somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বান্দরবেলা............২

০৮ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার ছোট খালার বিয়ে ছিলো প্রেমের বিয়ে।বিয়ের আগে আমাকে বিকালবেলা ঘুরাবার কথা বলে সোশালওয়েলফেয়ার কলেজের মাঠে যাইতো খালুর সাথে দেখা করতে।বাসায় ফেরার পথে সবসময় চকলেট কিনা দিতো দেখা করার কথা যাতে ফাঁস করে না দেই, একদিন দেখা করে ফেরার সময় চকলেট কিনা দিবার কথা ভুইলা গেছিলো,খালাকে সে কথা মনে করায় দিতেই আমারে দিছে এক রামধমক।ধমক খায়া আমি সারা রাস্তায় চুপচাপ।বাসায় ফিরার পর সোজা নানার রুমে ঢুইকা নানারে বললাম খালা এক মোচওয়ালা লোকরে গাল টিইপা আদর করছে আজকে।শুইনা নানা তো পুরা ফায়ার।২য় বিশ্ব যুদ্ধের আমলের একটা গাদা বন্দুক নিয়া ছোট খালারে গুলি করতে বাইর হইছে। আম্মুরা সবগুলি ভাইবোন নানারে খুব ভয় পাইতো,ঐদিন নানার চিৎকার শুইনা যে যেখান দিয়া পারছে দৌড়ায়া পালাইছে,আমার নানিও ভয়ের চোটে বাথরুমে গিয়া দরজা বন্ধ কইরা বইসা ছিলো সন্ধ্যা পর্যন্ত বাইর হয় নাই।আর ছোট মামা দুইতালার কার্নিশে নাইমা আর নিচে নামার উপায় খুইজা পায়না আবার নানার ভয়ে রুমেও ঢুকতে পারেনা।একবার নানা জানালা দিয়া কি মনে কইরা যেন উকি মারছিলো,ছোট মামা নানার হাত থেইকা বাচাঁর জন্য কার্নিশের পাশে বাথরুমের পাইপ বেয়ে নামতে গিয়া পুরা ফান্দে,নামতেও পারেনা,উঠতেও পারেন,অনেকক্ষন এভাবেই ঝুইলা ছিলো।আর ছোট খালা নানার রুমেই খাটের নীচে লুকায় ছিলো।

বহুৎ ঝামেলার পর ছোট খালার বিয়া ঠিক হইলো খালুর সাথে।বিয়ার দিন আমারে আর খালুর এক ভাগ্নীরে ছোট জামাই বউ সাজায়া বসায় দিলো খালা,খালুর পাশে।বিয়ে শেষে খালু,খালারে নিয়া গাড়ীতে উঠবে এমন সময় আমি দিলাম মড়া কান্না জুইড়া,কারন আর কিছুই না আমার খালুর ভাগ্নীও বরযাত্রীর সাথে চইলা যাবে।আমি আমার বউরে (খালুর ভাগ্নী) কিছুতেই যাইতে দিমু না,মেঝেতে গড়াগড়ি কইরা কান্না শুরু কইরা দিলাম।সবাই যতই আমারে বুঝায় আমি বুঝি না, বলতে লাগলাম খালু খালারে বিয়ার পর নিজের বাসায় নিয়া যাইতেছে আমিও আমার বউরে আমার বাসায় নিয়া যামু।আমার কান্না দেইখা খালুর ভাগ্নীও কান্দাকাটি লাগায় দিছিলো, সে মনে করছিলো তারে সত্যি সত্যিই রাইখা সবাই চইলা যাবে।আমারে সবাই বুঝ দিলো যে তোমার বউ আজকে কাপড়চোপড় সাথে নিয়া আসে নাই তাই থাকতে পারবে না কালকে সবকিছু নিয়া তোমার কাছে চইলা আসবে।পরেরদিন ভোরে উইঠা গেলাম বউরে শুভেচ্ছা জানাইতে,হাজার হোক আজকে আমার কাছে চইলা আসবে বাপমারে রাইখা।কিন্তু সারাদিন,দুপুর,বিকাল অপেক্ষা কইরাও দেখি বউয়ের দেখা নাই,দিলাম আবার মড়া কান্না জুইড়া,কান্দার চোটে আমার চোখমুখ প্রায় উল্টায় যায়।পরে বড় মামা খালার শশুর বাড়ীতে আমার বউয়ের কাছে রাইখা আসছিলো।২ দিন ছিলাম ঐ বাসায় ঘরজামাই হইয়া।

