প্লে গ্রুপে থাকতে বার্ষিক অনুষ্ঠানে একবার রাজপুত্রের অভিনয় করছিলাম।নাটকের শেষ সিনে রাজপুত্র ডাইনিবুড়ী কে মেরে রাজকন্যারে নিয়া রাজ্যে ফিরা যায়।তো শেষ সীনের আগে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাথরুমে গেছিলাম।বাথরুম থেইকা বাইর হইতে না হইতে শুনি শেষ দৃশ্যের ঘোষনা হয়া গেছে।আমি প্যান্ট না পইড়াই রাজকন্যারে বাচাঁইতে আমার কাঠের তালোয়ার নিয়া স্টেজে দৌড় মারলাম।অবস্থা বেগতিক দেইখা ডাইনীবুড়ীর পোষা বাঘ আমারে পাঁজাকোলা কইরা স্টেজের বাইরে নিয়া যাইতে চাইলো( বাঘ সাজছিলো স্কুলের এক স্যার)।কিন্তু তখন আমি রাজকন্যারে পাষাণ ডাইনীবুড়ীর হাত থেইকা উদ্ধার করার জন্য মরিয়া।বাঘের চোখে কাঠের তালোয়ার দিয়া দিলাম এক রামগুতা,গুতা খায়া বাঘ 'বাপরে' বইলা মাটিতে গড়াগড়ি খাইতে লাগলো এদিকে আমি ডাইনীর সামনে গিয়া তালোয়ার দিয়া মাথায় এক চাটি মাইরা বললাম "এবার তোর শয়তানী শেষ রাক্ষসী"।ডাইনী নেংটা রাজপু্ত্ররে দেইখা ডায়লগ ভুইলা হা কইরা আমার দিকে তাকায় রইলো।আমি ভাবলাম এখন যদি ডাইনী ডায়লগ না দিতে পারে তাহলে তো নাটক ভন্ডুল হয়া যাবে।তাই আমিই বানায় বানায় কয়েকটা ডায়লগ মাইরা লাথিগুতা দিয়া ডাইনিরে মাটিতে শুয়াইয়া রাজকন্যার দিকে বললাম 'চলো এবার রাজ্যে ফিরে যাই"।বইলাই একখানা নুরানী হাসি উপহার দিলাম। রাজকন্যা আমার দিকে এতোক্ষন হা করে তাকায় ছিলো।আমি রাজ্যে ফিরা যাবার কথা বলতে ফিক কইরা হাইসা দিয়া বলে "ছিহ! তুমি তো নেংটু।তোমার সাথে যাব না" বইলা মুখ ঢাইকা উল্টা দিকে দৌড় দিছে।এদিকে রাজকন্যারে ছাড়া ফিরা গেলে রাজ্যে আমার মান-সুলেমান কিছুই থাকবে না তাই রাজকন্যারে ধরার জন্য আমিও পিছে পিছে তালোয়ার উঁচায়া দৌড়াইতে লাগলাম।এদিকে দর্শকরা আমার কান্ড দেইখা হাসাহাসি শুরু কইরা দিছে।আমি ভাবলাম রাজকন্যারে ধরতে পারতেছি না দেইখা সবাই হাসতেছে।অপমান থেইকা বাঁচার জন্য আরও জোরে রাজকন্যার পিছনে দৌড়াইতে লাগলাম।বহুৎ দৌড়ানির পর রাজকন্যার চুলের নাগাল পাইলাম।চুল ধইরা হিড়হিড় কইরা টানতে টানতে আমার রাজকন্যারে স্টেজের ভিতর নিয়া গেলাম।নাটক শেষে অনেক হাততালি পাইছিলাম।ফার্স্ট প্রাইজও পাইছিলাম।তবে রাজকন্যারে বাঁচানের জন্য নাকি প্যান্ট না পইড়া স্টেজে ঢুকার সাহস দেখানের জন্য পুরস্কারটা পাইছিলাম সেটা আজও বুঝি নাই।নাটক শেষে সবাই বাসায় চইলা যাবে এমন সময় আমি শুরু করলাম কান্নাকাটি।রাজকন্যারে ছাড়া বাসায় কিছুতেই ফিরবো না।হাউমাউ কইরা কানতে শুরু করলাম।আমার কান্দা দেইখা রাজকন্যাও কাঁনতে শুরু কইরা দিলো।সে ও আমার সাথে আমার বাসায় যাবে।আমাদের সম্মেলিত আহাজারিতে আমাদের বাপ মার মন গললো।শেষ পর্যন্ত রাজকন্যারে বগলদাবা কইরা আমার রাজ্যে মানে বাসায় নিয়া আসছিলাম।সন্ধ্যা পর্যন্ত খেলাধুলা কইরা,পরে আবার আসবার কথা দিয়া রাজকন্যা তার রাজ্যে ফিরা গেছিলো।বাসায় যাওয়ার আগে আমার একটা হাতি নিয়া গেছিলো আর ফেরত দেয় নাই।
