শেষের আগেঃ
থানা থেকে বের হইয়েই ঘূণপোকা সবার আগে মিলিয়ে দেখলো তার সবগুলি অংগপ্রত্যংগ ঠিক আছে কি না?? নাহ!! তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। ঠোটে একটু কাটা দাগ, কনুইতে একটুখানি আচড়। যা সহজেই মটর সাইকেল এক্সিডেন্ট বলে চালিয়ে দেয়া যাবে। ঘূণপোকার ইচ্ছা করছিলো দৌড়ে গিয়ে সেই পুলিশের এসআই-কে একটা ধন্যবাদ দিতে। এইরকম চোরা মাইর সবাই দিতে পারে না। সারা শরীর ব্যাথায় ঘূণপোকার পুরা মরন দশা, কিন্তু বাইরে থেকে বোঝার কোন উপায় নেই। ধরো, এখন মেরে যদি একটা হাত কিংবা পা ভেংগে দিতো, তবে কতটা বেইজ্জতি হত লোক সমাজে।
সাত দিন আগের ঘটনাঃ
ঢাকা ইউনিভার্সিটির এডমিশন টেস্টে ঘূণপোকার ছোট ভাইয়ের সিট পরছে এনডিসি-তে। ছুটির দিনে একটু আরাম করে ঘুমাবে, তার কোন উপায় নাই। আম্মু বলে, তাকেও নাকি সাথে যেতে হবে। এনডিসির নাম শুনলেই ঘূণপোকার মনে পরে, ফাদার বেঞ্জামিন ডি কস্তার কথা। তার মনে পরে, সেই ইট ভাংগার কথা, ঘাস কাটার কথা। ফেয়ার ওয়েলের পর থেকে সে পারত পক্ষে ঐদিকটা এড়িয়ে চলে। ফেয়ার-ওয়েলের দিনন অন্যান্য ছেলেদের কান্না দেখে ঘূণপোকার মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। আর ভাই আজ তো আমাদের সুখের দিন। নটর ডেম নামক এই জেল থেকে মুক্তির দিন। আর সব আদিগিল্লারা কান্তাছে!! নটর ডেম থেকে বের হবার সময় ঘূণপোকা একটা শপথ করে বের হইছিলো, আর কখনো সে এমুখি হবে না। তার বংশের কাউকে সে এখানে পাঠাবে না। এমনকি তার ছেলে যাতে গোল্ডেন এ+ না পায়, সে সেই ব্যবস্থায়ই করবে।
আজ এত বছর পরে সেই জেলখানায় যেতে হবে, তাও আবার ছুটির দিনের সকালের ঘুম ফেলে। যে ঘুমের জন্য সারা সপ্তাহজুড়ে অপেক্ষা!! সম্ভাব্য বিপদ থেকে বাচার জন্য ঘূণপোকা বাথরুমে গিয়ে আশ্রয় নেয়। কিছুক্ষন পরেই তার আম্মুর হাকডাক।
-ঐ বান্দর!! তোর বাথরুমে কতক্ষন লাগে?? ছোটকালের অভ্যাস গেলো না? কাম দেখলেই বাথরুমে লুকাস!!
-আম্মু!! লুজ মোশন হইসে!!
-আবার কাহিনী করস!! বাইরে বের হয়ে স্যালাইন খা!! সব ঠিক হয়ে যাবে।
অনেকক্ষণ ধরে , পশ্চিম রণক্ষেত্র শান্ত।ঘূণপোকা ভাবলো ফাড়া কেটে গেছে। খুশিমনে বাথরুম থেকে বের হতে যাবে, এমন সময় আম্মুর বিগলিত ডাক,
-বাবাগো! বাবা আমার!
কাহিনী খারাপ। কিছুক্ষন পরে ঝড় বইবে বুঝতে পেরে।সে সাড়া দিলো, জ্বী আম্মু।
-তোমার মোবাইলে না ফেইসবুক লগ আউট করা নাই। একটা স্ট্যাটাস দেই, তোমার লুজ মোশন হইসে সবাইকে জানিয়ে??
