঞেস করলাম খালার পেট এমন ফুলা কেন?মামা উত্তর দিলো বাচ্চা হওয়ার সময় পেট ফুইলা যায়।শুইনা আমি বললাম বাচ্চা কেমনে হয়?।মামা বললো বিয়ে করলে বাচ্চা হয়।আমি বললাম আমিও তো বিয়া করছি তাইলে আমার বাচ্চা হয় না কেন?(আমার বান্দরবেলা.....২নং দ্রষ্টব্য)একথা শুইনা মামা আমার মাথায় চাটি মাইরা বলে "যা,ভাগ ছোট বয়সে এতো কিছু জানতে হয় না"।এর কয়দিনপর আমার বউ বেড়াইতে আসে বাড়িতে।বউরে নিয়া খেলতে খেলতে কইলাম "জানো ছোট খালার বাচ্চা হবে।শুইনা বউ বলে,'বাচ্চা কেমনে হয়?'আমি কইলাম বিয়া করলে বাচ্চা হয়।ব্উ কইলো তাইলে আমাদর বাচ্চা হয় না কেন?আমি কইলাম বাচ্চা হইতে হইলে পেট ফুলাইতে হয়।বউ কইলো পেট কেমনে ফুলায়?।আমি পড়লাম চিন্তায়,পেট কেমনে ফুলাইতে হয় এইটা তো জানি না।আবার মামারে জিজ্ঞেস করতেও ভয় পাইতে ছিলাম।শেষ পর্যন্ত বহুৎ মাথা খাটাইয়াবাইর করলাম ফুটবল যে ভাবে হাওয়া দেয় সেভাবে ফুলাইতে হবে।ঘর থেইকা ছোট মামার ফুটবলে হাওয়া দেওয়ার পাম্প মেশিন নিয়া আসলাম।বউয়ের হাতে পাম্পের পাইপ দিয়া বললাম এইটা মুখে ভরো আমি হাওয়া দেই,বউ কিছুতেই নোংরা পাইপ মুখে দিবেনা।আমারে হইলো অন্যকোন ভাবে হাওয়া ভরো।আমি বুদ্ধি খাটায়া বাইর করলাম মুখ দিয়া হাওয়া না ভরলে আর একটা উপায়ই আছে হাওয়া ভরার কিন্তু লজ্জ্বার চোটে কিছু কইতে পারতেছিলাম না।শেষে হাওয়া ভরার চিন্তা বাদ দিলাম।বউ কইলো তাইলে কি আমাদের বাচ্চা হবে না!।বউয়ের এহেন আর্তনাদ শুইনা আমি ভাবলাম যেমনেই হোক একটা বাচ্চার ব্যবস্থা করতেই হবে।আমি রান্নাঘর থেইকা একটা বড়সড় কুমড়া নিয়া আইসা বউয়ের পেটে রাখলাম কিন্তু ভারী হওয়াতে বারবার ফ্রকের নীচে দিয়া কুমড়াটা পইড়া যাইতে ছিলো।শেষে একটা দড়ি দিয়া পেটের সাথে কুমড়া বাইন্ধা দিলাম।সাথে সাথে ধুমসা মার্কা কুমড়ার ভারে আমার বউ হাত পা ছড়াইয়া মেঝের মধ্যে উপুড় হইয়া পইড়া চীল চিৎকার দিয়া কান্দাকাটি শুরু কইরা দিলো।কান্দা শুইনা আমি এক দৌড়ে ঘরের বাইরে.........।দশ,বার দিন পর বউ আবার আসলো বেড়াইতে।এবার আসার সময় দেখি সাথে একটা পুতলা নিয়া আসছে।আমার কাছে আইসা বলে,'এইটা আমাদের বাচ্চা"পুতুলের মাথায় চুল ছিলো না।আমার টাকলা পুতুল দেইখা সন্দেহ হইলো এইটা আমার বাচ্চা কি না।আমি কইলাম এইটা আমার বাচ্চা কিছুতেই হইতে পারে না।আমার বউ কয় না এইটা তোমারই বাচ্চা।এমন ঝগড়া করতে করতে একসময় পুতলা ধইরা এক আছাড় দিয়ে কয়েক টুকরা কইরা ফেললাম।আমার কান্ড দেইখা বউ মেঝেতে গড়াগড়ি কইরা কানতে লাগলো. লাগলো।মা কান্দা শুইনা ভীমসেনের মতো বেলন হাতে উইড়া আইসা আমার উপর ঝাপাইয়া পড়লো।মাইর খেয়ে আমিও মেঝেতে রোলারের মতো গড়াইয়া গড়ইয়া কানতে লাগলাম আর বলতে লাগলাম এইটা আমার বাচ্চা না।সবাই জিজ্ঞেস করলো তাইলে এইটা কার বাচ্চা? আমি বড় খালুরে দেখায়া বললাম এইটা বড় খালুর বাচ্চা।এ কথা শুইনা খালুর হেঁচকি উইঠা ভীড়মি খাওয়ার মতো অবস্থা।সবাই বললো এইটা বড় খালুর বাচ্চা কেমনে বুঝলা?আমি কইলাম বড় খালু আর পুতলা দুইজনেই টাকলা,আর আমার মাথায় চুলে ভর্তি তাইলে এইটা কার বাচ্চা তোমরাই বলো।আমার আবিস্কারের কথা শুইনা সবাই টাশকি খায়া আমার দিকে চায়া রইলো।আমার বউও কান্না বন্ধ কইরা পিটপিট কইরা তাকায় ছিলো।পরে বাসায় যাওয়ার সময় বউ কইলো পরেরবার আসার সময় আমার জন্য চুলওয়ালা একটা বাচ্চা নিয়া আসবে।