ছুডুবেলায় হাগু করাটা আমার সবচেয়ে অপছন্দের কাজ আছিলো।সবসময় ভাবতাম হাগু করার ব্যাপারটা না থাকলে মানুষের কত সময় বাঁচতো।আমার এমন দার্শনিক চিন্তাভাবনা থেইকা বাইর করলাম যে বাথরুম করার রাস্তা বন্ধ কইরা দিলে আর কোন চিন্তা থাকবে না।যতই খাও হাগু বের হবে না।বাসায় ফেভিকল জাতীয় একধরনের আঠা ছিলো।ঐটা হাগু করার রাস্তায় পুরাটা ঢাইলা দিয়া চুপচাপ বিছানায় শুয়ে থাকলাম।ঘন্টাখানেক পর দেখি আঠা শুখায় গেছে।কিন্তু সমস্যা হইলো হাটার সময় পাছা উঁচায়া হাটতে হয়।যাই হোক ঐ ভাবেই হাটাহাটি করতে লাগলাম।সারাদিন ভালোই কাটছিলো।কিন্তু বিকালের দিকে অবস্থা খারাপ হইতে লাগলো।কড়া হাগু চাপছিলো আবার হাবিজাবি খাওয়ার ফল হিসেবে বিষাক্ত বায়ু বাইর হবার জন্য আকুলিবিকুলি করতেছিলো।সন্ধ্যার দিকে অবস্থা আরও খারাপ হইলো।ব্যাথার চোটে আমি বিছানায় শুইয়া গড়াগড়ি করতে লাগলাম।মা জিজ্ঞেস করে,' কি হইছে?' আমি বললাম,হাগু চাপছে কিন্তু করতে পারতেছি না।আঠা দিয়া হাগুর রাস্তা বন্ধ করে দিছি।মা শুইনা প্রায় ভীড়মি খায়া পড়ে।বাবা তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে নিয়া গেলো।ডাক্তার অনেক কিছু করার পর রাস্তা পরিস্কার হইলো আর আমি হাগু করতে পারলাম।এই ঘটনার পর একটা চরম সত্য ছুডুবেলাতেই বুইঝা গেছিলাম তা হইলো, "ভোগে নয়,ত্যাগেই শান্তি"
নানার ২ টা ছাগলই আমারে অনেক যন্ত্রনা করছে,তবে চার বার ডলা খাওয়ার পর আমারে দেখলেই উল্টাদিকে দৌড় দিতো।ফলে আমিও কিছু করার সুযোগ পাইতাম না।এসব কারনে মনটা প্রায়ই উদাস থাকতো।অবশেষে একদিন সুযোগ আসলো।দুপুরবেলায় দেখি ছগল দুইটা রোদে বইসা ঝিমাইতেছে।আমি রান্নাঘর থেইকা মরিচের গুড়া আইনা ছাগল দুইটার পশ্চাৎদেশে পুরা বয়াম ঢাইলা দিলাম।একটু পর পাছা জ্বলা শুরু করলে ছাগল দুইটাই কিয়ামত আইসা গেছে এমন ভাব কইরা চিৎকার শুরু করলো সেইসাথে একেকটা লাফে দশ হাত উপরে উইঠা যাইতে লাগলো।মা ছাগলের চিৎকার শুইনা লাঠি হাতে বাইর হইলো আমারে মারার জন্য,ততোক্ষনে আমি এক লাফে বাসার বাইরে।পরে বাসায় আইসা শুনি কালো ছাগল টা নাকি লাফালাফি করতে করতে বাসার দেয়ালে উইঠা গেছিলো।এই ঘটনার পর বেশ কিছুদিন ছাগল দুইটা পাছা চিপায় চিপায় হাটতো আর করুন সুরে ম্যাৎকার করতো।
চলবে.............
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০০৯ সকাল ৭:০৫