-আমমমমমু ফোন ধরবা না, আমি আইতাছি বলে-বুলেট গতিতে বাথ্রুম থেকে বের হয়ে আসলো সে।
আম্মুর মুখে যুদ্ধ জয়ের হাসি।
-তুই আমার সন্তান। আমি তোর সন্তান না! তোর সব বান্দরামির সাথে আমি পরিচিত।
-ধুর আম্মু! ছেড়াটা (ছোট ভাই) বয়েজ স্কুল-কলেজের প্রোডাক্ট। এখন ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে দুই একটা মেয়ে পটাইবো না, তুমি আমারে সাথে দিতাছো, এইডা কিছু হইলো!!
-ওর অনেক দেরী! তুই দুইটা না, একটা মেয়ে পটাইয়া আমারে উদ্ধার কর। বিয়ার বয়স হইতাছে, খেয়াল আছে তোর!!
নটর ডেম কলেজ, সকাল নয়টা ৪৫ঃ
এক গাদা উপদেশ দিয়া ছোট ভাইরে পরীক্ষার হলে ঢুকিয়ে দিলো।"শোন দশটা দশ পর্যন্ত আমি গেইটের সামনে আছি। কোন সমস্যা হলে বের হয়ে আসিস। আর পরীক্ষার পরে ওভার ব্রীজের নিচে চলে যাইস। আমি সেখানে থাকব।"
নাহ!! ঘূণপোকার ভাই আর বের হয়ে আসেনি। দশটা দশের দিকে ওভার ব্রীজের কাছে গিয়ে ঘূণপোকার মাথা খারাপের অবস্থা। মহিলা মানুষের ঢল যেন নামছে। বেশিরভাগই মনে হচ্ছে অবিবাহিত। ঘূণপোকা অনেক ভালো ছেলে। মেয়ে মানুষ তো দূরের কথা, মেয়ে মানুষের কাপড় সে সেদিকে তাকায় না।
৫/১০ মিনিট ইতিউতি ঘুরার পর সে ওভার ব্রীজের নিচে যেতে বাধ্য হলো। একে তো প্রচন্ড রোদ, তার উপর সে তার ভাইকে বলেছে, সে ওভার ব্রীজের নিচে থাকবে।
মাথা নীচু করে, বালি গুনে ঘুনপোকা হাটছে। হঠাৎ তার চোখে পরল একটি হাত, তজবিহ পড়ে চলছে। প্রথমে সে ভেবেছিলো কোন বৃদ্ধ মহিলা হবে হয়ত। কিন্তু হাতের গড়ন অল্প বয়েসি মনে হচ্ছে বিধায় ঘূণপোকা উপরের দিকে তাকায়।
তাকিয়ে তার আক্কেল গুড়ম। যে বয়েসে মেয়েদের একটু সুযোগ পেলেই বয় ফ্রেন্ডের সাথে বের হবার কথা, কিংবা অনন্ত ফোনে নীচু গলায় চুম্মাচাটি করার কথা। নিদেন পক্ষে মোবাইল টিপাটিপি করার কথা, সেই বয়েসে মেয়েটি তজবিহ জপছে!! ঘূণপোকা আশ্চর্য হলো। এমন আশ্চর্য যে, বিপরীত দিক থেকে একটি ট্রাক আসলেও সে সরে যাবার কথা ভুলে যেত।
মেয়েটি নেকাব পরা ছিলো না, বোকরা পরা ছিল। মাথার এক চতুর্থাংশ উড়না দিয়ে ঢাকা ছিল। দেখতে শুশ্রীই বলা যায়। অন্য কোন দিকে না তাকিয়ে, মেয়েটি তার গোলাপ ঠোট নেড়ে নেড়ে তজবিহ জপছিলো। হাতের অনিন্দ্য সুন্দর আংগুল তার হিসাব রাখছিলো।
তাহার দ্বারেঃ
কোন মেয়ের দিকে সরাসরি তাকানো ঘূণপোকার স্বভাব-বিরুদ্ধ। তাই সে মেয়েটিকে আড় চোখে কয়েকবার দেখলো। মেয়েটি অন্য কোথাও না তাকিয়ে গভীর মনযোগের সাথে তজবিহ জপে যাচ্ছে, যেন তজবিহ পড়েই সে তার ক্যান্ডিডেটকে চান্স পাইয়ে দিবে।
পরীক্ষা শেষ হবার ঘন্টা বাজলে সবাই গেইটের কাছে চলে যায়, নিজ নিজ ক্যান্ডিডেটকে খুজে নিতে, মেয়েটিও চলে যায়। ঘূণপোকা একটু আইলস্যা বলে বসে থাকে, তার ক্যান্ডিডেটই বরং তাকে খুজে নিক!