আমার সেঝো খালা খুব সুন্দর ছবি আঁকতো।একদিন খালা একটা মেয়ের পোট্রেট আঁকা শেষ করে অন্যরুমে গেছে আমি এই ফাঁকে ঐ ছবির মেয়েটার মুখের দুইপাশে দিছি দুইটা মোছ আঁইকা।মোছ আকার পর মেয়েটার সৌন্দর্য্য আরও বেড়ে গেছিলো কিন্তু আমার বেরসিক খালা সেটা বুঝতে না পাইরা মার কাছে ধইরা নিয়া বিচার দিলো।মা সাথে সাথে নগদে আড়াইমনি ২টা থাবড়া আমার মাসুম গালে বসায় দিলো।কয়দিন পর আবার আমার ভিতরের শিল্পী সত্ত্বা জাইগা উঠলো,দুপুরে খাবার পর মার ঘুমের অভ্যাস ছিলো,এক দুপুরে মা ঘুমাইতেছে,আমি খালার ছবি আঁকার ব্রাশ আর রং চুরি কইরা মার মুখে সুন্দর ২টা চাইনিজ মোছ আঁইকা দিলাম।ঘুম থেইকা জাগার পর মা ঘর থেইকা বাইর হওয়ার পর সবাই মারে দেইখা খিকখিক হাসা শুরু করলো।মা হাসার কারন না বুইঝা সবাইরে বলতে লাগলো, ''কি হইছে? তোমরা আমারে দেইখা হাসতেছো কেন?'' একটু পর আয়নায় চেহারা দেইখা মা তাইম্মার বাচ্চা বইলা এক বিকট চিৎকার দিয়া আমারে ধরতে আসলো।আসার সময় হাতের কাছে এক লাউ পাইয়া ঐটা এক হাতে উঁচায়া ধইরা আমারে দৌড়ানি দিলো।ঐদিন মারে দেইখা মনে হইতেছিলো গদা হাতে শাড়ি পড়া ভীম (পন্চপান্ডবের এক পান্ডবের নাম হইছে ভীম) দৌড়াইতেছে।এরূপ নানা গৃহস্থালী অত্যাচার সত্ত্বেও আমার শিল্প সত্ত্বারে কেউ দমায় রাখতে পারে নাই।আমার পরবর্তী শিল্পকর্মের জন্য বড় খালুর টাকরে বাইছা নিলাম।খালুর টাক ছিলো তেল মাখানো তরমুজের মতো চকচকা।চুল নাই দেইখা খালু সবসময় খুব দূঃখ করতো।খালুর দুঃখ দুর করার গুরু দায়িত্ব আমি নিজের কাঁধে তুইলা নিলাম।একদিন রাতে খালু ঘুমের ঔষুধ খায়া ঘুম দিছে এই ফাঁকে আমি খালুর চকচকা টাকে কালো কালি দিয়া নতুন চুল গজায় দিলাম,কানের দুইপাশে দুইটা জুলপিও আইকা দিছিলাম।পরের দিন ঘুম থেইকা জাগার পর খালু নিজের মাথায় ভ্রমর কালো কেশ দেইখা পুরা ভীড়মি খায় অবস্থা।এরপর যথারীতি মার কাছে বিচার আর আমার কিন্চিৎ ধোলাই খাওয়া.................

চলবে................
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০০৯ ভোর ৫:০৪
১১৬টি মন্তব্য ৯৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×