ছুডুবেলায় একবার সিনেমায় অভিনয় করছিলাম।মার এক বান্ধবীর হাজবেন্ড ছিলো প্রডিউসার,ডিরেক্টর।উনি একদিন মা কে বললো,আপনার ছেলেকে দেন সিনেমায় অভিনয় করাই।সিনেমায় অভিনয়ের কথা শুইনা আমি খুশিতে গড়াগড়ি খাইতে লাগলাম।কয়েকদিন পর এফডিসিতে গেলাম মার সাথে।আমার প্রথম সীন ছিলো শাবানা আন্টির সাথে।উনি আমারে জড়াইয়া ধইরা গান গাবে আর কানতে থাকবে।সিনেমার লোকজন আমারে আধময়লা একটা কাপড় পরাইয়া শাবান আন্টির কোলে উঠায় দিলো।ডিরেক্টর অ্যাকশন বলতেই শাবানা আন্টি আমারে জড়াইয়া ধইরা অভিনয় শুরু কইরা দিলো।অভিনয়ের সময় ইমোশনের চোটে উনি এমনভাবে আমারে জড়ায় ধরছিলো যে চাপের চোটে চোখমুখ উল্টায়া আমার দম যায় যায় অবস্থা।শাবান আন্টি আমারে কোলে নিয়া গান গায়াই চলতেছে আর এদিকে আধময়লা পোষাকের ভিতরে ছারপোকা না উকুন জাতীয় পোকার কামড়ে আর উনার শরীর থেইকা আসা ঘামের গন্ধে আমার মইরা যাওয়ার অবস্থা।কিছুক্ষন পর ডিরেক্টর কাট বলতেই আমি একলাফে ঊনার কোলের থেইকা নাইমা দৌড়ায়া মার কোলে উঠলাম।একটু পর গানের আরেকটা সীবের জন্য আমারে ডাক দিলে আমি আর মার কোলের থেইকা নামি না।সবাই আইসা আমারে নেওয়ার জন্য টানাটানি শুরু কইরা দিলো।শেষে শাবান আন্টি আইসা কইলো কি হইছে বাবু?আমি উত্তর দিলাম আপনের বগল থেইকা ঘামের গন্ধ বাইর হইতেছে আপনে নোংরা গোসল করেন না,আমি আপনের সাথে অভিনয় করবো না।আমার একথা শুইনা ইউনিটের সবাই তব্দা খায় দাড়ায় থাকলো।ডিরেক্টররে দেইখা মনে হইতেছিলো উনি যে কোনসময় উনি হার্টফেল করতে পারেন।এই ঘটনার পর আমারে আর অভিনয়ের জন্য ডাকে নাই।পরে শুনছিলাম শাবানা আন্টি নাকি এই ঘটনার পর দুইদিন শুটিং এ আসেন নাই।