মেয়েটি চলে যাবার পরে ঘূণপোকা কেমন যেন একটা শুন্যতা অনুভব করে।যেন কত বছরের পরিচিত কেউ হারিয়ে সদ্য হারিয়ে গেলো। অপূরনীয় এক শুন্যতা।
-কারে খোজ?
-তোরেই তো খুজি! পরীক্ষা কেমন হইসে?
-হইসে এক রকম! মনে হয় ওয়েটিং-মুয়েটিং-এ থাকতে পারি।চলো আইস্ক্রিম খাবো।
অতঃপর তারা দুইভাই, পাশের আইস্ক্রিমওয়ালা থেকে আইস্ক্রিম কিনে খাওয়া শুরু করে।
হঠাৎ করেই ঘূণপোকার মুখ উজ্জল হয়ে উঠে। সে মেয়েটির আশা ছেড়েই দিয়েছিলো, কিন্তু এখন মেয়েটি তারই চোখের সামনে রিকশা ঠিক করছে। দ্বিতীয়ববার দেখা!! নিশ্চিত বিধাতা চান, তাদের মধ্যে কিছু একটা হউক। এইবার আইলস্যামি করলে পাপ হবে।
-ছোট পোকা!
-জ্বী বড় পোকা!
আইস্ক্রিমের বিল দিতে দিতে ঘূণপোকা বলে,
বাসায় গিয়ে আম্মুকে বলবি তোকে আমি গলির সামনে নামিয়ে দিয়েছি। এই নে টাকা। তুই বাসায় চলে যা! আমি তোর জন্য ভাবী নিয়ে আসছি।
-আমার তো ভাবী অনেক আছে। আমার কথা চিন্তা করা লাগবে না। তোমার জন্য বউ আনতে যাচ্ছ ভালো কথা যাও। আর বেইজ্জতি হইলে ভুলেও আব্বুর নাম বইলো না। সামনে আমার উজ্জল ভবিষৎ। এইটারে নস্ট কইরো না।
-তোরে পাকনামি করতে না করছি।
-আইচ্ছা করবো না। মিথ্যা কথা বলার কাফফারা কি এখন দিবা না, বাসায় গিয়ে দিবা!
বেইলি রোডের একটি পুরোনো দুইতলা বাড়ীর সামনে রিকশাটি থামে। মেয়েটিও তার ভাই রিকশা থেকে নেমে বাসার ভিতরে চলে যায়। ঘূণপোকা অন্য একটি রিকশায় বসে দূর থেকে দেখলো।
খোঁজখবর নেয়ার উদ্দেশ্যে ঘূণপোকা রিকশা থেকে নামে। মেয়েটির বাসার উল্টা দিকেই সে একটি চায়ের টং দেখতে পায়। সেখান থেকে মেয়েটির বাসার একটি বারান্দাও দেখা যায়। ঘূণপোকা মনে মনে খুশি হয়। সবই উপরওয়ালার ইচ্ছা। উনি সব কিছু খাপে খাপ মর্জিনার বাপ করে দিচ্ছেন।
-মামা! এই বাসাটা কার? চায়ের কাপ ফেরৎ দিতে দিতে ঘূণপোকা চাওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করে।
-এইটা ডিএসপি কাশেম সাহেবের বাসা।
পুলিশ তাও আবার এসপি, শুনে ঘূণপোকা ঢোক গিলে। হাসিনা সরকারের পুলিশ মানেই সাক্ষাৎ যমদূত।
-উনি পুলিশ মানুষ। উনার বাসা এমন ভাংগাচুরা কেন?
