বহুৎ ঝামেলার পর ছোট খালার বিয়া ঠিক হইলো খালুর সাথে।বিয়ার দিন আমারে আর খালুর এক ভাগ্নীরে ছোট জামাই বউ সাজায়া বসায় দিলো খালা,খালুর পাশে।বিয়ে শেষে খালু,খালারে নিয়া গাড়ীতে উঠবে এমন সময় আমি দিলাম মড়া কান্না জুইড়া,কারন আর কিছুই না আমার খালুর ভাগ্নীও বরযাত্রীর সাথে চইলা যাবে।আমি আমার বউরে (খালুর ভাগ্নী) কিছুতেই যাইতে দিমু না,মেঝেতে গড়াগড়ি কইরা কান্না শুরু কইরা দিলাম।সবাই যতই আমারে বুঝায় আমি বুঝি না, বলতে লাগলাম খালু খালারে বিয়ার পর নিজের বাসায় নিয়া যাইতেছে আমিও আমার বউরে আমার বাসায় নিয়া যামু।আমার কান্না দেইখা খালুর ভাগ্নীও কান্দাকাটি লাগায় দিছিলো, সে মনে করছিলো তারে সত্যি সত্যিই রাইখা সবাই চইলা যাবে।আমারে সবাই বুঝ দিলো যে তোমার বউ আজকে কাপড়চোপড় সাথে নিয়া আসে নাই তাই থাকতে পারবে না কালকে সবকিছু নিয়া তোমার কাছে চইলা আসবে।পরেরদিন ভোরে উইঠা গেলাম বউরে শুভেচ্ছা জানাইতে,হাজার হোক আজকে আমার কাছে চইলা আসবে বাপমারে রাইখা।কিন্তু সারাদিন,দুপুর,বিকাল অপেক্ষা কইরাও দেখি বউয়ের দেখা নাই,দিলাম আবার মড়া কান্না জুইড়া,কান্দার চোটে আমার চোখমুখ প্রায় উল্টায় যায়।পরে বড় মামা খালার শশুর বাড়ীতে আমার বউয়ের কাছে রাইখা আসছিলো।২ দিন ছিলাম ঐ বাসায় ঘরজামাই হইয়া।
আমার সেঝো খালা খুব সুন্দর ছবি আঁকতো।একদিন খালা একটা মেয়ের পোট্রেট আঁকা শেষ করে অন্যরুমে গেছে আমি এই ফাঁকে ঐ ছবির মেয়েটার মুখের দুইপাশে দিছি দুইটা মোছ আঁইকা।মোছ আকার পর মেয়েটার সৌন্দর্য্য আরও বেড়ে গেছিলো কিন্তু আমার বেরসিক খালা সেটা বুঝতে না পাইরা মার কাছে ধইরা নিয়া বিচার দিলো।মা সাথে সাথে নগদে আড়াইমনি ২টা থাবড়া আমার মাসুম গালে বসায় দিলো।কয়দিন পর আবার আমার ভিতরের শিল্পী সত্ত্বা জাইগা উঠলো,দুপুরে খাবার পর মার ঘুমের অভ্যাস ছিলো,এক দুপুরে মা ঘুমাইতেছে,আমি খালার ছবি আঁকার ব্রাশ আর রং চুরি কইরা মার মুখে সুন্দর ২টা চাইনিজ মোছ আঁইকা দিলাম।ঘুম থেইকা জাগার পর মা ঘর থেইকা বাইর হওয়ার পর সবাই মারে দেইখা খিকখিক হাসা শুরু করলো।মা হাসার কারন না বুইঝা সবাইরে বলতে লাগলো, ''কি হইছে? তোমরা আমারে দেইখা হাসতেছো কেন?'' একটু পর আয়নায় চেহারা দেইখা মা তাইম্মার বাচ্চা বইলা এক বিকট চিৎকার দিয়া আমারে ধরতে আসলো।আসার সময় হাতের কাছে এক লাউ পাইয়া ঐটা এক হাতে উঁচায়া ধইরা আমারে দৌড়ানি দিলো।ঐদিন মারে দেইখা মনে হইতেছিলো গদা হাতে শাড়ি পড়া ভীম (পন্চপান্ডবের এক পান্ডবের নাম হইছে ভীম) দৌড়াইতেছে।এরূপ নানা গৃহস্থালী অত্যাচার সত্ত্বেও আমার শিল্প সত্ত্বারে কেউ দমায় রাখতে পারে নাই।আমার পরবর্তী শিল্পকর্মের জন্য বড় খালুর টাকরে বাইছা নিলাম।খালুর টাক ছিলো তেল মাখানো তরমুজের মতো চকচকা।চুল নাই দেইখা খালু সবসময় খুব দূঃখ করতো।খালুর দুঃখ দুর করার গুরু দায়িত্ব আমি নিজের কাঁধে তুইলা নিলাম।একদিন রাতে খালু ঘুমের ঔষুধ খায়া ঘুম দিছে এই ফাঁকে আমি খালুর চকচকা টাকে কালো কালি দিয়া নতুন চুল গজায় দিলাম,কানের দুইপাশে দুইটা জুলপিও আইকা দিছিলাম।পরের দিন ঘুম থেইকা জাগার পর খালু নিজের মাথায় ভ্রমর কালো কেশ দেইখা পুরা ভীড়মি খায় অবস্থা।এরপর যথারীতি মার কাছে বিচার আর আমার কিন্চিৎ ধোলাই খাওয়া.................
চলবে................
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০০৯ ভোর ৫:০৪