একবার আমার এক খালাতো ভাইয়ের জন্ডিস হইছিলো।জন্ডিসের জন্য সারাক্ষন বাসায় শুয়ে থাকতো।স্কুল,পড়াশোনা সব বাদ ছিলো।এইটা দেইখা আমি ভাবলাম আমারও যদি জন্ডিস হইতো তাহলে আমারও পড়াশোনা করা লাগতো না।আমি জন্ডিস হওয়ার উপায় খুজতে লাগলাম।এদিকে খালাতো ভাইয়ের জন্ডিস বেড়ে যাওয়াতে শরীর পুরা হলুদ হয়ে গেছিলো।আমি ভাবলাম আমার শরীর যদি হলুদ হয়ে যায় সবাই মনে করবে আমারও জন্ডিস হইছে।এসব ভাবনা চিন্তা করে স্টোররুমে রঙ্গের ডিব্বা থেইকা হলুদ রং নিয়া শরীরে ঢাইলা দিলাম।তারপর ব্রাশ দিয়া ঘইষা ঘইষা পুরা শরীর হলুদ কইরা ফেললাম।রঙ্গের সাথে প্লাস্টার না কি যেন মেশানো ছিলো জানতাম না।রং করা শেষ হইলে রুম থেইকা বাইর হইয়া উঠানে আইসা ভাউয়া ব্যাঙ্গের মতো উপুর হয়া শুয়ে থাকলাম একটু পর রোদে রং শুকাইতে শুরু করলো।রং পুরাপুরি শুকানের পর দেখি আমি আর নড়তেচড়তে পারি না।আমার হাত পা সব শক্ত হইয়া আছে।আমার অবস্থা পুরা খারাপ।এদিকে কাউকে ডাকতে পরতেছি না কারন ঠোট একটার সাথে আরেকটা লাইগা আছে।একটু পর কাজের বুয়া উঠানে আইসা দেখে হলুদ রং এর কি যেন উঠানে চিৎপাত হয়ে শুয়ে আছে।এইটা দেইখা বুয়া বিকট একটা চিৎকার কইরা মাথা ঘুরাইয়া লাট্টুর মতো পইড়া গেলো।বুয়ার চিৎকারে সবাই উঠানে আইসা দেখে সে জ্ঞান হারায়া পড়ে আছে আর হলুদ মতো একটা বস্তু উঠানে ভাউয়া ব্যাং এর মতো চিৎপাত হয়া আছে।ছোটমামা কোথেইকা একটা লম্বা লাঠি নিয়া আইসা আমার ভুড়ির মধ্যে গুতাইতে লাগলো।ঠোট বন্ধ থাকায় আমি কিছু বলতে পারতেছিলাম না,নড়তেও পারতেছিলাম না আর এদিকে লাঠির গুতা খায়া আমার সুন্দর ভুড়িটা ফাইটা যাবার দশা।একসময় নানীও একটা লাঠি নিয়া আইসা আমারে গুতাগাতি দিয়া বলে এইটা তো তামিমের মতো লাগতেছে।পরে সবাই মিলে আমারে ঘরে নিয়া গেছিলো।পরে তারপুলিন না কি যেন আমার শরীরে ঘইসা ঘইষা শরীর থেইকা রং উঠাইছিলো।এই ঘটনার পর বুয়ার অনেক জ্বর হইছিলো।সে মনে করছিলো তারে জ্বীন ধইরা নিতে আসছিলো।

একবার আমার খালাতো ভাই কোথেইকা যেনো জোলাপের গুলি যোগাড় কইরা নিয়া আসছিলো।একদিন ভাইয়ার ঘর থেইকা ঐ গুলি চুরি করে ছাগলের খাবারের সাথে মিশায় দিছিলাম।দুপুরে যথারিতী নানার পেয়ারের ছাগল দুইটা রাজার মতো খাবার খায় উঠানে বইসা জাবর কাটতেছে।একটু পর বসা অবস্থাতেই ছাগল দুইটার পিছনদিক থেইকা পাতলা পায়খান বাইর হওয়া শুরু করলো।সবসময় ছাগলরে গুটি গুটি খেজুরের বিচীর মতো লাদি ছাড়তে দেখছি।ঐবার প্রথম কোন ছাগল কে পাতলা হাগু করতে দেখছিলাম।সারাদিন হাগু করতে করতে দুর্বল হয়া এমন অবস্থা হইলো যে ছাগল দুইটা আর উঠতে পারে না।বইসা বইসাই হাগু করতে লাগলো আর করুণ স্বরে ম্যা ম্যা করতে লাগলো।পরে রাতে ডাক্তার ডাইকা হাগু বন্ধ করতে হইছিলো।

চলবে......................

আমার বান্দরবেলা......১
আমার বান্দরবেলা.......২
আমার বান্দরবেলা........৩
আমার বান্দরবেলা........৪
আমার বান্দরবেলা........৫

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০০৯ ভোর ৬:৫২
১০৬টি মন্তব্য ৯৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×