-সৎ পুলিশ অফিসার। এই বাড়ী বাপের কাছ থেকে পাইছে, ঠিক করার মুরোদ নাই।রাংগামাটি পোস্টিং-বলে চাওয়ালা বিদ্রুপের হাসি হাসে। হবু শ্বশুড়ের এহেন অপমানে ঘূণপোকার ইচ্ছা করছিলো চাওয়ালাটাকে একটা থাপ্পড় মারে। কিন্তু পরক্ষণেই সে খুশি হয়। যাক বিপদটা ঢাকায় থাকে না। শান্তিতে প্রেম করা যাবে।
-তা মামা, উনার একটা মেয়ে আছে না? কি নাম যেনো?
-ওহ! মজনু কেইস? লাভ নাই। পাত্তা পাবেন না।
-আরে না মামা, তেমন কিছু না।
-মেয়েটির নাম নুসরাত। কাউকে পাত্তা দেয় না। ঢাকা মেডিকালে পড়ে।
মেডিকালের নাম শুনে ঘূণপোকা ঢোক গিলে, আসলেই পাত্তা পাওয়া টাফ হয়ে যাবে। কোনটা যে তাকে ভালবাসা আর কোনটা যে তার ডিগ্রিকে ভালোবাসা এই মেয়ে এর মধ্যে তফাৎ করতে পারলেই হয়েছে।
বুধবারে শনির দশা-অল্প কথাঃ
-আচ্ছা আপনার প্লবলেম কি?
নুসরাত দোতলা থেকে নেমে, সরাসরি চায়ের দোকানে এসে ঘূণপোকাকে জিজ্ঞাসা করে।
-কোন সমস্যা নেই তো।
-তাহলে প্রতিদিন সাড়ে ছয়টা থেকে দশটা পর্যন্ত আমার বেলকুনির দিকে হ্যাবলার মত তাকিয়ে থাকেন কেন?
-আসলে আমাকে অফিস করতে হয় তো, তাই দিনের বেলায় আপনাকে দেখতে পারি না। তাই অফিসের পরে দেখি।
-বেশি স্মার্ট হবার ট্রাই করবেন না। সন্ধ্যার পর আমার বেলকুনির দিকে কেউ তাকিয়ে থাকুক আমি চাই না।
-আচ্ছা! তাহলে আমি বেটার অফিস থেকে ছুটি নিয়ে দিনের বেলায়ই আসব।
-আপনি একটা ক্লাসলেস, ফাজিল। বলে নুসরাত হনহন করে হাটা শুরু করে।
মামা! কাম মনে হয় হবে। মেয়ের আপনার প্রতি ইন্টারেস্ট জন্মাইছে।
চাওয়ালা আর রিকশাওয়ালারা দিন দিন এত স্মার্ট হয়ে যাচ্ছে কেন!!
শ্বশুর বাড়ীঃ
আপনি আমাকে ফলো করছেন কেন?? নুসরাত রিকশা থেকে নেমে এসে জিজ্ঞাসা করে।
-আপনি তো বলেছেন, সন্ধ্যার পর আপনার দিকে কেউ তাকাক আপনার পছন্দ নয়। তাই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে এসেছি। যেহেতু আপনি বাসায় থাকবেন না। তাই কলেজ পর্যন্ত যাচ্ছি। চিন্তা করবেন না, আমি আপনার ক্লাসের সামনে হ্যাংলার মত তাকিয়ে থাকব না।
-আপনি আসলেই একটা লাফাংগার...... নুসরাত রাগে কথা শেষ করতে পারে না। দাঁড়ান আপনার মত ছেলেদের কেমন করে শিক্ষা দিতে হয় আমি জানি।
বলে, সে সামনে পার্ক করা পুলিশের গাড়ীর কাছে চলে যায়। যাবার সময় ফিরে ফিরে তাকায়।
নো ওয়ে ম্যাম! তুমি ভাবছ পুলিশের ভয়ে আমি দৌড়ে পালাব। ঘূণপোকা ভাবে।
নুসরাত ভেবেছিলো ঘূণপোকা তাকে পুলিশের কাছে যেতে দেখলে পালিয়ে যাবে। কিন্তু ছেলেটি যাচ্ছে না দেখে তার মেজাজ খারাপ হচ্ছে। আর ছেলেটি চোখ দিয়ে যেন তার দিকে তাকিয়ে তাকে বিদ্রুপ করছে। "আমাকে পুলিশের ভয় দেখাও! ওকে ডাক পুলিশ!" ছেলেটির চোখ যেন তাই বলছে। ছেলেটির সবচেয়ে বড় সম্পদ তার চোখ। নুসরাত ভাবে।
ঘূণপোকাকে আরেকটু ভয় দেখানোর জন্য সে এসআইকে বলে, এক্সকিউজ মি ভাই! আমাকে একটু সাহায্য করতে পারবেন?
এতটুকু বলে সে আড় চোখে তাকায়।কিন্তু ঘূণপোকা এখনো দাড়িয়ে আছে। যেন তাকে উপহাস করছে ; কম্পপ্লেইন করতে এত্তোক্ষন লাগে।
নুসরাতের রাগ চেপে যায়। কী আমাকে সে সস্তা মেয়েদের মত ভেবেছে। যারা মুখে মুখে ছেলেদের বলে, "ভাই, আমাকে জ্বালাইয়েন না, কিন্তু মনে মনে ঠিকই চায়"। সে তার বাবার পরিচয় দিয়ে এস আইকে সব খুলে বলে।
এস আই এর অডার্র মত কয়েকজন পুলিশ ঘূণপোকার কাছে আসে। একজন তার কলারে ধরে বলে, কী পুলিশের মেয়ের সাথে মজনুগিরি। চল ব্যাটা থানায় চল। আরেকজন তার গালে একটি চড় বসিয়ে দেয়। তারপর তাকে ঠেলে-ঠুলে পুলিশ ভ্যানে উঠায়।
মধুরেন সমপায়েৎঃ
বৃহঃপতিবার সন্ধ্যা ছয়টা। ঘূণপোকার সাড়ে সাত ঘন্টার হাজতবাস শেষ হলো। সে খুব অবাক হয়ে দেখলো, তাকে ছাড়িয়ে নিতে এসেছে নুসরাত।
ঘূণপোকাকে ওসির রুমে ঢুকতে দেখে নুসরাত ছোট্ট একটি হাসি দিয়ে ওসি সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বলল, দয়া করে এই ব্যাপারে আব্বাকে কিছু বলবেন না, প্লিজ।
-আরে না না! আপনি ভয় পাবেন না। কিন্তু দেখবেন এরপর যাতে এমন ভুল আর না হয়।
শেষে ঘূণপোকাককে উদ্দেশ্য করে, সরি ইয়াং ম্যান।
ঘূণপোকা হাসি দিয়ে, থানার বাইরে বেরিয়ে আসে।
থানা থেকে বের হইয়েই ঘূণপোকা সবার আগে মিলিয়ে দেখলো তার সবগুলি অংগপ্রত্যংগ ঠিক আছে কি না?? নাহ!! তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। ঠোটে একটু কাটা দাগ, কনুইতে একটুখানি আচড়। যা সহজেই মটর সাইকেল এক্সিডেন্ট বলে চালিয়ে দেয়া যাবে। ঘূণপোকার ইচ্ছা করছিলো দৌড়ে গিয়ে সেই পুলিশের এসআই-কে একটা ধন্যবাদ দিতে। এইরকম চোরা মাইর সবাই দিতে পারে না। সারা শরীর ব্যাথায় ঘূণপোকার পুরা মরন দশা, কিন্তু বাইরে থেকে বোঝার কোন উপায় নেই। ধরো, এখন মেরে যদি একটা হাত কিংবা পা ভেংগে দিতো, তবে কতটা বেইজ্জতি হত লোক সমাজে।
নুসরাতও তার পিছে পিছে আসে। তার সেই ভুবনভুলানো হাসি দিয়ে ঘূণপোকাকে জিজ্ঞাসা করে, কী ডাক্টারের কাছে যেতে হবে?
-ডাক্টার যখন কাছে আসে, তখন তো অন্য ডাক্টারের কাছে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
-ইশ! পোলার শখ কত!!
-===============--
পুনঃশ্চ-১ঃ এই গল্পের ২০% সত্য। কুইজ হচ্ছে কোন ২০%?
পুনঃশ্চ-২ঃ ঘুনপোকা এক্স-নটর ডেমিয়ান না।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৬